Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অনলাইনে পোশাক-প্রসাধনীর বিক্রি বেড়েছে

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ২৩ মে, ২০২০, ৪:১৩ পিএম | আপডেট : ৪:৩৩ পিএম, ২৩ মে, ২০২০

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটি ও লকডাউনের কারণে পহেলা বৈশাখ ও রমজানের শুরুতে ব্যবসা করতে পারেনি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে চলতি মাসের শুরুতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে ঈদকে সামনে রেখে ধীরে ধীরে চালু হতে থাকে অনলাইন মার্কেট প্লেস। করোনার ঝুঁকি এড়াতে ডিজিটাল প্লাটফর্মে কেনাকাটাও করেছেন অনেকে। গত বছরের চেয়ে অর্ডার সংখ্যা কমলেও অল্প সময়েই বিপুল সংখ্যক অর্ডার পেয়ে যান বিক্রেতারা। বিশেষ করে পঞ্চাবি, থ্রিপিছ, বাচ্চাদের জামা-কাপড়, জুতাসহ বিভিন্ন ধরণের প্রশাধনী পণ্যের অর্ডার বেশি পেয়েছেন বলে জানা গেছে। চাপ সামলাতে এবং সামর্থের চেয়ে বেশি অর্ডার না নেয়ার জন্য ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেয়া হয় সদস্যদের। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, সদস্যদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে ঈদের আগে যাদের কাছে পণ্য পৌঁছানো সম্ভব হবে এবং পণ্য স্টকে থাকলে সেক্ষেত্রে অর্ডার নেয়ার জন্য। কারণ ঈদকে সামনে রেখে সকলে পণ্যের অর্ডার দেয়। নির্ধারিত সময়ে পণ্য হাতে পৌঁছাতে না পারলে সেটি ক্রেতার কোন কাজে আসবে না। আবার অনলাইন মার্কেট প্লেসের প্রতি তার আগ্রহ হারাবে। 

অনলাইন বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতি তাদের জন্য একটি বড় সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। কারণ সংক্রমণের ঝুঁকির জন্য মানুষ ভিড় এড়িয়ে চলছেন। গত ১০ মে শপিং মল খুলে দেয়া হলেও রমজান ও ঈদে যেমন ভিড় থাকে তার কাছাকাছিও এবার চোখে পড়েনি। ফলে মানুষ প্রয়োজনীয় কেনাকাটার জন্য অনলাইনকে বেছে নেবে। কিন্তু করোনায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষতি এবং অনেক প্রতিষ্ঠানে বেতন-বোনাসসহ চাকরি নিয়ে শঙ্কা থাকার কারণে এবার মানুষ কেনাকাটাতে তেমন আগ্রহী হয়নি। এরপরও ছেলেদের পঞ্চাবি, মেয়েদের থ্রিপিছ, বাচ্চাদের কাপড়, জুতাসহ বিভিন্ন প্রশাধনী পণ্যের চাহিদা এবার বেশি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। প্রতিষ্ঠিত সাইটের পাশাপাশি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য থেকে শুরু করে প্রসাধনী সামগ্রী, পোশাক বিক্রি হচ্ছে।
আজকের ডিল’র সিইও ফাহিম মাশরুর বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বিক্রি কম। দেশের অনেক এলাকায় আমরা ডেলিভারি দিতে পারছি না। গ্রামগঞ্জে ডেলিভারি বন্ধ রয়েছে। তবে আমাদের কাছে প্রচুর অর্ডার রয়েছে। আর পোশাক আশাকের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। তবে গত বছরের চেয়ে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বিক্রি কমে গেছে।
দারাজের এমডি সৈয়দ মোস্তাহিদল হক বলেন, বর্তমানে বেচাকেনা কিছুটা বাড়ছে। এখন অনেক ক্রেতাই আসছেন। বেশ ভালো রেসপন্স পাওয়া যাচ্ছে। গ্রোসারি বা অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য তো আগে থেকেই বিক্রি হচ্ছিল, সেগুলো এখনও চলছে। জামা-কাপড় বা ফ্যাশন আইটেমেই এখন বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে অন্যান্য ঈদের চেয়ে এবার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেচাকেনা কম।
ঈদ শপিং নিয়ে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে পাঞ্জাবি, ছেলেদের টি-শার্ট ও নারী পুরুষের বিভিন্ন ধরনের পোশাক আইটেম, কসমেটিক্স আইটেম, জুতাসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য এবার বিক্রি হচ্ছে।
আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, সাধারণত অনলাইনে কেনাকাটা করেন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। এবার এই শ্রেণির কাছে টাকা কম। যার কারণে বিক্রিও কম। গত বছরের তুলনায় এবার ৪০-৫০ ভাগ কম বিক্রি হয়েছে। তবে রমজানের মাঝামাঝিতে অনলাইন মার্কেট চালু হওয়ার পরও বেশ ভালো অর্ডার এসেছে।
এদিকে চাহিদার বেশি পণ্য না নেয়ার জন্য ই-ক্যাবের ১২শ’ সদস্যকে নির্দেশনা দিয়েছে সংগঠনটি। ই-ক্যাবের চীফ অপারেটিং অফিসার জাহাঙ্গীর আলম শোভন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সময়মত সঠিক পণ্য ডেলিভারী দিতে সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহবান জানান ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার ও জেনারেল সেক্রেটারী মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল। সকল অনলাইন ব্যবসায়ীদের ঈদ উপলক্ষ্যে ততটা অর্ডার নিতে বলা হয়, যতটা তাদের সক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। ঈদের আগে প্রতিটি অর্ডারের ডেলিভারী নিশ্চিত করার আহবান জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই পরিস্থিতিতে ই-ক্যাবের সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহকে বাড়তি অর্ডার গ্রহণ না করার জন্য অনুরোধ করছি। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান যেন স্টকে থাকা পণ্য এবং ডেলিভারী ক্যাপাসিটির দিকে খেয়াল রেখে পন্যের অর্ডার গ্রহণ করে। অর্ডারকৃত পণ্য মান বজায় রেখে সময়মতো তা গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয়ারও অনুরোধ করছি। আশা করি, ঈদের পণ্যগুলো অবশ্যই ঈদের আগে ক্রেতার বাসায় পৌঁছানো নিশ্চিত করবেন। পন্যের অর্ডারের সময় ক্রেতা যেন ডেলিভারী সময় সম্পর্কে জানতে পারে। রিটার্ন এবং রিফান্ড পলিসি যেন দৃশ্যমান, স্বচ্ছ, ক্রেতা বান্ধব ও ভোক্তা অধিকার আইনের অনুকূলে হয় এ ব্যাপারে সজাগ থাকার আহবান জানানো হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ