পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নতুন অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেট উপস্থাপনের পর রাত ১২টা থেকেই ওই শুল্ক আদায় শুরু করে দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এতে এখন মোবাইল ফোনে কথা বললে এসএমএস পাঠালে কিংবা ইন্টারনেট ডাটা কিনলে বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে গ্রাহকদের। সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির ফলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সেবায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ১ শতাংশ সারচার্জ, ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক এবং অন্যান্য মিলে মোট কর ২৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ২৫ শতাংশে। এখন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কেউ যদি ১০০ টাকার সেবা নিতে চান, তাহলে ৭৫ দশমিক ০৩ টাকার সেবা নিতে পারবেন। ২৪ দশমিক ৯৭ টাকা যাবে সরকারের পকেটে। খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে এই সিদ্ধান্তের। প্রতিবছর মোবাইল ফোন গ্রাহকদের কর বৃদ্ধি করার জন্য সরকারকে দুয়ো দিচ্ছেন তারা। কর বৃদ্ধিকে গ্রাহকের ওপর জুলুম হিসেবে দেখছে মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।
মোবাইল ফোন সেবায় কর বৃদ্ধি বা খরচ বৃদ্ধিতে গ্রাহকরা অসন্তুষ্ট হবেন ক্ষোভ প্রকাশ করবেন এটাই স্বাভাবিক। তবে গ্রাহকদের সাথে সাথে মোবাইল ফোন অপারেটররাও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। নতুন করারোপে গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দুর্দশা বাড়বে, তাদের ওপর করের বোঝা চাপবে ইত্যাদি নানা যুক্তি তুলে ধরে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে বেসরকারি তিন অপারেটর গ্রামীণফোন, রবি আজিয়াটা, বাংলালিংক।
বাংলালিংকের সিইও এরিক অস বলেন, গ্রাহকরা ইতোমধ্যে উচ্চ করের বোঝা বহন করে টেলিকম সেবা গ্রহণ করছে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করায় স্বল্প আয়ের গ্রাহকদের প্রভাবিত করবে।
গ্রামীণফোনের হেড অব পাবলিক অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত বলেন, সম্পূরক শুল্ক বর্ধিত করায় মোবাইল সেবায় গ্রাহকদের অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত ডিজিটাল বাংলাদেশের অন্তরায়। গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করছি।
রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, উচ্চ করভারে জর্জরিত মোবাইল সেবার ওপর নতুন করে ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রাহকদের দুর্দশা আরও বাড়াবে। সব ধরনের মোবাইল সেবা ব্যবহারে সম্পূরক শুল্ক (এসডি) আরও ৫ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অত্যন্ত দুঃখজনক।
এসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (এমটব)- এর মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অবঃ) বলেন, সরকার নিয়মিতভাবে প্রতিবছর এই খাতের উপর আরও বেশি করে করের বোঝা চাপিয়ে একে আরও দুর্বল করে তুলছে; গ্রাহকদের উপর ফেলছে বাড়তি চাপ। সংগঠনটির পক্ষ থেকে নতুন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানানো হয়।
নিজেদের খরচ বেড়ে যাওয়ায় গ্রাহকরা যেমন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের সমালোচনা করছেন একইভাবে গ্রাহকদের জন্য ‘মায়াকান্না’ দেখানোর জন্য অপারেটরদেরও কঠোর সমালোচনা করছেন। তন্মী নামে একজন লিখেছেন, আমাদের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা কর আদায় করে অপারেটররা দিনের পর দিন তা পরিশোধ না করে নিজেরা খাচ্ছে (জিপির কাছে সরকারের অডিট আপত্তির রাজস্ব বকেয়া ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা, যার মধ্যে আদালতের নির্দেশে ২০০ কোটি টাকা দিয়েছে এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি টাকা বকেয়া)। সেগুলো আদায় না করে আমাদের খরচ বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।
মুস্তাক আহমেদ নামে একজন লিখেছেন, কলড্রপ, বাজে ইন্টারনেট সেবা দিয়ে যখন টাকা কেটে নেন, প্যাকেজের নামে প্রতারণা করে গ্রাহকদের টাকা লুটে নেন তখন তাদের জন্য কোন মায়া হয় না আপনাদের।
কর বৃদ্ধির ইস্যুতে গ্রাহকদের জন্য অপারেটরদের ভাবনার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে একটি অপারেটরদের কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, করোনার কারণে ইতোমধ্যে রাজস্ব কমে গেছে। সেখানে নতুন করে কর আরোপ করায় গ্রাহকরা তাদের খরচ ঠিক রেখে কথা বলা, ইন্টারনেট ব্যবহার করা কমিয়ে দেবে। এতে অপারেটররা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কর বৃদ্ধিকে গ্রাহকদের ওপর জুলুম হিসেবে দেখছে মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, টেলিকম সেবায় এমনিতেই নৈরাজ্য চলছে, তার ওপর অতিরিক্ত কর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়াবে। এর ফলে একটি অপারেটর অধিক নৈরাজ্য সৃষ্টি করে মুনাফা লুটবে, অন্যদিকে টেলিটক আঁতুর ঘরে পৌঁছাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।