Inqilab Logo

বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাজেটে বিশেষ প্রণোদনার পরামর্শ

এফবিসিসিআই’র ওয়েবিনারে অর্থনীতিবিদ ব্যবসায়ী ও খাত সংশ্লিষ্টরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০২০, ১২:০১ এএম

করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের স্থবির অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে বাজেটে বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণা জরুরি। এক্ষেত্রে দেশীয় শিল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে জোর দিতে হবে। গতকাল ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও খাত সংশ্লিষ্টরা। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক টেকসই, পুনরুদ্ধার, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ, এফডিআই এবং ওএফডিআই বিষয়ে ওয়েবিনার করে এফবিসিসিআই।

সংগঠনটির সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, আবদুল মাতলুব আহমাদ প্রমুখ অংশ নেন।

কারোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আর্থিক ক্ষতি মোকাবিলায় ব্যাংকঋণ ভিত্তিক যেসব প্যাকেজ নেয়া হয়েছে তা সঠিকভাবে বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকিং খাত সংকটের মধ্যে দিয়ে চলছে। তার ওপর সরকার ব্যাংক ঋণ ভিত্তিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এতে করে অর্থনীতির উন্নতি হবে। তবে প্রণোদনা বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অবশ্যই সহযোগিতা করতে হবে। ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি বাংলাদেশ ব্যাংক অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। যার মাধ্যমে ব্যাংক খাতে তারল্য বাড়বে। এই উদ্যোগটি স্বল্পমেয়াদি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তিনি। তিনি বলেন, প্রয়োজনে ৫, ১০ অথবা ১৫ বছর মেয়াদি প্রকল্প নিতে হবে।

ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি এতটা কমে যাওয়া আসলেই দুঃখজনক। তবে করোনা পরবর্তীতে কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য বেসরকারি ঋণ বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি একে আজাদ বলেন, আর্থিক ক্ষতি মোকাবেলায় বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে। পাশাপাশি দেশীয় দক্ষশক্তি বাড়াতে হবে। কারণ দক্ষজনশক্তি না থাকায় দেশ থেকে প্রতি বছর ৫ বিলিয়ন অর্থ চলে যাচ্ছে। এটি বন্ধ করতে হবে।
আব্দুল মাতলুব আহমেদ বলেন, এখন সময় দেশীয় ইন্ডাস্ট্রিকে সার্পোট দেয়ার। পণ্য উৎপাদন করে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানোর, বিদেশেও রফতানি করা যাবে। বাংলাদেশটাকে পুরা ইপিজেডের মতো করে দেবেন। দেশটাই পাল্টে যাবে। চলমান পরিস্থিতিতে যেসব পণ্য রফতানি করতে সমস্যা হচ্ছে তা দেশের বাজারে সরবারহের পরামর্শ দেন তিনি।

সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, দেশের কৃষকরা চলমান সংকটকালীন সময়ে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছে। তাই কৃষি খাতের ঋণ প্যাকেজের সুদহার আরও কমিয়ে আনার দাবি জানান তিনি।

বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অবকাঠামোর তৈরি এবং দক্ষশক্তি বৃদ্ধির পরামর্শ দেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডির) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
মাশরুর রিয়াজ বলেন, করোনা মোকাবেলায় প্রথমে আমাদের স্বাস্থ্য খাতের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। অর্থনৈতিক সংকট চলছে। এই অবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি খাতে প্রণোদনা দিতে হবে। আগামী বাজেটে ৭-৮ শতাংশ ঘাটতি থাকতে পারে। তবে বাজেটে নতুন করে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে।
এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি এবং বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, করোনা সংকট মোকাবেলায় কর্মসংস্থান তৈরির কোনো বিকল্প নেই। কারণ ইতোমধ্যেই ১৪ লাখ কর্মী বিদেশ থেকে ফিরে এসেছেন। তাদের পাশাপাশি দেশের জনগণের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়াও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে সক্রিয় পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

এনবিআর সদস্য মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের করোনা সংকট মোকাবেলা করতে হবে। সরকার যেই স্টিমুলাস প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তার পাশাপাশি ট্যাক্স হার কমিয়ে আনার প্রয়োজন আছে। গত ২৫ বছরে আমরা লক্ষ্য করেছি ট্যাক্স রেট কমালে রেভিনিউ কখনই কমে না। আগামী দুই বছরে অবশ্যই এই সুযোগ তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি ভ্যাট কমানোরও প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়াও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা খাতকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। যা আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী ভিতের ওপর দাঁড়াতে সাহায্য করবে।



 

Show all comments
  • Abul Kalam ৮ জুন, ২০২০, ১২:৪৬ এএম says : 0
    প্রনোদনাও লাগবে ট্রেক্সও কমানোর দাবি কাপড়ের দাম এবার অর্ধেক দামে বিক্রি করবে নাকি,
    Total Reply(0) Reply
  • ইঞ্জিঃ মোঃ মনিরুল ইসলাম ৮ জুন, ২০২০, ১২:৪৯ এএম says : 0
    দেশে সার্বজনীন চিকিৎসা এবং পেনশন ব্যবস্থা এখনই শুরু করা উচিত। দেশের প্রায় প্রত্যেকটি নাগরিকই মোবাইল সেবা ব্যবহারের মাধ্যমে অনেক টাকা ট্যাক্স দিচ্ছেন। এখান থেকে প্রয়োজনে প্রতিমাসে কিছু টাকা কেটে রেখে সার্বজনীন পেনশন এবং চিকিৎসা সেবা চালু করা যেতে পারে।
    Total Reply(0) Reply
  • Shauvo ৮ জুন, ২০২০, ১২:৪৯ এএম says : 0
    এগুলো সময়ের দাবী কিন্তু এসব বাস্থবায়ন কবে হবে কেউ জানে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Jamil Hosen Jon ৮ জুন, ২০২০, ১২:৪৯ এএম says : 0
    ব্যাংকে ১০ লাখ থেকে এক কোটি টাকা থাকলে ২০০০ টাকা শুল্ক দিতে হয়।এই স্তরটি বেশ বড়।এটাকে দুই ভাগ করে দশ লাখ থেকে পঞ্চাশ লাখ এবং পঞ্চাশ লাখ থেকে এক কোটি করা যায়।দ্বিতীয় ভাগের শুল্ক চার বা পাঁচ হাজার টাকা করা যায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Animesh Das ৮ জুন, ২০২০, ১২:৫০ এএম says : 0
    “জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে এনবিআরকে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় করতে হবে ভ্যাটে। ” ----ভ্যাটের টাকা সাধারণ ক্রেতাদের পরিশোধ করতে হয়, সরকার আবারও সাধারনের পকেট কাটার ব্যবস্থা নিল... ব্যাংক দস্যু, ভুমি দস্যু, টেন্ডার দস্যুরা পাবে কালো টাকা -সাদা করার প্রণোদনা...
    Total Reply(0) Reply
  • Mamun ৮ জুন, ২০২০, ১২:৫০ এএম says : 0
    Government needs money to pay for all those interest from loans
    Total Reply(0) Reply
  • Md Syed Alam ৮ জুন, ২০২০, ১২:৫০ এএম says : 0
    আমদানি খরচ কমলে বাজারে বিদেশি পণ্য বেশি দেখা যাবে। মানুষ দেশি পণ্য উৎপাদনে উৎসাহ পাবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ৮ জুন, ২০২০, ১২:০৩ পিএম says : 0
    What ever suggestion they give our heedless government will not listen... Only way to to recover our country from many problem is to rule by the Law of Allah.. This people have forgotten Allah is the Creator and The Almighty Creator give us the guide line how to abide the rule of Allah in every aspect in our life. In Islam "Prevention is Better Than Cure"
    Total Reply(0) Reply
  • Only the Way! ৮ জুন, ২০২০, ৯:৫২ পিএম says : 0
    Corona removing is the only way to building the stronger economy of Bangladesh.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ