Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বরাদ্দ বাড়লেও স্বাস্থ্য খাতে গতানুগতিক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০২০, ১২:০১ এএম

আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য মোট ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ২৫ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা। অর্থাৎ করোনা মহামারী চলাকালেও স্বাস্থ্য খাতের বাজেট অনেকটা গাতনুগতিক রয়েছে। এ বছর মন্ত্রনালয়ের গুরুত্ব অনুযায়ী বরাদ্দের দিক থেকে স্বাস্থ্য খাতের অবস্থান অষ্টম। তবে করোনা মোকাবেলায় অতিরিক্ত ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। গতকাল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করেন। ওই সময় তার বাজেট বক্তব্যে এসব বিষয় উলে­খ করেন।

অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তব্যে বলেন, কোভিড ১৯ সংক্রমণ মোকাবেলায় গৃহিত কর্মসূচি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান খাতে এই বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। বজেট বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সংক্রান্ত কার্যক্রম ১৩টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বাস্তবায়ন করে থাকে। সেই হিসাবে আগামী অর্থ বছরে দেশের স্বাস্থ্য খাতে মোট বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৪১ হাজার ২৭ কোটি টাকা। যা জিডিপির এক দশমিক ৩ শতাংশ এবং মোট বাজেট বরাদ্দের ৭ দশমিক ২ শতাংশ।

বজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী জানান, করোনা রোগীদের সেবা প্রদানে নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্সসহ সেবা কর্মীদের দুই মাসের বেতনের সমপরিমান বিশেষ সম্মানী দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া চিকিৎসকসহ, প্রশাসন, আইনশৃংখলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কেউ দায়িত্বপালনকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে বা মৃত্যুবরণ করলে তাদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এদিকে জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে করোনা মোকাবেলায় ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে আমরা ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতায় বর্তমানে ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বিশেষ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ মহামারী মোকাবেলায় যা করণীয় তার সবকিছুই করবে সরকার। আগামী অর্থবছরে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় যে কোনো জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।

বাজেট অধিবেশনে বলা হয়, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিতে জনজীবনকে সুরক্ষার লক্ষ্যে ন্যাশনাল প্রিপেয়ার্ডনেস অ্যান্ড রেসপন্স প্ল্যান প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন শুরু করা হয়েছে। প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে বিশেষায়িত আইসোলেশন ইউনিট খোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীতে ১৪টিসহ প্রতিটি জেলা শহরে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল স্থাপন ও চালু করা হয়েছে। করোনা রোগ নির্ণয়ের জন্য এ পর্যন্ত ৫৫টি ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহকে আধুনিকীকরণ ও উন্নততর সেবা প্রদান প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এর জন্য আমরা জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্য খাতে ৫২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করেছি। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সেবা প্রদানকারীদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রদান, প্রণোদনা এবং ক্ষতিপূরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি আমরা।

করোনা মোকাবেলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ দায়িত্ব পালনকালে ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুজনিত কারণে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং চিকিৎসায় নিয়োজিত ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সম্মানী বাবদ মোট ৮৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী জানান, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলার লক্ষ্যে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ২ হাজার ডাক্তার, ১ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আউটসোর্সিং-এর মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে ৩৮৬ জন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট, ২ হাজার ৬৫৪ জন ল্যাব অ্যাটেন্ডেন্টসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া রাজস্ব খাতে ১ হাজার ২০০ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট, ১ হাজার ৬৫০ মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান এবং ১৫০ কার্ডিওগ্রাফারসহ মোট ৩ হাজার নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ডা. কামরুল হাসান খান বলেছেন, করোনার কারণে বাজেটে বরাদ্দ বাড়লেও আগের মতোই অনেকটা গতানুগতিক। স্বাস্থ্যখাতে আরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া দরকার ছিলো বলে মনে করেন তিনি।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাজেট

১৩ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ