পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনা উপসর্গ দেখা দেয়ায় স্বামীকে নিয়ে এ হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছোটাছুটি করেও বাঁচাতে পারেননি স্ত্রী রিনা ইসলাম। অসুস্থ স্বামী নুর আল আহাদকে নিয়ে পাগলের মত ঘুরলেও কোনো হাসপাতালই তাকে ভর্তি নেয়নি। করোনা উপসর্গ দেখে সব হাসপাতালই ভর্তি না নিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ কুষ্টিয়ার খোকসার আহাদের স্ত্রী রিনা ইসলামের। তিন থেকে চার ঘণ্টা এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরে যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে চোখের সামনেই বিনা চিকিৎসায় স্বামীকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখেছেন রিনা ইসলাম।
কুষ্টিয়ার খোকসার একতারপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের শহীদুল ইসলাম বিশ্বাস ও নুর নাহার দম্পতির একমাত্র সন্তান নুর আল আহাদ (৩২)। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ আহাদের বাবা-মা। আর প্রিয়তম স্বামীকে হারিয়ে শোকে পাগলপ্রায় স্ত্রী রিনা ইসলাম। গতকাল সকাল ১০টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকা থেকে আহাদের লাশ কুষ্টিয়ার খোকসার একতারপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামে পৌঁছলে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। শেষ পর্যন্ত তড়িঘড়ি করে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো কর্মকর্তা ছাড়াই দুজন পুলিশ সদস্য এবং পরিবারের কয়েকজন সদস্যের উপস্থিতিতে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জানাজা শেষে বহরামপুর কবরস্থানে দাফন করা হয় আহাদকে।
ঢাকা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে লাশ নিয়ে আসা আহাদের ফুফাতো ভাই পলাশ জানান, স্ত্রী এবং তিন বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে বসবাস করতেন আহাদ। গত শনিবার (৩০ মে) হঠাৎ করে তার শরীরে জ্বর আসে। কদিন পর থেকে কাশি আর সামান্য শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। আহাদ নিজেই ঢাকা মেডিকেলের একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা চালিয়ে আসছিলেন।
পলাশ জানান, বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ করেই আহাদের প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। অ্যাম্বুলেন্সযোগে রাত ১০টার দিকে প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, এই রোগীর আইসিইউ সাপোর্ট লাগবে। কিন্তু বর্তমানে এখানকার আইসিইউ খালি নেই। তাকে আইসিইউ সাপোর্ট রয়েছে এমন কোনো হাসপাতালে দ্রæত ভর্তি করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
এরপর অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে যাওয়া হয় আহাদকে। কিন্তু উপসর্গ জেনে ঢাকার কোনো হাসপাতালই ভর্তি নেয়নি আহাদকে। এভাবে দীর্ঘ প্রায় তিন-চার ঘণ্টা যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে কোনো হাসপাতালে ভর্তি করতে না পেরে পুনরায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসার সময় রাত দেড়টার দিকে পথেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নুর আল আহাদ। মৃত্যুর পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার নমুনা সংগ্রহ করে।
তিনি আরও জানান, গত বছর ঢাকায় থাকা অবস্থায় আহাদ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরপর থেকে তিনি মাঝে মাঝেই শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তাই এবার জ্বর আশায় তারা ভেবেছিলেন স্বাভাবিক সিজোনাল জ্বর। তাই অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
এদিকে আহাদ এবং রিনা ইসলাম দম্পতির তিন বছর বয়সী একমাত্র সন্তান মুইজ আল আহাদও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। যে কারণে আহাদের স্ত্রী এবং সন্তান ঢাকাতেই অবস্থান করছেন। আহাদের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর তাদেরও নমুনা পরীক্ষা করা হবে বলে জানা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।