Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অক্টোবরের পর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উত্থান ঘটবে : আইএমএফ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০২০, ১২:০২ এএম

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে গভীর খাদে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশের অর্থনীতি আগামী বছরের অক্টোবরে উত্থান ঘটার আশা করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ, পূর্বে এই পূর্বাভাস ছিল ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। এই পূর্বাভাস সত্য হলে গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চেয়ে চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কমবে সাড়ে ৪ শতাংশ যা গত তিন দশকের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সর্বোচ্চ পতন।

তবে আগামী অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে অর্থনীতিতে গতি আসায় আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থাটি। আইএমএফ করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশকে ৭৩ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের সঙ্কটকালীন অর্থায়নের জন্য প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস দিয়েছে। চলমান অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ব্যালেন্স অব পেমেন্টসের সঙ্কট মোকাবেলায় গত ২৯ মে এই ঋণ অনুমোদন করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। অর্থনীতিকে গতিশীল করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় ১ লাখ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন প্রনোদনা প্রকল্প নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি ৩১ মে থেকে সকল অর্থনৈতিক কার্যক্রম খুলে দেয়া হয়েছে।
আইএমএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুদ্রাস্ফীতি পরিস্থিতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যেই রয়েছে। তবে খাদ্য পণ্যে মূল্যস্ফীতি বাড়লেও খাদ্যবহিভর্‚ত পণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। সারাদেশে বাম্পার ফলনের কারণে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে কৃষি পণ্যের বাজারজাতকরণে সমস্যা হলেও দাম বৃদ্ধি হচ্ছে না। তবে সামনের দিনের কিছু ঝুঁকিও চিহ্নিত করেছে আইএমএফ। সংস্থাটি সতর্ক কর দিয়ে বলেছে, করোনা সংক্রমণ দীর্ঘায়িত হলে রফতানি ও রেমিটেন্সে প্রভাব পড়বে।
মধ্যপ্রাচ্যে তেলের উদ্ধৃত্ত সরবরাহ অব্যহত থাকলে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে স্থবিরতা বাড়বে। আর এতে বাংলাদেশের প্রবাসী আয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ বাংলাদেশের প্রধান প্রবাসী আয় আসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রেমিট্যান্স ২০ শতাংশ বাড়লেও মার্চ থেকে তা কমতে শুরু করেছে। মে মাসে রেমিটেন্স গত বছরের মে মাসের তুলনায় ১৪ শতাংশ কমে ১৫০ কোটি ডলার এসেছে।
কিছু বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মী চাকরি হারিয়েছে যারা দেশে ফিরে আসার অপেক্ষায় আছে। আর যারা এখনো টিকে আছেন তারাও চাকরি হারানো বা বেতন কমার ঝুঁকিতে রয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) রফতানি আয় সামান্য কমেছিল। কিন্তু করোনার প্রভাবে এপ্রিলে রফতানি কমেছে ৩৩ শতাংশ। কোভিড-১৯ বাংলাদেশের গার্মেন্ট খাতে সর্বোচ্চ ক্ষতি করেছে। কার্যাদেশ কমে যাওয়ায় কর্মরত ৩০ লাখ শ্রমিকের মধ্যে ১০ লাখ শ্রমিককে চাকরি হারাতে হচ্ছে বলে জানা গেছে।
তবে আইএমএফ সতর্ক করেছে, করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকলে বাংলাদেশ সরকারকে আবার দীর্ঘমেয়াদি নিয়ন্ত্রণে যেতে হতে পারে যা সামাজিক অসন্তোষ বাড়িয়ে তুলতে পারে। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ক্রয় ক্ষমতা কমিয়ে দিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যহত করতে পারে। অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হলে ব্যাংক খাতের শৃঙ্খলা কঠোরভাবে রক্ষা করতে বলেছে আইএমএফ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ