পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনা একটি বৈশ্বিক মহামারী। আর এই মহামারীকেই কারামুক্তির ‘সুযোগ’ হিসেবে কাজে লাগাচ্ছেন চাঞ্চল্যকর মামলার আলোচিত কারাবন্দী আসামিরা। ভার্চুয়াল কোর্টে জামিন পাওয়া হাজার হাজার আসামির আড়ালে কারামুক্তির চেষ্টা চালাচ্ছেন বৃহৎ দুর্নীতি, আত্মসাৎ, অর্থ পাচার, অবৈধ সম্পদের মালিক এমনকি হত্যা, ধর্ষণ, মাদক কারবারীসহ ফৌজদারি মামলার দুর্ধর্ষ আসামিরা। এ লক্ষে তারা আশ্রয় নিচ্ছেন নানা কৌশলের। মোটা অংকের অর্থে নিয়োগ দিচ্ছেন প্রভাবশালী আইনজীবীদের। তবে করোনা-সুযোগে আলোচিত কয়েকজন আসামির কারামুক্তির চেষ্টা আটকে দেন হাইকোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, গত ১১ মে থেকে ভার্চুয়াল আদালত চলছে। এ যাবত ২০ হাজার ৯৩৮ আসামিকে জামিন পান এসব আদালতে। যদিও আবেদনের সংখ্যা আরও বেশি-৩৩ হাজার ২৮৭টি। ‘তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ’ এবং হাইকোর্টের জারিকৃত ‘বিশেষ প্রাক্টিস নির্দেশনা’ অনুসারে চলছে ভার্চুয়াল কোর্ট। জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রাজজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, বিশেষ জজ আদালত, সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনাল, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল, জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টগুলোতে চালু রয়েছে ভার্চুয়াল সুবিধা।
আদালত সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ভার্চুয়াল আদালতে এখতিয়ার অনুসারে এখন জামিন লাভে মরিয়া আলোচিত মামলার ভিআইপি আসামিরা। স্বাস্থ্যগত কারণ, উন্নত চিকিৎসা গ্রহণ, দীর্ঘদিন কারাভোগ, দায়েরকৃত মামলার ‘জামিন- যোগ্য ধারা’, কখনো বা আদালতের ‘নিজস্ব ক্ষমতা’র দোহাই দিয়ে তারা জামিনের আবেদন করেন। সেই সঙ্গে অবলম্বন করছেন নানা কৌশল।
মামলার তথ্য গোপন, প্রসিকিউশনের উদাসীনতা, প্রথিতযশা আইনজীবী নিয়োগ, আদালতের ফাইলিং সেকশন ম্যানেজ, সর্ব ক্ষেত্রে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষাসহ নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। আসামিদের সঙ্গে প্রসিকিউশনের কোনো কোনো আইনজীবীর গোপন সমঝোতার অভিযোগও রয়েছে। জামিনের জন্য তৎপর ভিআইপি আসামিদের মধ্যে চার্জশিটভুক্ত বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভুইয়া, জি.কে. শামীম, এনামুল হক এনু, রূপন ভুইয়ার নাম জানা যায়।
এছাড়া ইসমাইল হোসেন সম্রাট, বহিষ্কৃত যুব মহিলা লীগ নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী, মাসুদ মাহমুদ ভূঁইয়া, হাসান মাহমুদ ভূঁইয়া, হারুন রশিদ, শাহাদৎ হোসেন উজ্জ্বল, মোহাম্মদ উল্যাহ খান, অনলাইন ক্যাসিনো গুরু সেলিম প্রধানের কথা জানা যায়। এদের মধ্যে জিকে শামীম মাদক ও অস্ত্রের দুই মামলায় গত মার্চ মাসে গোপনে জামিন নিতে সক্ষম হন। গণমাধ্যমে বিষয়টি চাউর হলে হাইকোর্ট পরে তা বাতিল করেন। তবে নতুন গ্রাউন্ডে তিনিও জামিন লাভে তৎপর রয়েছেন বলে জানা গেছে।
আদালত সূত্র জানায়, অধুনালুপ্ত ফারমার্স ব্যাংক থেকে ১শ’৫৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার মামলার অন্যতম আসামি রাশেদুল হক চিশতী। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করে। এ মামলায় চার্জশিটভুক্ত ৬ আসামির একজন রাশেদুল হক। করোনা-পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে জামিনের আবেদন করেন কারাগারে থাকা আলোচিত মামলার এ আসামি। গত ১৯ মে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ তাকে জামিন দেন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। দুদকের আপিলের প্রেক্ষিতে জামিনাদেশ স্থগিত করেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
তবে আসামিপক্ষ আপিল বিভাগের শরণাপন্ন হয়েছেন বলে জানা গেছে। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করলে তার কারামুক্তিতে কোনো বাধা থাকবে না-বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের সংশ্লিষ্ট আইনজীবী।সফটঅয়্যার জালিয়াতির মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আত্মসাৎ মামলার আলোচিত আসামি মিজানুর রহমান ওরফে দীপু চাকলাদারও কয়েকটি মামলায় জামিন নেন ভার্চ্যুয়াল কোর্ট থেকে। হাইকোর্টে এসে সেটি আটকে যায়।
ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজে পর্দা কেলেঙ্কারি আলোচিত মামলায় গত ১৯ মে হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চে জামিনের চেষ্টা চালান আসামি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও মুন্সি সাজ্জাদ। তাদের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি এ.এম. আমিন উদ্দিন। যদিও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমের বেঞ্চ আবেদনটি নাকচ করে দেন। অনলাইন ক্যাসিনো মামলার আসামি কোরিয়ান নাগরিক ইয়াংসিক লী’র জামিন আবেদনও নাকচ হয়ে যায়।
সূত্রমতে,উদ্ভুত পরিস্থিতি এবং আইনের ফাঁক গলে ভিআইপি আসামিদের জামিন লাভ এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। প্রশাসন এবং প্রসিকিউশনের উদাসীনতায় কঠোর গোপনীয়তায় মিলতে পারে কারামুক্তিও। এ বিষয়ে দুদকের কৌঁসুলি খুরশিদ আলম খান বলেন, আমরা হাইকোর্টে কন্টেস্ট করে জামিন আটকে দিচ্ছি। কিন্তু আসামিদের তো আপিলে যেতে বাধা দিতে পারি না। তবে আসামিরা যাতে আপিল বিভাগেও জামিন পেতে না পারে সেজন্য আমরা কন্টেস্ট করব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।