Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লিবিয়ায় নিহত লাল চাঁদ এর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম

মাগুরা থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ মে, ২০২০, ১১:১১ এএম

কাজের সন্ধানে লিবিয়ায় গিয়ে মানবপাচারকারী চক্রের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত ও আহতর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম । নিহতদের মধ্যে এক জনের বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামে ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত ব্যাক্তির নাম লাল চাঁদ ইসলাম। সে নারায়ণপুর গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে। আহত ব্যক্তি হলো একই গ্রামের ফুল মিয়ার পুত্র তারিকুল ইসলাম ।

আহত তারিকুলের বোনজামাই মোঃ জিনারুল ইসলাম জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কামাল হাজী নামে এক দালালের মাধ্যমে ৪লক্ষ ৫০হাজার টাকার বিনিময়ে তারা লিবিয়া যায়। তারা দুজনই টাইলস্ মিস্ত্রী। লিবিয়ার ত্রিপলীতে টাইলস্ মিস্ত্রির কাজ পাইয়ে দেবে বলে তাদের নিয়ে যায়।। কিন্তু গত সাতমাসে তাদের লিবিয়ার ত্রিপলীতে পৌছে দিতে পারেনি দালালচক্রটি। তাদেরকে লিবিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মিজ্দাহ-তে একটি ক্যাম্পে আটকে রেখেছিল এবং সেখানেই এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।

ঘটনাস্থলের অবস্থান ত্রিপলী শহর থেকে ১৮০ কি.মি. দক্ষিণে। প্রায় ১৫ দিন পূর্বে বেনগাজী থেকে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে কাজের সন্ধানে তারা যাচ্ছিলেএমন সময় মানবপাচারকারীর তাদের জিম্মি করে।

তারা মোট ৩৮ জনের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য একত্র জড়ো করে। তাদের রাজধানী ত্রিপলীতে নেয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু মিজ্দাহ শহরে নেয়ার পর তাদের ওপর শুরু করে বর্বর নির্যাতন। উদ্দেশ্য দ্রুত মুক্তিপণ আদায়।

জিনারুল আরো বলেন, মুক্তিপনের জন্য তাদেরকে ফোন করা হয় এবং ১০লাখ টাকা করে মুক্তিপন চাওয়া হয়। পরে দেশীয় দালাল কামল হাজীর সাথে যোগাযোগ করা হলে সে লিবিয়ার মানব পাচারকারীর সদস্য আব্দুল্লাহ নামের এক ব্যক্তির সন্ধান দেন এবং তার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন ।পরে ২৪মে ২০২০ তারিখে সে লিবিয়ার আব্দুল্লাহ ক্যাম্পের প্রধান আব্দুল্লাহর সাথে মোবাইলে য়োগাযোগ করে মুক্তি পনের বিষয়টি জানতে চায়। আব্দুল্লাহ মুঠোফেনে জানায় মুক্তিপনের বিষয়ে সে অবগত হয়েছে এবং তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে অত্যাচার-নির্যাতনের চরম পর্যায়ে সূযোগ বুঝে প্রতিরোধ গড়ে তোল জিম্মিরা। তারা মানবপাচার চক্রের মূল হোতা লিবিয়ান ব্যক্তির ওপর চড়াও হলে তার মৃত্যু ঘটে। কিন্তু ঘটনাটি তখনই তাদের আয়ত্বের বাইরে চলে যায়, এবং বড় বিপদ হয়ে দাঁড়ায়। মুহুর্তে খবর ছড়িয়ে যায় ওই নিহত পাচারকারীর স্বজনদের কাছে।

২৮শে মে তারাসহ অন্য দুষ্কৃতিকারীরা আকষ্মিকভাবে জিম্মিদের উপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে যাতে আনুমানিক ২৬ (ছাব্বিশ) জন বাংলাদেশী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এ গোলাগুলির ঘটনায় আরো ১১ বাংলাদেশীর হাতে-পায়ে, বুকে-পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ