Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি

তিন শতাধিক চর-গ্রামের দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দী : শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ

প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা : বৃষ্টি এবং উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট-বড় ১৬টি নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকায় কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৫৫সে.মি ও ধরলার নদীর পানি বিপদ সীমার ৪৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে শনিবার প্রবাহিত হচ্ছিল। ফলে আরো নতুন নতুন গ্রামে পানি উঠেছে। প্লাবিত হওয়ার কারণে শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। পানিবন্দী প্রায় দেড় লাখ মানুষ।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজার রহমান জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ও ধরলায় বিপদসীমার ৪৮সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ৯ উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়নে বন্যার পানি হানা দিয়েছে। গত দু’দিনে নদীর ভাঙনে আরো চার শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়েছে। নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আরো কয়েকটি স্কুল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২২ কি. মিটার বাঁধ।
কুড়িগ্রাম বন্যা কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, সরকারি হিসাবে ৩৩টি ইউনিয়নের ৩২৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ৪১৫ বর্গ কি. মি. এলাকা এখন বন্যার পানিতে ডুবে আছে। নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪হাজার ৩৬২টি পরিবার। নদী ভাঙ্গনের এ সংখ্যা ৪৮ ঘণ্টায় বেড়েছে ৪৩২টি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ৪০হাজার ৬৩৪টি। এ হিসাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা এক লাখ ২৬ হাজার ২৫১জন। যোগাযোগের রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৭৯ কি. মিটার। এর মধ্যে পাকা রাস্তা ১০কি. মি. এবং কাঁচা রাস্তা ১৬৯ কি. মিটার। শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬৫টি। এর মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান ১৩টি এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান ৫২টি। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২২ কি. মিটার এবং ব্রিজ ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১১টি। একই সময়ে ফসল নষ্ট হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৫ হাজার কৃষক।
সিভিল সার্জন ডা. জয়নাল আবেদীন জিল্লুর দাবি করেছেন, বন্যা দুর্গত এলাকায় ৮৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ওর স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় সকল ঔষধ পর্যাপ্ত রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন খারাপ খবর নেই। গত ২৪ঘন্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ২৪জন।
জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন জানান, বন্যা ও ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ১০ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ও ১৯২ মে. টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমও শুরু হয়েছে।



 

Show all comments
  • আবুল হোসেন ১৩ আগস্ট, ২০১৭, ৭:৫৩ পিএম says : 0
    আমার জিবনে এ রকম পানি দেখি নাই সব রাসা ডুবে ঘর বাডি হাজার হাজার বাডি পানির নিছে
    Total Reply(0) Reply
  • ১৫ আগস্ট, ২০১৭, ৮:৩৬ এএম says : 0
    খুব সুন্দর রিপোর্ট হয়েছে.আরো খবর চাই
    Total Reply(0) Reply
  • ARIF ২০ আগস্ট, ২০১৭, ৭:৪০ এএম says : 0
    ফুল বাড়িতে আবারো পানি আসবে আমাদের এই দিকে মানুষ না খেয়ে আছে সব জমি ডুবে আছে খুবই বিপদে আছি আমরা
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ