Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ষক শিক্ষক আত্মগোপনে, পিবিআই করবেন মামলার তদন্ত

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০২০, ৭:২৮ পিএম

গৃহকর্মীকে পড়াশোনা করাসহ বিয়ে দেয়ার কথা বলে গাইবান্ধা জেলা শহরের বাসায় নিয়ে গিয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার এক কিশোরীকে (১৫) ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক মোঃ ইউনুস আলীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর থেকে তিনি আতœগোপনে রয়েছেন। অভিযুক্ত ওই শিক্ষক গাইবান্ধা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কমরত রয়েছেন। শিক্ষক ইউনুস আলী সুন্দরগঞ্জের তারাপুর ইউনিয়নের নওহাটী চাচীয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে।
মামলা এবং ওই কিশোরীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নওহাটী চাচীয়া গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে আপন চাচাতো ভাইয়ের কিশোরী মেয়েকে (ভাতিজি) গাইবান্ধা জেলা শহরে তার বাসায় নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন শিক্ষক ইউনুস আলী। সেখানে ওই কিশোরী বাসার কাজও করবে,পড়াশোনা করাবেন বলে কিশোরীর পরিবারকে কথা দেন ওই শিক্ষক। ইউনুস আলীর কথায় ওই কিশোরীর পরিবার রাজী হলে মেয়েটিকে জেলা শহরে থানা পাড়ায় তার বাসায় নিয়ে যান।
এরপর করোনা ভাইরাসের কারণে মার্চে মাসের মাঝামাঝিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে ওই শিক্ষক বাসাতেই থাকতেন। সেসময় থেকে পরিবারের সদস্যদের আড়ালে কিশোরীর শরীর স্পর্শসহ মোবাইলে ও কম্পিউটারে পর্ণ ভিডিও দেখাতেন। এসময় একদিন বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে ওই কিশোরীকে গোসল করার সময় বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। তারপর থেকে সবার অজান্তেই নিয়মিত ধর্ষণ করতেন ইউনুস আলী। ধর্ষণের ঘটনা কাউকে না জানাতে তিনি কোরআন শরীফ, জায়নামাজ ও মাথা ছুঁইয়ে শপথ করান ওই শিক্ষক। ভূক্তভোগী কিশোরী জানায়, ইউনুস আলী কয়েক মাস থেকেই বিভিন্ন রকমের খারাপ আচরণ করতেন। ধর্ষণের ঘটনা শিক্ষকের স্ত্রীকে বলে দেয়ার কথা বললে শিক্ষক বলেন তোর কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। কিছু বলার দরকার নেই, বরং তোর যা দরকার আমাকে বলিস, সব দিবো। এরপর গ্রামের বাড়ীতেও যেতে দেননি আমাকে। প্রতিদিনই ধর্ষণ করতেন তিনি। এমনকি রাতে ঘুমানোর আগে ও ভোরারাতে সেহেরী খেয়েও ধর্ষণ করতেন আমাকে। আমি কি এ অন্যায়ের বিচার পাবো না? এমন প্রশ্ন ওই কিশোরীর। এরপর ওই শিক্ষকের স্ত্রী কয়েক দিন আগে কিশোরীকে ধর্ষণের বিষয়ে জানতে পেরে ইউনুস আলীকে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেন ও কিশোরীটিকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বাড়িতে গিয়ে পরিবারের কাছে সবকিছু জানায় ওই কিশোরী। এরপর জানাজানি হলে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ভুক্তভোগী পরিবারটিকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখায় অভিযুক্তের পরিবার। এতে কাজ না হওয়ায় নানা মাধ্যমে হুমকি দেন। এমনকি পরিবারের কেউ যাতে বাড়ির বাহিরে যেতে না পারে সেজন্য তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখেন ওই শিক্ষকের লোকজন।
কিশোরীটির বাবা জানান, এক রকম জোর করেই ইউনুস আলী মেয়েটিকে নিয়ে যান শহরের বাসায়। এরপর মেয়েকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়ার পর সব কিছু জেনে ইউনুস আলীর বাবাকে জানালে তিনি সমাধান না করে উল্টো শাসান। পরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানাতে গেলে চেয়ারম্যানের সামনেই হুমকি দেন ওই শিক্ষকের লোকজন। কিশোরীর বাবা আরো জানান,ঘটনাটি যেহেতু গাইবান্ধা সদরে ঘটেছে তাই মামলাটিও সদর থানায় করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক ইউনুস আলীর মোবাইলে ফোন করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়। সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খান মো শাহরিয়ার জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর দাদি বাদী একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ