পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনায় বড়সড় ঝুঁকি। এ মুহূর্তে কঠিন পরিস্থিতি চট্টগ্রামে। সবদিকেই নাজুক চিকিৎসা ব্যবস্থা। ‘নেই আর নেই’। ‘হবে- হচ্ছে’। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী বন্দরনগরী চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস চিকিৎসা সুবিধার ঘাটতি এ পর্যন্ত যতদূর জোড়াতালি ও দায়সারাভাবে ‘পূরণ’ হয়েছে তাতে আদৌ কেউ সন্তুষ্ট নন।
চসিক মেয়র, স্বাস্থ্য বিভাগ, বিশেষজ্ঞগণ থেকে শুরু করে চট্টগ্রামের প্রশাসন কিংবা সচেতন নাগরিক মহল হতাশ।
চট্টগ্রামে প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা, মৃত্যুহার, উপসর্গে আক্রান্ত ও মৃত্যুহারে ঊর্ধ্বগতির উদ্বেগজনক চিত্র ফুটে উঠছে। সকাল হলেই চট্টগ্রামবাসীর কমন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে করোনায় কতজন নতুন শনাক্ত হলো, কতজনের মৃত্যু হলো? সবদিক বিবেচনায় স্পষ্ট, করোনা শনাক্তের টেস্ট, চিকিৎসা ব্যবস্থা, রোগীর চাপের অনুপাতে শয্যা সংখ্যা, আইসিইউ সুবিধা ইত্যাদি ন্যুনতম প্রয়োজন, চাহিদা বা শর্তগুলো পরিপূরণে এখনও পেছনের দিকেই হাঁটছে। অথচ ‘বড় ঝুঁকির বড় শহর’ চট্টগ্রাম। তাছাড়া চিকিৎসা সুবিধা বাড়ানোর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নেয়া হয় বিভিন্ন উদ্যোগ। জটিলতায় থমকে আছে।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের তথ্যমতে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজারের কাছাকাছি। চব্বিশ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২২৯ জনসহ আক্রান্ত ২৪২৯ জন। গতকাল একজনসহ মারা গেছেন ৬৮ জন। আর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন প্রায় দুইশ জন।
এ পরিস্থিতিতে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রামে লকডাউন, শাটডাউন, পরিবহন, রেলওয়ে, অফিস, দোকানপাট, ব্যবসা-বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গণহারে খুলে দেয়া হলেই ব্যাপক সামাজিক সংক্রমণের আশঙ্কা করা হচ্ছে। চট্টগ্রামে করোনায় বিপদের কারণগুলো বৃদ্ধিই পাচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে। নগর ও জেলার বেশ কিছু এলাকা এখন হটস্পট। রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। উল্টো চিকিৎসা সুবিধা কমছে। হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা একেবারেই নগন্য। শয্যার তুলনায় রোগী সংখ্যা ৫ গুণেরও বেশি। চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন আক্রান্তরা। আইসিইউ পাওয়া যেন চিন্তাই করা যায় না।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে একটিই আইসিইউ বেডে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্প-ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলম পরিবারের দুই ভাইয়ের অক্সিজেন ভাগাভাগি করে বাঁচার প্রচেষ্টা এবং একজনের করুণ মৃত্যুর গত ২২ মে’র ঘটনাটি চট্টগ্রামের সার্বিক চিকিৎসার নাজুক অবস্থাটাই সবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। এ অবস্থায় চট্টগ্রামে আক্রান্তদের মাঝে মৃত্যুর হারও বাড়ছে। শয্যা বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়। কাজের অগ্রগতি দৃশ্যমান নয়। সঙ্কট ও নাজুকদশায় আশা জাগাতে শুরু করেছে প্লাজমা থেরাপি। প্রথমবার একজন চিকিৎসককে থেরাপি প্রয়োগে আশাবাদী চিকিৎসকেরা। নগর পুলিশের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে প্লাজমা ব্যাংক।
এদিকে উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুহার বেড়েই চলেছে। অথচ সে তুলনায় নমুনা টেস্টের হার বাড়েনি। তিনটি ল্যাবে এখনও নমুনাজট লেগেই আছে। রিপোর্ট পেতে এখন তিন থেকে চার দিন পার হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৪২০টি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী, ৬০ শতাংশ রোগীকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়ার প্রয়োজন। রোগীর সংখ্যা হিসাবে হাসপাতালে দেড় হাজার শয্যা প্রয়োজন। বাস্তবে তা নেই। অবস্থার গুরুতর অবনতি হলেও হাসপাতালে রোগীদের ঠাঁই মিলছে না। হাসপাতালে শয্যা না থাকায় প্রায় ১৭০০ রোগী বাসা-বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সঙ্কট কাটাতে চমেক হাসপাতালে একশ’ শয্যার আলাদা ব্লক তৈরী অনুমতি দেয় মন্ত্রণালয়। প্রস্তুতির জন্য এক সপ্তাহ সময় নিয়েছিলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দ্ইু সপ্তাহ পার হলেও সে ব্লক তৈরী হয়নি, প্রস্তুত হয়নি একশ’ শয্যা। জেনারেল হাসপাতালে আরও ৫০ শয্যা বাড়ানোর কাজও শেষ হয়নি। অনেক আগেই হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়। তবে সেখানে ২৩ জন চিকিৎসক ও ৩০ নার্স নিয়োগ দেয়া হলেও কর্মচারী নিয়োগ না হওয়ায় চিকিৎসা চালু করা যায়নি।
সর্বশেষ বেসরকারি ইমপেরিয়াল হাসপাতাল ও ইউএসটিসিতে বঙ্গবন্ধু হাসপাতাল অধিগ্রহণ করা হয়। এই দুটি হাসপাতালে ৫০টির মতো আইসিইউ এবং সাড়ে তিনশ শয্যা আছে। তবে কবে নাগাদ রোগী ভর্তি শুরু হবে তাও অনিশ্চিত। ফৌজদারহাট বিআইটিআইডির ল্যাব প্রধানসহ দুইজন সংক্রমিত হওয়ায় ল্যাব জীবাণুক্ত করতে তিন দিনের জন্য টেস্ট বন্ধ রাখা হয়েছে। সেখানে জমে থাকা সাড়ে সাতশ নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।