পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেই সকল বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি ফেরেন লাখ লাখ মানুষ। এক সাপ্তাহের ব্যবধানে সংক্রমণ আরো বাড়ছে। সামাজিক ট্রান্সমিশন বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে গেছে। এর মধ্যে জীবিকার তাগিদে ঢাকামুখী ছুটছেন লাখো মানুষ।
সীমিত পর্যায়ে গণপরিবহন, ট্রেন, লঞ্চ খুলে দেয়ার ঘোষণা হলেও এখনো সেগুলো চালু হয়নি। ফলে বিকল্প যানবাহনে বেশি ভাড়া দিয়েই ঢাকায় ফিরছেন অনেকে। ঢাকায় ফেরার পথে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা দূরের কথা অনেকের মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস পর্যন্ত দেখা যায়নি। মূলত করোনাভাইরাসের সামাজিক ট্রান্সমিশন ঠেকাতে লকডাউনের মাধ্যমে যে সামাজিক দূরত্ব রক্ষার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় তা কার্যত ভেঙে পড়েছে।
গণপরিবহন এখনো চালু না হওয়ায় প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, মিনিট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে ঢাকায় আসছেন লোকজন। গতকাল শুক্রবার দেশের সবগুলো ফেরিঘাট ও ঢাকার প্রবেশ মুখে ছিল প্রচন্ড ভিড়। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নৌরুট শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায়, মাওয়া-কাঁঠালবাড়িসহ সবগুলো ঘাটে ছিল মানুষের ঢল। বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ জানায়, শুধু দৌলদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ছোটবড় ১৪টি ফেরির মধ্যে ৭টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। উত্তরাঞ্চল থেকে কর্মস্থলে ফিরতে সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে দেখা যায় হাজার হাজার মানুষের ভিড়। একই চিত্র ছিল ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে। নানান যানবাহনে যাত্রীরা গাদাগাদি করে গন্তব্যে ফিরছেন।
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে ঢাকামুখী হাজার হাজার যাত্রীর দৃশ্য ছিল চোখে দেখার মতো। ঘাট এলাকায় ঢাকামুখী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ছিল প্রচুর। ঘাটে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে পুলিশ তৎপর। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে যাত্রীরা ঠাসাঠাসি করেই ফেরিতে উঠেন। যাত্রীরা বলছেন, করোনার ঝুঁকি সম্পর্কে তারা জানেন। কিন্তু চাকরি বাঁচাতে করোনা ঝুঁকি নিয়ে তারা ঢাকায় যাচ্ছেন। সড়কে গণপরিবহন না থাকায় নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে, বাড়তি ভাড়াও গুণতে হচ্ছে।
শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটেও ফেরি চলাচলে ছিল প্রচন্ড চাপ। ফেরিগুলোতে ব্যক্তিগত পরিবহন, কাঁচামালবাহী ও পণ্যবাহী ট্রাক এবং সাধারণ যাত্রী পারাপার করেছে। বিআইডাব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক ভজন কুমার সাহা জানান, বেলা বাড়ার সাথে সাথে যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে। ঝড় বৃষ্টির কারণে নৌরুটে স্পিডবোট ও লঞ্চ রাখা হয়। এ কারণে ফেরিতে যাত্রীদের চাপ আরো বেড়ে যায়। আটটি ফেরি চলাচল করছে বলে তিনি জানান।
উত্তরাঞ্চল থেকে কর্মস্থলে ফিরতে সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছে। কর্মস্থলে যোগদানের জন্য শত শত গার্মেন্টকর্মী বিভিন্ন যায়গা থেকে স্থানীয় পরিবহন ও পায়ে হেঁটে এসে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দিতে সিরাজগঞ্জে মহাসড়কে অবস্থান করেন। গণপরিবহন না থাকায় ভাড়ায় চালিত প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসে করে তারা কর্মস্থলের পথে রওয়ানা দেন। যানবাহন না পাওয়ায় হেঁটে অনেককে যেতে দেখা যায়। অনেকে যমুনা নদীর চর পাড়ি দিয়ে নৌকায় করে কর্মস্থলে যাচ্ছেন। সিরাজগঞ্জ কড্ডা মোড় ও হাটিকুমরুল হাইওয়েতে সকাল থেকে কর্মস্থলে যেতে যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করেন মানুষ। আবার কেউ কেউ অতিরিক্ত ভাড়ায় ঝুঁকি নিয়েই মোটরসাইকেল ভাড়া করে কর্মস্থলের পথে রওয়ানা দেন। অনেকে নৌকায় করে যমুনা নদী পার হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব রেলস্টেশনের সামনে থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকে গাজীপুরের চন্দ্রা পযন্ত যান। জরুরি পণ্যবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করলেও পুলিশি তৎপরতার কারণে এবং পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন নিষেধ থাকায় অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েন।
এদিকে, মাওয়া ঘাট ছাড়াও মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় ছিল। ফেরি ও ট্রলারে গাদাগাদি করে শত শত যাত্রী পদ্মা পাড়ি দিয়ে শিমুলিয়া ঘাটে নামেন। তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না ফেরি ঘাট আর রিকশা অটোস্ট্যান্ডসহ পুরো শিমুলিয়া ঘাট এলাকায়। যেসব যাত্রী নদী পার হন তাদের বেশিরভাগই ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী। পদ্মা পাড়ি দেয়ার পর শিমুলিয়া ঘাট থেকে অটোরিকশা, মিশুক আর রিকশায় করে সড়কে ভেঙে ভেঙে নিজ নিজ গন্তব্যে ছুটছেন।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ফেরিতে ঢাকাগামী যাত্রীদের ভিড় প্রচন্ড। ঈদের ছুটি শেষে মানুষ কর্মস্থলের পথে রওয়ানা দেয়ায় সড়ক ও নৌ-রুটে যাত্রীর চাপও বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক দূরত্ব না মেনে এভাবে মানুষের ঢল করোনার সামাজিক ট্রান্সমিশন বৃদ্ধি করবে। এটাকে আত্মঘাতি হিসেবেও অভিহিত করেন তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।