পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জামিন ও জরুরি বিষয়সমূহ শুনানির জন্য সব আদালতে স্থাপন করা হয় ভার্চুয়াল বেঞ্চ। গত ১১ মে থেকে আদালতগুলোতে লেগে যায় জামিন শুনানির জট। হাজার হাজার জামিন মঞ্জুরও হয়। এসবের ভিড়েই হয়ে যাচ্ছে চাল চোরদের জামিনও। অনেকটা নির্বিঘ্নভাবেই জামিন পেয়ে যাচ্ছেন তারা। এ জন্য নিয়োগ দিচ্ছেন প্রভাবশালী আইনজীবী। অনেকে ম্যানেজ করছেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)। তবে নানা কৌশলে বিচারিক আদালত থেকে জামিন নিলেও হাইকোর্টে তা আটকে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। আদালত সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে এ তথ্য।
সূত্র মতে, করোনা শুরুর পর সরকার সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনিসহ নানা কর্মসূচির আওতায় নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে চাল-ডাল-তেল-লবণ বিতরণ শুরু করে। স্থানীয় সরকারের সহযোগিতায় এ কর্মসূচি চলে প্রান্তিক জনপদে। আর এ কর্মসূচিকে আখের গোছানোর মওকা হিসেবে নেয় এক শ্রেণির অসাধু জনপ্রতিনিধি, ডিলার, সরকারি সংস্থা ও অধীনস্থ কর্মচারী। তারা সরকারি চাল চুরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ত্রাণের চাল, ডাল, তেল নিজের জিম্মায় রেখে খোলাবাজারে বিক্রি করেন। কোনো কোনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার চাল লুকিয়ে রাখেন ঘরের ভিটা খুড়ে।
টিসিবির ডিলার ভোজ্য তেল মজুত করেন খাটের নিচে। ভিজিডি-ভিজিএফ কার্ডেরও শত শত টন চাল আত্মসাৎ করা হয়। অভিযোগ ওঠে বয়ষ্কভাতাসহ দরিদ্রদের বিভিন্ন ভাতা প্রদানে ঘুষ আদায়ের। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর আড়াই হাজার টাকা নগদ অর্থ সহায়তা ও ত্রাণ বিতরণেও ৫শ’ টাকা করে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ ওঠে। এসব ঘটনা সরকারকে বিব্রত করে। তাই চাল চুরি, ত্রাণসামগ্রী আত্মসাতসহ এ সংক্রান্ত দুর্নীতি-অনিয়ম কঠোর হস্তে দমনের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। এর পরপরই ভ্রাম্যমাণ আদালত, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন, র্যাব ও দুদকের অভিযানে উদ্ধার করা হয় বস্তা বস্তা সরকারি চাল। প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ মেলায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ৯৪ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান-মেম্বারকে সাময়িক বরখাস্ত করে। গ্রেফতার করে ৬৩ জনকে। তবে নির্বিকার বসে নেই গ্রেফতার হওয়া চাল চোরেরা। তারা এখন জামিনে মুক্ত হতে মরিয়া। আশ্রয় নিচ্ছেন ক‚টকৌশলের। ঢালছেন কাড়ি কাড়ি অর্থ। আদালত হিসেবে বেছে নিয়েছেন আপদকালীন ভার্চুয়াল আদালতকে।
আদালত সূত্র জানায়, গত ১১ মে আদালতগুলোতে ভার্চুয়াল বেঞ্চ চালু হয়। এসব বেঞ্চে এ যাবৎ ২৫ হাজারের বেশি আসামির জামিন হয়। যদিও আবেদনের সংখ্যা আরও বেশি-৩৩ হাজার ২৮৭টি। হাজারও জামিন আবেদনের ভিড়ে রয়েছে চাল চোরদের আবেদন। তাদের পক্ষে জামিন শুনানি করছেন সংশ্লিষ্ট বারের প্রভাবশালী আইনজীবীরা। সরকারপক্ষের আইনজীবীদের শক্ত বিরোধিতা না থাকলে আদালত তাদের জামিন দিয়েও দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে জামিন আদেশের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষের আপিল করা ছাড়া কোনো পথ নেই।
এ বিষয়ে দুদকের সাবেক মহাপরিচালক (লিগ্যাল) মো. মাইদুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, সরকারি চাল চুরি, আত্মসাৎ ও ঘুষ গ্রহণের ঘটনায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মূলত: মামলা করছে তিনটি ধারায়। ধারাগুলোর শাস্তি ব্যাপক। অপরাধ প্রমাণিত হলে ১০ বছর কারাদন্ড থেকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু ধারাগুলো জামিনযোগ্য।
প্রায় অভিন্ন কথা বলেন দুদকের কৌঁসুলি খুরশিদ আলম খান। তার মতে, বিচারিক আদালত জামিন দিলে আমরা হাইকোর্টে সেটির বিরুদ্ধে আপিল করছি। হাইকোর্ট জামিন বহাল রাখলে চেম্বারে যাচ্ছি। আসামিতো জামিন লাভের চেষ্টা করবেই। প্রসিকিউশন সেটিতে কন্টেস্ট করছে কি না দেখার বিষয় সেটা।
এদিকে মামলার সংখ্যা বেশি হওয়ায় নতুন কোনো আবেদন নেবেন না হাইকোর্ট বিভাগের দুই ভার্চুয়াল বেঞ্চ। এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আবেদনের সংখ্যা অনেক বেশি হয়ে গেছে। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের বেঞ্চে (এনেক্স ১৯) ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চে (এনে- ৫) পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নতুন আবেদন প্রেরণ না করতে অনুরোধ করা হলো। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নির্ধারিত অধিক্ষেত্রের আবেদন বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের বেঞ্চ (এনেক্স ২১) ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের বেঞ্চে (পুরাতন ২১) অনলাইনে মামলায় আবেদনের সিসি (ই-মেইল সিসি) রাষ্ট্রপক্ষসহ আদালতে পাঠাতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।