Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিভীষিকাময় হয়ে উঠছে বিচারাঙ্গন

আক্রান্ত বিচারপতি-আইনজীবী

সাঈদ আহমেদ | প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০২০, ১২:১১ এএম

করোনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর কারণে বিভীষিকাময় হয়ে উঠছে বিচারাঙ্গন। গত ২৭ মে মারা গেছেন ঢাকা বারের সদস্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শওকত হোসেন অপু (৫৪)।

গতকাল সোমবার মারা গেছেন সুপ্রিম কোর্ট বারের লাইব্রেরিয়ান আসাদ। গত দুই সপ্তাহে নতুন আক্রান্ত হয়ে বাসা এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন অন্তত ২৩ আইনজীবী। আদালত কর্মচারীদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ছে করোনা। ভার্চুয়াল বিচার পদ্ধতির মাঝেই ছড়িয়ে পড়ছে করোনা। তাই নিয়মিত আদালত চালু হলে কি পরিস্থিতি হতে পারে-তা মনে করেই শিউরে উঠছেন বিচারাঙ্গনের মানুষ। সুপ্রিম কোর্ট দফতর সূত্র জানায়, আইনজীবী,বিচারক,বিচারপ্রার্থী এবং সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সীমিত আকারে বিচার কাজ চলছে সব আদালতে। হাইকোর্টে ১৩টি বেঞ্চ, আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট এবং জেলা আদালতগুলোতে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ভার্চুয়াল কোর্ট চালু করা হয়। তবে ‘সুষম সুবিধা’ না পাওয়ার অভিযোগ তুলে ভার্চুয়াল আদালত বন্ধের দাবি জানাচ্ছেন অনেক আইনজীবী। আবার বর্তমান পরিস্থিতিতে নিয়মিত আদালত চালু করলে সেটি আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত হবে-মর্মেও অভিমত দিচ্ছেন অনেকে।

পক্ষ-বিপক্ষ বিতর্কের মাঝেই আদালত অঙ্গনের মানুষের মাঝে নিরবে ছড়াচ্ছে করোনা। এক আইনজীবীর মৃত্যুর পর গত ২৯ মে সুপ্রিম কোর্ট বারের অ্যাডভোকেট শরীফ আহমেদ করোনা আক্রান্ত হোন। তার স্ত্রী-সন্তানও করোনা আক্রান্ত। মানবাধিকার নেত্রী অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজের অবস্থাও সঙ্কটাপন্ন। আক্রান্ত হয়েছেন অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু। তার আগে সুপ্রিম কোর্ট বারের অ্যাডভোকেট তিতাস হিল্লোল রেমা আক্রান্ত হন করোনায়। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠার আগেই সস্ত্রীক আক্রান্ত হন সাবেক অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল আব্দুর রেজাক খান। গত ৮ মে করোনা আক্রান্ত হোন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার। সিএমএইচ এ চিকিৎসার পর তিনি সুস্থতার পথে। এপ্রিলের মাঝামাঝি করোনা আক্রান্ত হোন সুপ্রিম কোর্ট বারের ব্যারিস্টার আকবর আমীন বাবুল। সুস্থ হয়ে উঠলেও এখনো করোনার ধকল কাটাতে পারেননি। এ ছাড়া এপ্রিলের শেষের দিকে আইনজীবী দম্পতি করোনায় আক্রান্ত হন। তারা এখন সুস্থ।

আদালত সূত্র জানায়, বিচারক,বিচারপ্রার্থী এবং আইনজীবীকে কোনো না কোনো কারণে আদালত অঙ্গনে সশরীরে হাজির হতেই হচ্ছে। এর মধ্যে বিচারকরা প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সামগ্রী ব্যবহার করছেন। বাকীদের এখনও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার আওতায় আনা যায় নি। ফলে ক্রম: সংক্রমণে আদালত অঙ্গন ভীবিষিকাময় হয়ে উঠছে। এ পরিস্থিতি আগাম আন্দাজ করেই গত ১৬ মে প্রধান বিচারপতির কাছে আদালতে জীবাণুনাশক উপকরণের ব্যবস্থা রাখার আবেদন জানান সুপ্রিম কোর্ট বারের আইনজীবী হুমায়ুন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউসার। আবেদনে করোনা প্রতিরোধের ব্যবস্থা হিসেবে কোর্ট প্রাঙ্গনের সব প্রবেশপথ এবং বাইরে থার্মাল স্ক্যানার,জীবাণুনাশক চেম্বার, পর্যাপ্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়। এ বিষয়ে ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব ‘ইনকিলাব’কে বলেন, করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর আদালত অঙ্গনের মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত। কারণ আদালতগুলোতে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ লাখ মানুষের সমাগত ঘটে। এর মধ্যে বিচারক,আইনজীবী, কোর্ট স্টাফও রয়েছেন। এমন একটি জনবহুল জায়গায় জীবাণুনাশক বুথ ও অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। বিষয়টি আমরা প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। তবে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো ব্যবস্থা দৃশ্যমান হয়ে ওঠেনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ