বিএনপি নেতা সাজুর তত্ত্বাবধানে বিজয় দিবস র্যালিতে বিপুল নেতাকর্মীর অংশগ্রহন
ঢাকা-১৪ আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও দারুসসালাম থানা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস
সরকার পরিবহন সিন্ডিকেটের কাছে আত্মসমর্পন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সরকার গোটা জাতির জীবন ও মৃত্যু নিয়ে ট্রায়াল কেস করছে। করোনাভাইরাসের আঘাতে কত মৃত্যু ও আক্রান্ত হবে সেটি সরেজমিনে স্বচক্ষে দেখার জন্য গণপরিবহনসহ অফিস-আদালত খুলে দেয়া হয়েছে। একটি সরকার ম্যান্ডেটবিহীন হলেই কেবলমাত্র এধরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহন চালুর কথা থাকলেও সেটি কোনক্রমেই বাস্তবায়িত হয়নি। বাস, লঞ্চ, টেম্পু, অটোরিকসাসহ সবধরণের গণপরিবহনেই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে। দুরপাল্লার বাসগুলোতে ঠেলাঠেলি করে মানুষ ভেতরে ঢুকছে। অথচ শর্ত ছিল অর্ধেক যাত্রী তোলা হবে। কোন কোন বাসে ছাদের উপরেও যাত্রী তোলা হয়েছে। ঢাকা থেকে কোন কোন বাসে অর্ধেক যাত্রী তোলা হলেও ঢাকার বাইরে গিয়ে বেশী যাত্রী তোলা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। গণমাধ্যমে আরও প্রকাশিত হয়েছে যে, বাসে ৬০ শতাংশ ভাড়া নেয়ার কথা থাকলেও কোথাও কোথাও ৮০ শতাংশ অথবা এর চেয়েও বেশী ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। লঞ্চে সামাজিক দুরত্ব বজায় থাকা দুরে থাক, সেখানে মানুষের উপচেপড়া ভিড়। এগুলো সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতারই নিদর্শন। সরকার শুধুমাত্র বিরোধী দল ও মতকে নিষ্পেষণ ও নির্যাতনে সক্ষমতা অর্জন করেছে কিন্তু দুর্যোগ, মহামারী, দুর্ভিক্ষ এবং জনসাধারণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণরুপে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে করোনা ভয়ঙ্কর রাক্ষুসী চেহারায় আবির্ভূত হয়েছে। বাংলাদেশে করোনায় শনাক্ত রোগীদের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠার হার বিশে^র মধ্যে সবচেয়ে নি¤েœ। যেখানে ইরান, ইটালী ও স্পেনে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। এরমধ্যে জার্মানীতে সুস্থ হয়ে ওঠার হার ৯০ শতাংশ এবং ভারত ও পাকিস্তানে বাংলাদেশের দ্বিগুণ। অথচ বাংলাদেশে সুস্থ হয়ে ওঠার হার সর্বনি¤œ হওয়ার পরও তা বিবেচনায় না নিয়ে সবকিছু খুলে দেয়া হয়েছে কার স্বার্থে? সারাদেশকে কি সরকার গোরস্থান বানাতে চায়?
সিন্ডিকেটের স্বার্থ রক্ষার জন্যই সরকার সবকিছু করছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, সরকার জনস্বার্থে সফল নয়, কিন্তু দুস্কর্মের সাথী হতে খুবই দক্ষ। কে কোথায় ফেসবুকে কি পোস্ট করছে সেটি হরদম মনিটরিং করছেন সরকারের গোয়েন্দারা। পোস্টগুলোতে সরকারবিরোধী কোন বক্তব্য বা মন্তব্য থাকলেই ফেসবুক ব্যবহারকারীদেরকে গুম, নির্যাতন. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা, গ্রেফতারসহ নানা নির্যাতনের দুঃসহ যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। অথচ এক্সিম ব্যাংকের এমডি-ডিএমডি-কে গুলি করার হুমকি এবং নির্যাতনের জন্য মামলায় অভিযুক্ত শিকদার গ্রুপের ভ্রাতৃদ্বয় নাটকীয়ভাবে দেশ ছেড়ে চলে যেতে সক্ষম হলেন। যখন কোভিড-১৯ মহামারীর জন্য কিছু চাটার্ড বিমান ছাড়া সমস্ত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ তখন কিভাবে রণ হক শিকদার এবং দিপু হক শিকদার বিদেশে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেন তা নিঃসন্দেহে বিস্ময়কর। এর পেছনে যে ক্ষমতার আশির্বাদ আছে সেটি এখন সুষ্পষ্ট।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কায়দায় ব্যাংক লুটকারীদের পালাতে সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে যে, থাইল্যান্ডে বাংলাদেশ দুতাবাস তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিল সংকটাপন্ন দু’জন প্যাসেন্টকে বহনকারী একটি এয়ার এ্যাম্বুলেন্সকে ল্যান্ডিং পারমিশন দেয়ার জন্য। এভাবে শিকদার ভ্রাতৃদ্বয় মেডিকেল ভিসা ম্যানেজ করে দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে গমন করে। এটি সম্পূর্ণরুপে স্টেট টেরিরিজম। দু’জন দুরন্ত অপরাধীকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশ ছাড়ার সুযোগ করে দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। এরা মূলতঃ ব্যাংকের টাকা লুটে খাওয়ার জন্য এক্সিম ব্যাংকের এমডি-ডিমডি-কে তুলে নিয়ে হুমকি ও নির্যাতন করেছে। অতীতেও বর্তমান সরকার ব্যাংক লুটকারীদের নানাভাবে সহযোগিতা দিয়ে নিরাপদ করেছিল এটি তার আরেকটি উৎকৃষ্ট প্রমাণ। সেজন্যই জনগণের জীবনের তোয়াক্কা না করে শুধুমাত্র জীবিকার অজুহাত দিয়ে গণপরিবহনসহ সবকিছু খুলে দেয়াতেও প্রমাণিত হয়-এই সরকার অপরাধীদের পৃষ্ঠপোষক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।