Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কোটালীপাড়ায় পুলিশের এ এস আইর পিটুনিতে কৃষকের মৃত্যুর অভিযোগ

কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ জুন, ২০২০, ৫:০২ পিএম

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় পুলিশের এ এস আই সামিম উদ্দিনের পিটুনিতে নিখিল তালুকদার (৩৬) নামে এক কৃষকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার তাস খেলার আসর থেকে ধরে পিটুনি দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। বুধবার বিকেলে ঢাকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান তিনি। নিখিল তালুকদার কোটালীপাড়া উপজেলার রামশীল গ্রামের নীলকান্ত তালুকদারে ছেলে।

আজ শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গেলে নিখিলের স্ত্রী ইতি তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, 'জমির ধান কাটা ও ধান গোলায় তোলা হয়েছে। কাজ নেই। আমার স্বামী অবসর সময় কাটাচ্ছিলেন। মঙ্গলবার বিকেলে রামশীল বাজারের ব্রিজের পূর্ব পাশে আমার স্বামীসহ চারজন বসে তাস খেলছিলেন। এ সময় কোটালীপাড়া থানার এএসআই শামীম উদ্দিন একজন ভ্যানচালক ও এক যুবককে নিয়ে সেখানে যান। গোপনে মোবাইল ফোনে তাস খেলার দৃশ্য ধারণ করেন। তারা বিষয়টি টের পেয়ে খেলা রেখে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। অন্য তিনজন পালিয়ে গেলেও আমার স্বামীকে এএসআই শামীম ধরে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে হাঁটু দিয়ে তার পিঠে আঘাত করা হয়। এতে আমার স্বামীর মেরুদণ্ডে তিনটি হাড় ভেঙে যায়। তাকে প্রথমে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে সেখানে বুধবার বিকেলে সে মারা যায়।'

ইতি তালুকদার বলেন, আমার স্বামী অপরাধ করে থাকলে তাকে ধরে নিয়ে যেত। বিচার হতো। এভাবে কেন তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো! এখন আমার দুই শিশুসন্তানের ভবিষ্যৎ কী হবে। আমি এ হত্যার বিচার চাই।

নিহত নিখিলের বাবা নিলকান্ত তালুকদার বলেন পুলিশ হাটু দিয়ে আমার ছেলের কোমরের হার ভেঙ্গে গুরিগুরি করে দিয়েছে,আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

নিখিলের চাচাতো ভাই সাগর তালুকদার বলেন করোনা আতংকের ভিতর সময় কাটানোর জন্য তাস খেলার অপরাধে কোটালীপাড়া থানার পুলিশের এ এস আই সামিম উদ্দিন নিখিলকে ধরে তার পিঠে হাটু দিয়ে প্রচন্ড আঘাত করে কোমরের তিনটি হার ভেঙ্গে ফেলার কারনে সে অজ্ঞান হয়ে য়ায় আমরা তাকে উব্ধার করে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানের চিকিৎসকরা এক্সেরে করে তার কোমরের তিনটি হার ভাঙ্গা পেয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠায় এসব কথা মৃত্যুর আগে নিখিল আমাকে ঢাকা যাওয়ার পথে গৌরনদি বসে জানায় এবং তার দুটি শিশু বাচ্চাকে দেখে রাখার দাবি করে।

নিখিলের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারে শোখের মাতম চলছে এবং তার বাবা - মা ও স্ত্রী মাঝে মাছে অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খোকন বালা বলেন, শুনেছি পুলিশের মারপিটের কারনে নিখিলের মেরুদন্ডের তিনটি হার ভেঙ্গে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে, নিখিল এলাকায় ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিল। এভাবে পিটিয়ে মারাটা দুঃখজনক। পুলিশ আইনের লোক হয়ে এমন বেআইনি কাজ করলে জনগণ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?

এ বিষয়ে কোটালীপাড়া থানার এএসআই শামিম উদ্দিনের মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি স্যারের রুমে এর পর লাইনটি কেটে দেন।

কোটারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি শেখ লুৎফর রহমান বলেন, নিখিল তালুকদার নিহতের ঘটনায় গোপালগঞ্জের এ এস পি সার্কেলকে প্রধান করো একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে,তদন্ত শেষে ব্যবস্হা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ