পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার প্রাদুর্ভাবে এ বছর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি আড়াই শতাংশের বেশি হবে না বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। গতকাল বিদায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থান এবং বাজেটের চ্যালেঞ্জ নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির গবেষণা প্রতিবেদনে প্রবৃদ্ধির এই পূর্বাভাস দেয়া হয়।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিপিডির সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সিনিয়র গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে মার্চের শেষ দিক থেকে অর্থনীতি একটা ভিন্ন গতি-প্রকৃতির দিকে ঢুকে গেছে দাবি করে করে মূল প্রতিবেদনে তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি কেমন হতে পারে আমরা সেটা দেখার চেষ্টা করেছি। সেক্ষেত্রে আমরা কতগুলো বিষয়কে বিবেচনায় নিয়েছি। বর্তমান যে পরিস্থিতি আছে তার কী ধরনের প্রভাব পড়েছে। আমরা দেখেছি পাঁচটি খাত সরাসরি বড় অসুবিধায় পড়েছে। তিনি বলেন, জিডিপিতে ১৫টি খাত থাকে। নিঃসন্দেহ অনেক খাতই বড় ধরনের ক্ষতিতে পড়েছে। কিছু কিছু খাত যেমন কৃষির উৎপাদন মোটামুটি ভালো হয়েছে।
ম্যানুফ্যাকচারিং ও কন্সট্রাকশন খাত প্রত্যক্ষভাবে বড় সমস্যায় পড়েছে এবং হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও পরিবহন দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় জিডিপিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমরা যদি ধরে নিই অর্থবছরের বাকি যে সময় আছে তাতে ভালো প্রবৃদ্ধি হবে তারপরও প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। অর্থাৎ সবচেয়ে ভালো সিনারিও যদি আমরা এই বছরের জন্য চিন্তা করি তাহলে আমাদের ধারণা এ বছরের প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি হবে না।
তৌফিকুল ইসলাম খান আরও বলেন, আমরা যদি ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারি, তাহলে তা যথেষ্ট খারাপ না। বিশ্বের অনেক দেশ এই সময়ে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে চলে গছে। আমাদের পাশের দেশ ভারতেও এই ধরনের আশঙ্কা করা হয়েছে।
জিডিপির প্রবৃদ্ধি নিয়ে দুশ্চিন্তা না করার আহ্বান জানিয়ে সিপিডির এই গবেষক বলেন, সাধারণত আমাদের নীতি, পরিবেশ পরিস্থিতি যদি বিবেচনা করি দেখি, আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধিকে বেগবান করার জন্য বড় গুরুত্ব থাকে। এটাই প্রধান বলে অনেক সময় অনেক নীতি-নির্ধারকরা বলেন। কিন্তু বর্তমান সময় অত্যন্ত ভিন্ন ধরনের সময়। এই সময়ে আমরা প্রবৃদ্ধির ওপর বিশেষ জোর না দিয়ে, বরং মানুষের জীবন বাঁচানো সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রবৃদ্ধি অবশ্যই এবারের জন্য সবচেয়ে বড় নিয়ামক হতে পারে না।
সিপিডির অনারারি ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নীতি-নির্ধারকদের অনেকে বলছেন- আমরা এ বছরের জন্য প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন ৮ শতাংশ করেছিলাম। প্রথম নয় মাস অর্থনীতি খুব ভালো চলেছে। সুতরাং আমাদের ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতেই পারে। তবে আমাদের হিসাবে প্রবৃদ্ধি দুই থেকে আড়াই শতাংশের বেশি হবে না।
ব্যাখ্যা দিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ধরি গত বছর আমাদের জিডিপি হয়েছিল ১০০। তাহলে চার কোয়ার্টারের প্রতি কোয়ার্টারে হয় ২৫ করে। প্রথম তিন কোয়ার্টারে হয় ৭৫। এখন প্রথম তিন কোয়ার্টারে ৮ শতাংশ করে প্রবৃদ্ধি হলে তিন কোয়ার্টার শেষে দাঁড়ায় ৮২। শেষ কোয়ার্টারে অর্থনীতি কীভাবে চলেছে? সেখানে যদি ৮০ শতাংশও কাজ করে তাহলে ২৫ হবে ২০। তাহলে ৮২ আর ২০ মিলিয়ে হবে ১০২। সুতরাং সাধারণ হিসাবেও আমাদের অবজারভেশন মিলে। প্রথম তিন প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি যদি ৮ শতাংশ হারেও হয়, তাহলেও অর্থবছর শেষে এটা দুই থেকে আড়াই শতাংশের বেশি হবে না।
ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, আমাদের এই বছরের বাজেট হতে হবে সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী বাজেট। যেখানে স্বাস্থ্যখাতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বাজেটে ঘাটতি পাঁচ শতাংশের বেশি হলেও সরকারি ব্যয় বাড়াতে হবে। মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, অর্থনৈতিক চাপ যতই বাড়ুক না কেন লকডাউনের কথা আমাদের ভাবতে হবে। করোনার ঝুঁকি মাথায় রেখে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।