পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহামারী করোনায় বিপর্যস্ত অর্থনীতি। দুর্যোগের এই বছরে ক্ষতি কাটিয়ে অর্থনীতি চাঙ্গা রাখতে ও বিনিয়োগ বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। আর এরই ধারাবাহিকতায় অর্থনীতি চাঙ্গা করতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ আরও দিচ্ছে সরকার। এজন্য আগামী বাজেটে কালো টাকা বৈধ করার পরিধি বাড়ানো হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বর্তমানে শিল্প ও ফ্ল্যাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া নির্ধারিত বা প্রযোজ্য হারের সঙ্গে অতিরিক্ত কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করা যায়। এদিকে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন (২০২০-২১) বাজেটে এসবের পাশাপাশি আরও সুযোগ বাড়ছে। জরিমানা ছাড়াই শুধু ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাব থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রশ্ন করবে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আগামী দুই বছরের জন্য এ সুযোগ থাকতে পারে।
ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও আর্থিক খাতের অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এই সুযোগ দেশে নতুন নতুন বিনিয়োগের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবে। বিদেশে বিনিয়োগ বা পাচারের বদলে অপ্রদর্শিত অর্থের মালিকরা দেশে বিনিয়োগে উৎসাহী হবেন। বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক কর্মকর্তা বলেন, করোনার কারণে অর্থনীতির ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকার মনে করছে, এ সুযোগ দেয়া হলে কালো টাকার কিছু অংশ অর্থনীতির মূল স্রোতে আসবে এবং বিনিয়োগ বাড়বে। বেগবান হবে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি।
সূত্র মতে, প্রতিবছর প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। এতে দেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এই অর্থপাচার বন্ধ করতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করছে সরকার। এনবিআরের কর্মকর্তারা বলেন, আয়কর আইনে আয়ের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন না করা হলেও দুদকসহ অন্য আইনে নজরদারির সুযোগ আছে। যে কারণে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায় না।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, মূলত বিনিয়োগ চাঙ্গা করতে কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ অবারিত করতে চায় সরকার। এ জন্য উৎপাদনমুখীসহ অন্য যে কোনো খাতে বিনিয়োগের ঘোষণা দিলে তার আয়ের উৎস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে না। এ ক্ষেত্রে ঘোষণা করা টাকার বিপরীতে শুধু ১০ শতাংশ কর দিতে হবে।
বর্তমানে তিনটি উপায়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ আছে। অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে শিল্প স্থাপনে অপ্রদর্শিত আয় থেকে বিনিয়োগ করা অর্থের ওপর ১০ শতাংশ হারে কর দিলে ওই বিনিয়োগে অর্থের উৎস সম্পর্কে আয়কর বিভাগ প্রশ্ন করবে না। পাঁচ বছরের জন্য এ সুযোগ দিয়েছে সরকার। জানা যায়, এখন পর্যন্ত কেউ সুযোগটি গ্রহণ করেনি।
ফ্ল্যাটে বিনিয়োগে টাকা বৈধ করা যায়। বলা আছে, আয়তনের ওপর এলাকাভেদে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিলে কোনো প্রশ্ন করা হয় না। এই সুযোগটি আগে থেকেই আছে। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত কর নির্ধারণ করায় এর সুফল পাওয়া যায় না। যে কারণে চলতি অর্থবছরে কর হার আগের চেয়ে গড়ে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমানো হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের অহেতুক হয়রানির কারণে সুযোগ পেয়ে কোনো লাভ হয়নি ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায়ীদের মতে, অর্থ পাচার প্রতিরোধ ও বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে কালো টাকা মূল ধারায় আনার প্রস্তাবকে ইতিবাচক। কিন্তু এর বিনিয়োগ নিয়ে আছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। আয়ের উৎস সম্পর্কে রাজস্ব কর্মকর্তারা কোনো প্রশ্ন না করলেও বিনিয়োগ করা অর্থের উৎস দেখাতে না পারলে ব্যবস্থা নিতে পারবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই আশঙ্কার কারণেই আবাসন খাতে গত কয়েক বছর ধরে সুযোগ থাকলেও বিনিয়োগে যাননি কালো টাকার মালিকরা।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, যে কেউ অপ্রদর্শিত আয়ের ঘোষণা দিয়ে যে কোনো অঙ্কের অর্থ সাদা করতে পারবেন। ‘ভলান্টারি ডিসক্লোজড অব ইনকাম’ নামে পরিচিত এই নিয়মটি ২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রবর্তন করা হয়। এ সুযোগ নিতে হলে প্রযোজ্য কর হার ও তার সঙ্গে ১০ শতাংশ জরিমানা দিতে হয়।
সূত্র বলেছে, স্থায়ীভাবে অপ্রদর্শিত বা কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ থাকলেও কেউ এটি গ্রহণ করেনি। এ প্রসঙ্গে এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, উচ্চহারে কর আরোপ করার কারণে এতে তেমন সাড়া মিলছে না। জানা যায়, এখন নতুন করে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ আরও স¤প্রসারিত করতে চায় সরকার। সেজন্য শর্ত শিথিল করে জরিমানা ছাড়াই কর দিয়ে টাকা বৈধ করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে আগামী বাজেটে।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থ বলতে যারা বৈধপথে আয় করেছে; কিন্ত কোনো কারণে কর পরিশোধ করেননি। ওইসব অর্থ বিনিয়োগের পক্ষে আমরা। এটি সুযোগ থাকলে দেশে বিনিয়োগ বাড়বে। অর্থ পাচার কমবে। তবে অবৈধ পথে আয় করা অর্থের বিনিয়োগের পক্ষে আমরা নই বলে উল্লেখ করেন শেখ ফজলে ফাহিম।
আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের সভাপতি আলমগীর সামসুল আলামিন (কাজল) ইনকিলাবকে বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ বর্তমানেও আছে। তবে একটি বিশেষ সংস্থার প্রশ্নের সুযোগ থাকছে বলে যেভাবে আসার কথা সেভাবে আসছে না। দেশের এই ক্রান্তিকালে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আাগামী বাজেটে পাঁচ বছরের জন্য বিনা শর্তে বা বিনা প্রশ্নে এই অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হলে ব্যাপক বিনিয়োগের সুযোগ আসবে। তিনি বলেন, আবাসনের সঙ্গে ২১১টি সাব-সেক্টর আছে। বিনা শর্তে এই সুযোগ পেলে এতে প্রায় ৩৫ লাখ শ্রমিক-কর্মচারীর বেকারত্ব দূর হবে। নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে এবং বেসরকারি বিনিয়োগে গতি ফিরবে।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।