Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

মামলার পর পালালেন উপ খাদ্য কর্মকর্তা

যোগ দিলেও দায়িত্ব পাননি নতুন কর্মকর্তা

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০২০, ৫:১৪ পিএম

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ি এলাকার খাদ্যগুদামের উপ খাদ্য কর্মকর্তা মো.আশরাফ আলী অবৈধভাবে গুদামে চাল মজুদ রাখা ও বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে শাস্তি হিসেবে বদলি করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হলে তিনি দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়েই গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে যান। পুলিশের চোখ এড়িয়ে এরই মধ্যে ওই কর্মকর্তা বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় যোগ দিয়েছেন। বুধবার যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উজিরপুর উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান। তিনি আরো জানান, মো.আশরাফ আলী গত ৩ জুন কর্মস্থলে যোগদান করলেও বর্তমানে তিনি ছুটিতে আছেন। এদিকে ঈশ্বরগঞ্জ আঠারবাড়ি খাদ্যগুদামে যোগ দিয়েছেন শামীম আল ফারুক নামের একজন। তবে পালিয়ে যাওয়া কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ায় তিনি কোনো ধরনের কার্যক্রম চালাতে পারছেন না।
জানা যায়, সরকারের চলমান অভ্যন্তরীণ বোরো সংগ্রহ অভিযানের আড়ালে স্থানীয় চাল ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের তিন সদস্য গত ২৪ মে ৭৯ বস্তা পুরাতন চাল খাদ্যগুদামে প্রবেশ করান। এসব চাল আঠারবাড়ি ইউনিয়নের ফরিদা রাইস মিলের বলে জানানো হয়। ওই চালকলের সাথে সরকারের চাল সরাবরাহের চুক্তি রয়েছে। খাদ্যগুদামের উপ খাদ্য পরিদর্শক মো. আশরাফ আলীর নির্দেশে ঈদ-উল-ফিতরের ছুটির সুযোগে ওই চালের বস্তাগুলো গুদামের ভেতরে প্রবেশ করানো হয়। খবর পেয়ে গত ২৬ মে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন আকস্মিকভাবে খাদ্যগুদাম পরিদর্শন করেন। তিনি এক নম্বর গুদাম ভবনে প্রবেশ করে সরকারি সিলবিহীন বস্তায় ভরা ৭৯ বস্তা চাল দেখতে পান। এসব চালের বস্তার সাথে সরকারি গুদামের রাখা বস্তার খামালের কোনো মিল ছিল না। পরে ওই চালসহ এক নম্বর গুদামটি সিলগালা করে বিষয়টি খাদ্য বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। পরে খাদ্যবিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তরা আঠারবাড়ি খাদ্যগুদাম পরিদর্শন করে সত্যতা পান।
এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে অভিযুক্ত করে গত ৩০ মে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এএইচএম কামরুজ্জামান। অভিযুক্তরা হচ্ছেন আঠারবাড়ি খাদ্যগুদামের তৎকালীন দায়িত্বে থাকা উপ খাদ্য পরিদর্শক মো. আশরাফ আলী, গলকু-া গ্রামের মিলন মিয়া, ফরিদা চালকলের মালিক ও উত্তর বনগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আবু বক্কর সিদ্দিক ও নান্দাইলের গাংগাইল গ্রামের মতিউর রহমান মতি। এ অবস্থায় গত ১১ দিনেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অন্যদিকে ঘটনার সত্যতার প্রমাণ পাওয়ার পর গত রবিবার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কামরুজ্জামানসহ সকল কর্মচারিদের এক যোগে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
আঠারবাড়ি খাদ্যগুদামে সদ্য যোগদানকৃত শামীম আল ফারুক জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ায় তিনি কোনো ধরনের কার্যক্রম চালাতে পারছেন না। এতে গত ১৬ দিন ধরে ওই খাদ্যগুদাম সিলগালা থাকায় বেকায়দায় পড়েছেন সরকারের সাথে চুক্তি করা চালকলের মালিক ছাড়াও সদ্য লটারিতে তালিকভুক্ত হওয়া বোরো ধান সংগ্রহ অভিযানের কৃষকরা।
জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম জানান, আশরাফ আলী দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ায় জঠিলতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত এই জঠিলতার অবসান করা হবে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোখলেছুর রহমান আকন্দ জানান, মামলার খবর পেয়ে আসামীরা গা-ঢাকা দিয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ