Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

লকডাউন পূর্ব রাজাবাজার

মধ্যরাত থেকে সেনা টহল জোরদার জীবন-জীবিকা নিয়ে শঙ্কিত এলাকাবাসী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০২০, ১২:০২ এএম

করোনাভাইরাসের ঘনত্ব বিবেচনায় গতকাল দিবাগত রাত ১২টা থেকে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকা লকডাউন ঘোষণা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এজন্য ওই এলাকায় জনসাধারণের চলাচলসহ নানা বিষয়ে বিধি-নিষেধ থাকবে। তবে লকডাউনে দোকান ও বাসা ভাড়া নিয়ে বেকায়দায় থাকা নাগরিকরা বিষয়টি সমাধানের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন। আর কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারণে যাতে কাউকে বেতন ও চাকরি হারাতে না হয় তারও নিশ্চয়তা চেয়েছেন তারা।

আইএসপিআর এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার দিনগত রাত ১২টা থেকে সেনা টহল জোরদার করা হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। তবে স্থানীয়রা জানান, দুদিন আগে থেকেই পুলিশ লকডাউনের সব পরিকল্পনা করে ফেলেছে। এলাকার রাস্তা বন্ধ করাসহ কোনোভাবে যাতে এলাকায় কেউ প্রবেশ বা বের হতে না পারে সেজন্য কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ। একই সাথে করোনা টেস্টের জন্য এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টেস্টিং বুথ স্থাপন করা হয়েছে।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান ইরান জানিয়েছেন, লকডাউন গাইড লাইন অনুযায়ী যে এলাকাকে লকডাউন ঘোষণা করা হবে ওই এলাকা থেকে কেউ বের হতে পারবে না এবং কেউ প্রবেশও করতে পারবে না। সাধারণ যান চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ থাকবে। সবকিছু হবে নিয়ন্ত্রিত। আর অসহায় এবং দরিদ্রদের জন্য সিটি কর্পোরেশন থেকে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হবে। মানুষ চাইলে অনলাইনে কেনাকাটা করতে পারবে।
এদিকে, লকডাউনে জীবন-জীবিকা কিভাবে চলবে তা নিয়ে শঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। চাকরি হারানোর আশঙ্কায় থাকা পূর্ব রাজাবাজার মসজিদ গলির বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, আমি গুলিস্তানের একটি বেসরকারি অফিসে চাকরি করি। আমার বাসা এখানে। লকডাউনের কারণে আমি অফিসে যেতে পারবো না। এভাবে অফিস মিস হলে আমাকে কি কোম্পানি রাখবে? বেতন দেবে? আমি লকডাউনে কিন্তু আমার কর্মস্থল খোলা এটা কীভাবে হয়? এটার তো সমাধান হওয়া উচিত। এ নিয়ে এখন চিন্তায় আছি। কী করবো জানি না। বুঝতে পারছি না।

মরিয়ম আক্তার নামে এক সরকারি চাকরিজীবী বলেন, আমি সরকারি অফিসে চাকরি করি। হয়তো আমার অফিস সেটা মানবে। কিন্তু যে মানুষটি বেসরকারি অফিসে চাকরি করেন, তিনি তো চাকরি হারাবেন। কারণ প্রতিষ্ঠান তাকে বসিয়ে বসিয়ে বেতন-ভাতা দিতে চাইবে না। আর যারা দিন এনে দিন খায় বা ব্যবসা-বাণিজ্য করে সংসার চালান তাদের অবস্থা কী হবে? কয়দিন সিটি কর্পোরেশন ত্রাণসামগ্রী দেবে। এই ত্রাণ নিয়ে কী হয়েছে সেটা কিন্তু অতীতে সবাই দেখেছে। মানুষ ত্রাণের জন্য রাস্তায় নেমে এসেছে। এবার যাতে সেটা না হয় সেদিকে অবশ্যই সরকারকে নজর রাখতে হবে।

এসব বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান ইরান বলেন, লকডাউন গাইডলাইন অনুযায়ী চাকরিজীবী হোক আর যেই হোক কেউই এই এলাকা থেকে বের হতে পারবেন না। দোকানপাটও বন্ধ থাকবে। যারা ভাসমান দোকানদার রয়েছেন তারাও থাকতে পারবেন না। রাস্তাঘাটে কোনও যান চলাচল করবে না। কারও যদি খাবার প্রয়োজন হয় আমরা সেটা সরবরাহ করবো। আমাদের প্রশিক্ষিত লোক থাকবে। নিয়মিত কর্মহীন মানুষের জন্য ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করবো। বাসার ময়লাও আমরা নেবো। তারা বাসা থেকে বের হতে পারবেন না।

ডিএনসিসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পূর্ব রাজাবাজার এলাকার নাজনিন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ডিএনসিসির ওয়ার্ড কাউন্সিলর, স্বাস্থ্য অধিদফতর, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), এটুআই, ই-কমার্স অব বাংলাদেশ (ইক্যাব) এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিকে নিয়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হবে। এলাকায় একটিমাত্র প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ (গ্রিন রোডে অবস্থিত আইবিএ হোস্টেলের পাশের সড়ক) খোলা থাকবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ