পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের কারণে স্থবির গোটা বিশ্ব। বাংলাদেশেও প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ফলে থমকে গেছে সবকিছু। এর বাইরে নয় রাজনৈতিক দলগুলো। অন্যান্যদের মতোই বন্ধ রয়েছে রাজপথের প্রধান বিরোধীদল বিএনপির মাঠের কর্মসূচি। যদিও বিগত দুই বছর ধরে দলটির মূল এজেন্ডা ছিল কারাবন্দী চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করা। করোনা প্রদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর গত ২৫ মার্চ ৬ মাসের জামিনে মুক্ত হয়েছেন তিনি। এতে অনেকটাই নির্ভার দলটির নেতাকর্মীরা। এরই মধ্যে দেশে সাধারণ ছুটি শুরু হয়। ছুটি শেষে সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেয়া হলেও করোনার সংক্রমণ এখনো উর্ধ্বোমুখী। ফলে বেগম জিয়ার চিকিৎসা, দল পুনর্গঠন, সাংগঠনিক তৎপরতা, সরকারের বিরুদ্ধে মিছিল-মিটিং, সভা-সমাবেশ আপাতত স্থগিত রাখতে বাধ্য হচ্ছে বিএনপি। করোনাকালীন সময়ে ত্রাণ তৎপরতা ও ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন, আলোচনা সভা চালিয়ে যাচ্ছেন দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। পরিস্থিতি স্বাভবিক না হলে মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়া সম্ভব হবে না বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে এখন সকলেই সঙ্কটে রয়েছেন। দেশের মানুষ কঠিন সময় পার করছে। এই সময়ে মাঠের সক্রিয় রাজনীতি না থাকলেও সাধারণ ছুটি ঘোষনার পর থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীরা ত্রাণ নিয়ে সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে ছুটে গেছে। আমরা সেই অর্থে কেউ বসে নেই। সকলেই এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছি। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সভা ও আলোচনা অনুষ্ঠান ভার্চুয়াল মাধ্যমেই চালিয়ে নেয়া হচ্ছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়ে গেছে। বিগত কয়েকবছর ধরে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সক্রিয় থাকা বিএনপি নেতাকর্মীদের সেই কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যায় তাঁর মুক্তিতে। সাংগঠনিক তৎপরতাও বন্ধ হয়ে যায় এই ভাইরাসের কারণে, স্থগিত করা হয় সংগঠনের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া। বিএনপি সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে সংগঠনের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া। তবে বিএনপির শীর্ষ নেতা এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পৃক্ত থেকে সীমিত পরিসরে সাংগঠনিক কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন। অথচ চলতি বছরের শুরুতেও বিভিন্ন পাবলিক ইস্যুতে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে সোচ্চার থাকতে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। তাদের মতে, সাংগঠনিক কর্মকান্ড নিয়ে মাঠে নামতে আরো সময় লাগবে। কেননা মহামারী নিয়ন্ত্রণে এলে আগামী মাস থেকে সীমিত পরিসরে শুরু হতে পারে রাজনৈতিক কর্মকান্ড। এই সময় পর্যন্ত ভার্চুয়াল মাধ্যমেই সীমিত পরিসরে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চলবে। আপাতত সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অসহায় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা চালাবেন তারা। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে ঝুলে আছে দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়া। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ সাংগঠনিক কর্মকান্ড। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকান্ডে এক ধরনের স্থবিরতা বিরাজ করছে।
জানা যায়, মাঠের বিরোধী দল হিসেবে পরিচিত বিএনপি করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকে সাংগঠনিক কর্মকান্ড স্থগিত রেখেছে। দ্বিতীয় দফায় আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত কমিটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে। যা এর আগে ১৫ এপ্রিল ও ১৫ মে পর্যন্ত ছিল। দলীয় কর্মকান্ডও নেই আগের মতো। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে নেয়া হচ্ছে প্রযুক্তির সহায়তা। ভার্চুয়াল মাধ্যমে কয়েকবার স্থায়ী কমিটির সভাও করেছে। দলের মহামচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিভিন্ন ইস্যুতে অনলাইনে নিয়মিত ব্রিফিং করছেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন নেতারা। দলীয় কর্মকান্ড না থাকলেও সারা দেশে অসহায় মানুষকে সাধ্যমতো সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা। তবে করোনার মধ্যে ঈদের সময় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ কয়েক নেতা। রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে চেয়ারপারসনের বৈঠকের পর দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে একটা চাঙ্গাভাব লক্ষ্য করা গেছে। যা মাঠের রাজনীতি শুরু হলে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে তাদের ধারণা।
এদিকে বিগত বছরগুলোতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীতে আলোচনা অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হতো। এবার সেটি ১২দিন ধরে চলেছে অনলাইনে।
তবে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে-ভার্চুয়াল মাধ্যমে সীমিত পরিসরে কর্মকান্ড চালালেও সাংগঠনিক কাজে স্থবিরতা নেমে এসেছে দলটিতে। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে তৃণমূল পুনর্গঠন। অঙ্গসংগঠনগুলোর বেশির ভাগ কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও করোনার কারণে পুনর্গঠন আটকে আছে। যেসব আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে সেগুলোর মেয়াদ শেষ হলেও কাউন্সিল করা সম্ভব হচ্ছে না। অবশ্য অনেকেই ভার্চুয়াল আলোচনাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে- প্রকাশ্যে সভায় কর্মীরা স্লোগান দিলে বক্তব্য শুনতে মনোযোগ থাকে না। কিন্তু অনলাইনে কোনো সমস্যা নেই। তবে এই ধারা যেন চিরস্থায়ী না হয় সেদিকে দলের হাইকমান্ডকে খেয়াল রাখতে বলেন তারা।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, করোনা সঙ্কট শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে বিএনপি জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং এখনো এই কাজ অব্যাহত রয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কাছে এর চেয়ে বড় কাজ আর কী হতে পারে? এটাও তো রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক কাজের মধ্যেই পড়ে। তবে মাঠের রাজনীতি বা সংগঠন গোছানোর যে কাজ, সেটা এখনই শুরু করা সম্ভব নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।