পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রতিবছর এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের এক সপ্তাহের মধ্যেই শুরু হয় একাদশ শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রম। ক্লাস শুরু হয়ে যায় জুন মাসে। এর আগে এপ্রিলে এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হয় মে মাসের মধ্যে। শিক্ষার্থীরা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করে প্রস্তুতি নিতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির। কিন্তু এবার প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস ওলট-পালট করে দিয়েছে সব রুটিন। সংসদ টেলিভিশন ও অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেয়া হলেও ভর্তি ও এইচএসসি পরীক্ষার মতো আটকে গেছে স্কুল-কলেজের প্রথম সাময়িক, অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণের চিন্তা করলেও শিক্ষাবিদরা এর বিরোধীতা করে জানিয়েছেন দেশের সব জায়গায় ইন্টারনেট সুবিধা একই রকম নয়, এছাড়া অনেক শিক্ষার্থীই তথ্য-প্রযুক্তির আওতার বাইরে রয়েছে। তাদেরকে বঞ্চিত রেখে পরীক্ষা গ্রহণ করা কোনভাবেই সঠিক হবে না। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলা পর্যন্ত একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি, এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষাসহ সাময়িক ও অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা নেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
করোনা মহামারীর সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরপরই গত ১৮মার্চ থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দেশের সব ধরণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে পারে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলার পক্ষে মত দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যদিও এরই মধ্যে গত ৩১ মে প্রকাশিত হয়েছে চলতি বছরের এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল। কিন্তু ফল হাতে পেলেও এখন আটকে গেছে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম। একইভাবে গত এপ্রিলে যে এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল সেটিও আটকে গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে কোনভাবেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি ও এইচএসসি, আলিম এবং সমমানের পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হবে না। ফল প্রকাশের পর প্রথম দিকে অনলাইনে একাদশ শ্রেণির ভর্তি সম্পন্ন করার চিন্তা করা হলেও শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা জানান, একজন শিক্ষার্থী অনলাইনে ভর্তি সম্পন্ন করতে চাইলেও তাকে কমপক্ষে ৪বার দোকানে যেতে হবে। যেখানে একাধিক ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা করোনার ঝুঁকির মধ্যে পরতে পারে। অন্যদিকে এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষাও একই কারণে নেয়া সম্ভব হবে না। কারণ বিপুল পরিমান শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে, এর সাথে থাকে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, অভিভাবকরা। ফলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর হারুন-আর-রশিদ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া এখনই শুরু করা যাচ্ছে না। সেপ্টেম্বরের দিকে যেহেতু (একাদশ শ্রেণির) ক্লাস শুরুর চিন্তা, তাই এখনই ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করাটা রিস্ক হয়ে যায়। কারণ অনলাইনে কলেজে ভর্তির আবেদন করা গেলেও শিক্ষার্থীরা কম্পিউটারের দোকানে যায়, কলেজে যায়। আমাদের যে অভিজ্ঞতা, প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ হাজার অভিভাবক বোর্ডেই আসেন। হয়ত আবেদন করতে পারেননি বা আবেদন করার সময় ভুল হয়েছে, সেটা ঠিক করতে দৌড়ে আমাদের কাছে আসেন। এসব বিচার-বিশ্লেষণ করে বলছি সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব হবে না। তবে কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু করতে আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি প্রফেসর মু. জিয়াউল হক বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা যদি এই করোনাপরিস্থিতির মধ্যে ভর্তির জন্য ঘর থেকে বের হয় তাহলে তারা ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। এজন্য আমরা চিন্তা-ভাবনা করেছি যে, পরিস্থিতি আরও কিছুটা উন্নতি হলে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যখন খোলার সময় হবে তখন আমরা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির কার্যক্রম শুরু করবো। তিনি বলেন, ভর্তি প্রক্রিয়া এমনভাবে শুরু করা হবে যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সাথে সাথে অন্যান্য শ্রেণির মতো একাদশ শ্রেণির ক্লাসও আমরা শুরু করতে পারি।
এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষার বিষয়ে প্রফেসর জিয়াউল হক বলেন, করোনাপরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে তার ১৫ দিন পরে এই পরীক্ষাটি নেয়া হবে বলে জানান আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির এই সভাপতি। এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে প্রথম সাময়িক ও অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষাও গ্রহণ করা হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।