Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাব প্রত্যাহার চায় টিআইবি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনাভাইরাস মহামারীতে বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে সচল করা, রাজস্ব আয় ও বিনিয়োগ বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির নামে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অপ্রদর্শিত বা কালোটাকা সাদা করা ও অর্থপাচারকে সুকৌশলে বৈধতা দেয়ার অভ‚তপূর্ব দুর্নীতি সহায়ক সব পদক্ষেপ ঘোষণায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে। একইসাথে অনৈতিক, বৈষম্যমূলক ও সংবিধান পরিপন্থি এসব পদক্ষেপ বাতিলে জোর দাবি জানিয়েছে।

গতকাল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, দীর্ঘদিনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা ও স্বার্থান্বেষী মহলের দুর্নীতিতে পর্যুদস্ত স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ ও সুশাসন নিশ্চিতে জোরালো কোনো পদক্ষেপ বাজেটে না থাকা এবং করোনাকালীন সময়েও এ খাতে বরাদ্দ অপর্যাপ্ত হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

করোনা পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের নামে সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকার ও দেশের সকল প্রচলিত আইনকে উপেক্ষা করে বাজেটে আয়কর অধ্যাদেশে নতুন দুটি ধারা সংযোজনের মাধ্যমে জমি, ভবন, ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্ট কেনা, নগদ অর্থ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার ও বন্ডে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা সাদা করার অবারিত সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। একইসাথে অর্থের বা সম্পদের উৎস নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের প্রশ্ন তোলার বিধানটিও রহিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাজেটের প্রস্তাবে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এটি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত দুর্নীতির প্রতি শূন্য সহনশীলতার সম্পূর্ণ বিপরীত ও অমর্যাদাকর পদক্ষেপ, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। বছরের পর বছর এ ধরনের সুবিধা দিয়ে দেশের অর্থনীতির কোনো উপকার হয়নি, উল্লেখযোগ্য রাজস্ব আদায় হয়নি, কোনো বিনিয়োগতো নয়। বরং অনৈতিকতা প্রশ্রয় পেয়েছে আর সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

তিনি বলেন, এখানেই শেষ নয়, ঘোষিত বাজেটে ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিং এর মাধ্যমে অর্থপাচার ঠেকাবার নামে ৫০ শতাংশ জরিমানার বিধান আয়কর অধ্যাদেশে যুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এমন প্রস্তাবকে অপরিণামদর্শী আখ্যা দিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, অর্থপাচারের মতো অপরাধকে ৫০ ভাগ কর প্রদানের মাধ্যমে বৈধতা প্রদান গুরু পাপে লঘু দন্ডের অভিনব উদহারণ হতে যাচ্ছে, যেন এ ধরনের ঘোরতর অপরাধের জবাবদিহি কর আদায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এক্ষেত্রে আইনের শাসন আর আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারে কী ধরনের প্রভাব পড়বে তা বাজেট প্রণেতাগণ মোটেই ভেবে দেখননি। এর ফলে অর্থপাচার নিয়ন্ত্রণের স্থলে বরং এর মহোৎসবের সুযোগ তৈরি হবে। যেভাবেই এসবের ব্যাখ্যা দেয়া হোক না কেন, এই প্রস্তাবসমূহ দুর্নীতি-সহায়ক, স্ববিরোধী, বৈষম্যমূলক ও সংবিধান-পরিপন্থি। বলা যেতে পারে সরকার একটি দুর্নীতি সহায়ক বাজেট ঘোষণা করেছে।

তিনি আরো বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় জরুরি তহবিল হিসেবে ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দের বাইরে স্বাস্থ্য খাতের বাজেট বরাদ্দ একেবারেই গতানুগতিক। এই থোক বরাদ্দ যেনো ব্যাপকতর দুর্নীতির সুযোগে রূপান্তরিত হতে না পারে তার পথনকশা থাকতে হবে। অন্যদিকে বাজেটের কথামালায় স্বাস্থ্য খাতের কথা বারবার উচ্চারিত হলেও এডহকভিত্তিক কয়েকটি উদ্যোগ ছাড়া সেবার মান বাড়ানো এবং খাতটিতে শিকড় গেড়ে বসা অবিশ্বাস্য রকম দুর্নীতির মূলোৎপাটনে কোনো পরিকল্পনাই নেয়া হয়নি, যেটি হতাশাজনক ও স্বাস্থ্যসেবার প্রতি উদাসীনতার ও সময়ের অনুপযোগী প্রাধান্যের প্রতিফলন।

 



 

Show all comments
  • সাইফুল্লাহ ১৩ জুন, ২০২০, ৮:২৪ এএম says : 0
    এরাও বি,এন,পি'র মতো বাজেট না বুঝেই বিবৃতি দেন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ