Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এমপিরা পর্যায়ক্রমে যোগ দেবেন

বাজেট অধিবেশনে সর্বোচ্চ সতর্কতা বয়স্ক ও অসুস্থ এমপিদের অধিবেশনে না আসতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে : সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনাভাইরাসের ঝুঁকি প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সর্তকতার সাথে বাজেট অধিবেশনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সংসদ সচিবালয়। জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন আগামী ১০জুন শুরু হচ্ছে। এতে অধিবেশন সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় কর্মকর্তা-কর্মচারি ছাড়া অন্য কাউকে সংসদ ভবনে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে না। অধিবেশন হবে যতদূর সম্ভব সংক্ষিপ্ত। সরাসরি সংসদে প্রবেশ করে সংবাদ সংগ্রহের সুযোগ গণমাধ্যমকর্মীদেরও দেওয়া হচ্ছে না। অধিবেশন চলাকালে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি ও সুরক্ষা যথাযথভাবে পালন করা হবে।

এছাড়া সংসদ সদস্য উপস্থিতির ক্ষেত্রে কেবল কোরাম পূর্ণ হওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হবে। তাই সংসদ সদস্যরা পালাক্রমে অধিবেশনে যোগ দেবেন। এমপিরা কে কবে অধিবেশনে যোগদান করবেন তার তালিকা তৈরী হচ্ছে। সে তালিকা অনুযায়ী তারা অধিবেশনে যোগ দেবেন। সংসদে যোগ দেয়া এমপিদের কোভিড-১৯ পরীক্ষার বিষয়েও চিন্তাভাবনা হচ্ছে। তবে বয়স্ক ও অসুস্থ সংসদ সদস্যদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিরুৎসাহিত করা হেেচ্ছ। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদেরও করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বাজেট অধিবেশনের প্রস্তুতির ব্যাপারে সংসদ সচিবালয়ের একাধিক কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাজেট অধিবেশনের সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে গত সোমবার সংসদ সচিবালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া সংসদের হুইপরাও পৃথক বৈঠক করে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেন। সবসময় বাজেট অধিবেশন দীর্ঘ হলেও এবারের অধিবেশন হবে সংক্ষিপ্ত। ১০ জুন শুরু হওয়াা এ অধিবেশন ৩০ জুন বাজেট পাসের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। ১১ জুন বাজেট পেশের পর মঝে মাঝে বিরতি দিয়ে অধিবেশন চলবে। সব মিলিয়ে এবারের অধিবেশন সাত থেকে আট কার্যদিবসের মতো চলতে পারে বলে সংসদ সূত্রে জানা গেছে।

সূত্রমতে, বাজেটের ওপর এবার আলোচনাও হবে সংক্ষিপ্ত। সম্পূরক বাজেটসহ সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা আলোচনা হতে পারে। সাধারণত অধিবেশন শুরুর দিন সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে সার্বিক বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলেও কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক এবার হচ্ছে না। কমিটির প্রধান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং কমিটির সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের সাথে ভার্চুয়ালি আলোচনা করে সংসদের কার্যক্রম সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সংসদ সচিবালয়ের তথ্যমতে, ১১ জুন বেলা ৩টায় জাতীয় সংসদে আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করা হবে। এরপর যেসব দিনে সংসদের কাজ চলবে সেসব দিনে অধিবেশন শুরু হবে বেলা ১১টায়। একবেলার মধ্যেই দিনের কার্যসূচি শেষ করা হবে। অধিবেশনে বাজেটের ওপর আলোচনা ছাড়া অন্য কোনও কার্যক্রম থাকছে না। থাকছে না প্রশ্ন-উত্তর পর্বও।

প্রতিবছর বাজেট উপস্থাপন সরাসরি দেখার জন্য বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, বিদেশি মিশনের প্রতিনিধি, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ এবং সম্পাদকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়ে থাকে। এবার করোনা ঝুঁকির কারণে কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। গণমাধ্যমকর্মীদের সংসদে গিয়ে সংবাদ সংগ্রহে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হেেয়ছে। তাদেরকে সংসদ টেলিভিশন ও সোশ্যাল মাধ্যমসহ ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে সংবাদ সংগ্রহের জন্য বলা হয়েছে। সাংবাদিকদের বাজেট ডকুমেন্ট সংসদ সচিবালয়ের গণসংযোগ দফতরের পরিবর্তে মিডিয়া সেন্টারে দেওয়া হবে।

এর আগে লকডাউনের মধ্যে সংবিধানের নিয়ম রক্ষায় একদিনের জন্য গত ১৮ এপ্রিল সংসদ অধিবেশন হয়। ওই অধিবেশনে ৩৫০ এমপির মধ্যে ১৩৫ জন অংশ নিয়েছিলেন। বাজেট অধিবেশনে এই উপস্থিতির সংখ্যা আরও কম করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সংসদ সচিবালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, অধিবেশনে সংসদ সদস্যদের যোগদানের ব্যাপারে তালিকা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সে তালিকার ভিত্তিতে এমপিরা তাদের জন্য নির্ধারিত অধিবেশনে যোগদান করবেন। প্রতিদিন উপস্থিতি ৬০ থেকে ৮০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সুর্নিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি তালিকা করে যতজন এমপির উপস্থিতি প্রয়োজন, শুধুমাত্র ততজনকে আনা হবে। সীমিত সময়ের জন্য বাজেট পাসের গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোতে এগুলো করা হবে। এ ছাড়া করোনা টেস্ট সবাইকে করা না হলেও প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কাছাকাছি যারা যাবেন তাদেরকে অবশ্যই টেস্ট করানো হবে। ভিভিআইপি এলাকায় যেসব কর্মচারী দায়িত্ব পালন করবেন আগে থেকেই তাদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হবে। সংসদ কক্ষের ভেতর যেসব কর্মচারী দায়িত্ব পালন করবেন তাদেরও পরীক্ষা করা হবে। সংসদ অধিবেশনের জন্য আমরা সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য নিরাপত্তা-ব্যবস্থা নিচ্ছি।



 

Show all comments
  • Abdur Rafi ৩ জুন, ২০২০, ৬:২০ এএম says : 0
    বাংলাদেশে সাধারন জনগণের করোনার নাই আছে সংসদ সদস্যদের বড় বড় এমপি মন্ত্রী,ব্যবসায়ীদের জন্য। এরা এখনা করোনাকে এত ভয় পাচ্ছে কেন?দেশে ত করোনা নাই। আমরা করোনার চেয়ে শক্তিশালী বক্তব্যের লোকটাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ