Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রাণ ফিরেছে সচিবালয়ে

শর্ত সাপেক্ষে অফিস শুরু : মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে বসানো হয়েছে তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ১ জুন, ২০২০, ১২:১১ এএম

করোনাকালে দীর্ঘদিনের ছুটি শেষে ফের কর্মব্যস্ত হয়ে উঠছে সরকারি কর্মকান্ডের নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র সচিবালয়। প্রথম কর্মদিবসে নিজ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আর কর্মচারীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে কাটিয়েছেন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীরা। তবে ঈদের পর প্রথম কর্মদিবস হওয়ায় উপস্থিতি ছিল অনেকটা কম।
সরকারি-বেসরকারি অফিস চালুর ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সুরক্ষার ১৩ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রবেশ মুখে হ্যান্ডস্যানিটাইজার ও তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র বসানো হয়েছে। তবে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে ছিল করোনা আতঙ্ক।
আবার অনেক মন্ত্রণালয়ে তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র বসানো হয়নি। সে মন্ত্রণালয়গুলোর প্রবেশ মুখে হ্যান্ডস্যানিটাইজার দেয়া হচ্ছে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হাতে।

সচিবালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে কর্মরত ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার রাজীব দাস ইনকিলাবকে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্বের নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরাই সচিবালয়ে আসবেন। আপাতত কোনও দর্শনার্থীকে সচিবালয়ে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে দীর্ঘ ৬৬ দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল রোববার থেকে শর্ত সাপেক্ষে খুলছে সচিবালয়। প্রথম দিনেই ফের কর্মচাঞ্চল্য সচিবালয়ে।

গতকাল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, পার্বত্য ও চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ সকল মন্ত্রণালয় খোলা ছিল। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঈদ পরবর্তী পুনর্মিলনীতে অংশ নেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের খোঁজ খবর নেন তিনি। ঈদের ছুটি শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েও ফের কর্মব্যস্ততা দেখা গেছে।

মন্ত্রিপারিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব শফিউল আজিম ইনকিলাবকে বলেন, আমরাতে বন্ধের মাঝেও অফিস করছি। তবে যারা আসেনি তাদের মাঝে এখনো করোনা আতঙ্ক কাটেনি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দীর্ঘ সময় সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী বাসায় অবস্থান করছেন সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা। অনেকেই জানিয়েছেন, বাসায় অবস্থান করলেও তারা কেউ কেউ অনলাইনে দায়িত্ব পালন করছেন।

গত ২৬ এপ্রিল থেকে যেসব মন্ত্রণালয়ে কাজ চলেছে সেগুলো হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা ও সেবা বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু-বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও পাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

সরকারি-বেসরকারি অফিস চালুর ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সুরক্ষার ১৩ নির্দেশনায় বলা হয়েছে-দফতরের বাইরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জীবাণুমুক্তকরণ টানেল স্থাপনের ব্যবস্থা নিতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে। অফিস চালু করার আগে অবশ্যই প্রতিটি অফিস কক্ষ, আঙিনা, রাস্তাঘাট জীবাণুমুক্ত করতে হবে। প্রত্যেক মন্ত্রণালয়/বিভাগের প্রবেশ পথে থার্মাল স্ক্যানার, থার্মোমিটার দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে অফিসে প্রবেশ করাতে হবে।

অফিস পরিবহনগুলো অবশ্যই জীবাণুনাশক দিয়ে শতভাগ জীবাণুমুক্ত করতে হবে। যানবাহনে বসার সময় ন্যূনতম তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং সবাইকে মাস্ক (সার্জিক্যাল মাস্ক অথবা তিন স্তর বিশিষ্ট কাপড়ের মাস্ক, যা নাক ও মুখ ভালোভাবে ঢেকে রাখবে) ব্যবহার করতে হবে। সার্জিক্যাল মাস্ক শুধু একবার ব্যবহার করা যাবে। কাপড়ের মাস্ক সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে আবার ব্যবহার করা যাবে। যাত্রার আগে এবং যাত্রাকালে পথে বার বার হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।

খাওয়ার সময় শারীরিক দূরত্ব (ন্যূনতম তিন ফুট) বজায় রাখতে হবে। প্রতিবার টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে জীবাণুমুক্তকরণ নিশ্চিত করতে হবে। অফিসে কাজ করার সময় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কর্মস্থলে সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে এবং ঘন ঘন সাবান পানি বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধের সাধারণ নির্দেশনাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি নিয়মিত মনে করিয়ে দিতে হবে এবং তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন কিনা তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। ভিজিলেন্স টিমের মাধ্যমে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। দৃশ্যমান একাধিক স্থানে ছবিসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষার নির্দেশনা ঝুলিয়ে রাখতে হবে। কোনও কর্মচারী অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টিনে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।



 

Show all comments
  • শওকত আকবর ১ জুন, ২০২০, ১১:২৯ এএম says : 0
    কঠোর স্বাস্থবিধি মেনে চলার কথা বলা হলে ও তা মানা হচ্ছেনা।আবার কঠোর নিরাপত্তা থাকা সত্যেও করোনাক্রান্ত হয়েছে।এখন শুধু আল্লাহ তুমিই ভরসা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ