পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘এই সপ্তাহ খানেক আয়-রোজগার দিয়ে কোনমতে সংসার চলেছে। রোডে যাত্রী ছিল। এখন নাকি লকডাউন দিয়ে দিচ্ছে। করোনায় ঘরে বসে থাকলে তো পরিবারের ভাত জুটবে না’। চট্টগ্রাম নগরীর নন্দনকাননে সিএনজি অটোরিকশা চালক মফিজুর রহমান হতাশা ব্যক্ত করলেন।
বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা পর্যায়ক্রমে লকডাউন ঘোষণা করে তা কঠোরভাবে কার্যকর করার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। এলাকাভিত্তিক সামাজিক সংক্রমণ পরিস্থিতি, আক্রান্তের হার, আক্রান্ত ও উপসর্গে মৃত্যুহার এবং সার্বিক উচ্চঝুঁকি ইত্যাদি ফ্যাক্টর বিবেচনা করে লকডাউনে পড়বে নগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকা। রোডম্যাপ অনুসারে নিয়ন্ত্রিত থাকবে লোক চলাচলসহ লকডাউন এলাকার জীবনযাত্রা।
এ নিয়ে চট্টগ্রামের সচেতন নাগরিক মহলে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। কেননা লকডাউন এলাকা যদি আগ্রাবাদ, হালিশহর, পতেঙ্গা হয় তার উল্টো লকডাউন বহিভর্‚ত এলাকা হবে চট্টগ্রাম বন্দর। বন্দরকে তো বন্ধ রাখা যাবে না। আবার চাক্তাই খাতুনগঞ্জ ‘সবুজ’ এলাকা হলে তার পাশেই বাকলিয়া হবে লকডাউন বা রেডজোন। এ অবস্থায় মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা, যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল থাকবে কী উপায়ে? এ নিয়ে পদে পদে চরম বিভ্রান্তি ও জটিলতার মুখে পড়তে হবে মাঠ প্রশাসন এবং এলাকাবাসীকে।
এ অবস্থায় লকডাউন নিয়ে চট্টগ্রামে কৌত‚হল আছে বটে। তবে তেমন কোন আশাবাদ ফুটে উঠছে না মানুষের বক্তব্য-মন্তব্যের মাঝে। এর প্রতি সাড়াও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বরং অনেকেরই কথা, একটা সুষ্ঠু নিয়ম-সিস্টেমের মধ্যে না এনে একবার খুলেই দিলেন। নিয়ন্ত্রণও রাখেননি। স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গের চরম বিশৃঙ্খলায় করোনা সংক্রমণের দুয়ারই যেন খুলে দেয়া হলো। এখন তাদের আবার লকডাউনের তোড়জোড় চেষ্টায় ‘খোঁয়াড়’ ঘরে ঢোকানো সম্ভব হবে কিনা? এহেন ‘কঠোর’ ব্যবস্থা নেয়ার দরকার ছিল অনেক আগেই। আর তখন ছেড়ে দেয়া হয় সবকিছু বিশৃঙ্খলার মাঝেই।
গত মার্চ-এপ্রিল মাসে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে পৃথিবীর করোনা সংক্রমিত দেশগুলো থেকে স্রোতের মতো প্রবাসীদের আগমন ঘটে। তখন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের দুয়ার পুরোপুরি খুলে দিয়ে আত্মঘাতী ভুল করা হয়।
বর্তমান মুহূর্তের বাস্তবতায় এসে এ ধরনের লকডাউন কৌশলের সঙ্গে অনেকেই একমত নন। তারা মনে করছেন, অপরিকল্পিত লকডাউন তেমন কোন সুফল বয়ে আনবে না। বরং দেশের বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রামে উভয় সঙ্কটে পড়বে মানুষের জীবন এবং জীবিকা।
আবার অপরিকল্পিত লকডাউনের কারণে শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে সীমিত আয় ও নিম্নআয়ের মানুষের জীবিকার পথ রুদ্ধ এমনকি বিপন্ন হয়েই যেতে পারে। কর্মহীন হয়ে পড়বে আরও অনেক মানুষ। সমাজে অভাবের তাড়নায় বাড়বে হাহাকার। সামাজিক ভারসাম্য বিনষ্ট হবে।
চট্টগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্যগত পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাহত হবে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর-শিপিং কার্যক্রমের গতিশীলতা। রাজস্ব আদায় থমকে যাবে। আমদানি-রফতানি ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পের কাঁচামাল ও নিত্যপণ্য পরিবহন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়বে।
চট্টগ্রাম বন্দর ও নগরীকে কেন্দ্র করে করোনাতে দেশের চলমান অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মাঝেও নিভু নিভু অবস্থাতেই সীমিত পরিসরে শিল্পের উৎপাদন, কর্মসংস্থান ও রফতানির ধারা জিইয়ে আছে। তাও বিঘিœত হয়ে যেতে পারে অপরিকল্পিত লকডাউনের কারণে।
অন্যদিকে গোড়াতেই কড়াকড়ি নিশ্চিত না রেখেই ঘরের বাইরে লাগামহীন ছেড়ে দেয়া স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গকারীদের এখন নিয়ন্ত্রণে আনা কতটা সম্ভব হবে এ নিয়ে চট্টগ্রামবাসীর কথাবার্তায় সংশয়-সন্দেহ প্রকাশ পাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।