সাংবিধানিক বাধ্য-বাধকতার কারণে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কঠোর বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতীয় সংসদের অষ্টম বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছে। গতকাল স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশন শোক প্রস্তাব গ্রহণ শেষে মূলতবি করা হয়েছে। আজ বিকেল ৩টায় অধিবেশনে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আলোচনা শেষে আগামী ৩০ জুন বাজেট পাস হবে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে অধিবেশনের আগে কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হয়নি। কঠোর সতর্কতায় শুরু হওয়া এই অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনাসহ স্বল্প সংখ্যক সংসদ সদস্য অংশ নেন। তবে সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরী, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ সিনিয়র সংসদ সদস্যরা অনুপস্থিত ছিলেন। অধিকাংশের মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস ও মাথায় ক্যাপ ছিলো। সংসদ পরিচালনায় দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও একই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। সংসদ ভবনের প্রবেশমুখে সকলকেই জীবাণুনাশক ¯েপ্র করা হয়। এমপিসহ সংশ্লিষ্টদের তাপমাত্রা মাপা হয়। এছাড়া নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখে সকল পদক্ষেপ নেয়া হয়।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমের শুরুতেই বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতির সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকসহ মৃত্যুবরণকারীদের জন্য শোক প্রকাশ করেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও অধিবেশন ডাকার কারণও ব্যাখ্যা করেন। সম্ভাব্য সকল স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে অধিবেশন আহŸান করা হয়েছে।

এরপর ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে সংসদ অধিবেশন পরিচালনার জন্য সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, এ বি তাজুল ইসলাম, মুহিবুর রহমান মানিক, কাজী ফিরোজ রশীদ ও মেহের আফরোজ চুমকিকে সভাপতিমন্ডলীর সদস্য নির্বাচিত করেন।

পরে আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক গত অধিবেশনের পর প্রেসিডেন্টের জারিকৃত অধ্যাদেশসমূহ সংসদে উত্থাপন করেন। অধ্যাদেশগুলো হলো- আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ-২০২০, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২০ এবং আয়কর সংশোধন (অধ্যাদেশ)-২০২০।
প্রধম দিনে অধিবেশনের প্রধান কার্যসূচি ছিলো শোক প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনা। চলতি সংসদের সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লাসহ কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিশিষ্টজনদের মৃত্যুতে এই শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা ও সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ। আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিতে শোক প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়। এরপর প্রয়াতদের স্মরণে নিরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়। এরপর দিনের অন্য কার্যসূচি স্থগিত করে অধিবেশন মুলতবি করা হয়।