বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কোভিড-১৯ মহামারীতে জাতীয় সংকটে খাদ্য চাহিদা মেটাতে সরকারের আরো বেশি উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি জনগণকেও হার্ড ইমিউন সিস্টেম তৈরি ও বিকাশে যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে। করোনা মহামারী চলাকালিন সময়ে সুষম খাদ্য ও পুষ্টি সম্পর্কে পরিচালতি এক সমীক্ষার সারাংশে একথা বলা হয়। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুর এবং অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে এ সমীক্ষা পরিচালনা করে।
পুষ্টি ও সুষম খাদ্য সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলনটি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর-এর ঢাকাস্থ লিয়াজোঁ অফিসে অনুষ্ঠিত মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠনে এসব জানানো হয়। সোমবার (১ জুন) মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানটি ড. ওয়াজেদ রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং ইন্সটিটিউট, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর ও ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটি অস্ট্রেলিয়ার আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারীটি সারাবিশ্বে ক্রমবর্ধমানভাবে ছড়িয়ে পড়ার ফলে এটি সাধারণ জনগণ-এর স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রোটিনজনিত অপুষ্টি এবং সুষম খাদ্যের ঘাটতিগুলি অনিবার্যভাবে মানবদেহে মারাত্মক রোগ এর সৃষ্টি এবং মৃত্যুর পরিমাণকে ধীরে ধীরে বাড়িয়ে তুলেছে। পরিমাণ, গুণমান এবং সুরক্ষার দিক থেকে সমগ্র জনগোষ্ঠীর সামগ্রিক পুষ্টির চাহিদা বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য সরবরাহ প্রয়োজন।
এবারের গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিলো করোনাভাইরাস মহামারিজনিত সময়ে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে পুষ্টি এবং সুষমখাদ্যজনিত জ্ঞাননির্ভর বিভিন্ন স্তর অনুসন্ধান করা।
এ গবেষণাটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে একটি ক্রস-সেকশনাল সমীক্ষা পরিচালনা করে যা ড. ওয়াজেদ রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং ইন্সটিটিউট, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এবং স্কুল অব হেলথ সায়েন্সেস, ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়া দ্বারা পরিচালিত হয়। ২০২০ সালের এপ্রিল এবং মে মাসে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে লক-ডাউন চলাকালীন সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অনলাইন জরিপ পরিচালনা করা হয়। যেখানে ১১ হাজার ২৩২ জন উত্তরদাতা প্রশ্নপত্র যথাযথভাবে সম্পন্ন করেন।
গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, ১১ হাজার ২৩২ জন উত্তরদাতাদের মধ্যে পুরুষ (৫১ ভাগ), নারী (৪৭ দশমিক ৪ ভাগ) এবং অন্যান্য (১ দশমিক ৩ ভাগ)। এছাড়া ৩৫ দশমিক ৪ ভাগ এর বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে এবং ৬৬ দশমিক ৭ ভাগ উত্তরদাতা বিভিন্ন ধরনের পূর্ণকালীন চাকুরিতে নিযুক্ত ছিলেন। সামগ্রিকভাবে দেখা যায় যে, উত্তরদাতাদের ৭৯ দশমিক ২ ভাগ পরিবারের সাথে অবস্থান করছেন, ৪৬ দশমিক ৪ ভাগ বলেছেন তাদের করোনাভাইরাস সম্পর্কে ভাল জ্ঞান রয়েছে। তবে ৬৪ দশমিক ৬ ভাগ উত্তরদাতা দাবি করেছেন এই ভাইরাসের প্রতিরোধ সম্পর্কে তাদের জ্ঞান খুবই সীমিত। যখন ভারসাম্যযুক্ত খাবারের জ্ঞান সম্পর্কিত প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো তখন ৬৬ দশমিক ৩ ভাগ উত্তরদাতাদের উত্তর ছিল ইতিবাচক। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে কোয়ারেন্টিন সময়কার পুষ্টিজ্ঞান সম্পার্কে ৮৩ দশমিক ৩ ভাগ উত্তরদাতা অবগত নন।
গবেষকরা বলেন, নীতিনির্ধারকদের এই মহামারী চলাকালীন জনগণের মধ্যে পুষ্টি সম্পর্কিত জ্ঞান কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। উত্তরদাতাদের মধ্যে, যথাক্রমে ৮৯ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ৮১ দশমিক ১ শতাংশ স্বীকার করেন একটি সুষম ডায়েট এবং পরিপূরক খাবার গ্রহণ স্বাস্থ্যকর এবং হার্ড ইমিউন সিস্টেমের বিকাশ ঘটাবে যা করোনার মতো দীর্ঘস্থায়ী সংক্রামক রোগের ঝুঁকি হ্রাস করবে। সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে, ৫১ দশমিক ১ শতাংশ উত্তরদাতা এই করোনা মহামারীতে জাতীয় সংকটে খাদ্য চাহিদা মেটাতে সরকারকে পরিপূরক খাদ্য সরবরাহের প্রতি নজর দিতে সুপারিশ করেছেন।
গবেষকরা বলেন, জনগণের মধ্যে সুষম খাদ্য, পুষ্টি এবং পরিপূরক খাবারের ক্ষেত্রে জ্ঞানের স্তরে বিভিন্ন মানদন্ড পরিলক্ষিত হয়। তবে সরকার এবং অন্যান্য সংস্থা আরও বেশি উদ্যোগ নিতে হবে যাতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পর্কে জনগণকে জানানো ও সচেতন করা যায় এবং যার ভিত্তিতে হার্ড ইমিউন সিস্টেম তৈরী ও বিকাশের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ বর্তমান করোনা মহামারীর মতো সংকটের বিরুদ্ধে লড়তে পারে।
এ গবেষণাটির চিফ ইনভেস্টিগেটর ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও এবং কো-ইনভেস্টিগেটর ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার এন্ড টেকনোলজি’র সহযোগী অধ্যাপক. ড. তানভীর আবির এবং ড. কিংসে এগো, সিনিয়র লেকচারার, স্কুল অব হেলথ সায়েন্স, ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়া। রিসার্চ এসোসিয়েট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার এন্ড টেকনোলজির সহকারি অধ্যাপক দেওয়ান মুহাম্মদ নূর-এ ইয়াজদানি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।