Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কর্মহীন মৎস জীবিদের ত্রাণের চাল নেতাদের পেটে জেলেদের অভিযোগ

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০২০, ৮:০৮ পিএম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী সিমান্তবর্তী কাজিপুর উপজেলার চর গিরিশ ইউনিয়নের মৎস্যজীবি জেলেদের নামে বরাদ্ধ ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। চর গিরিশ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি-সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের যোগসাজসে এ ত্রানের চাল আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। করোনায় কর্মহীন জেলেদের ত্রানের চাল এখন নেতাদের পেটে।

সোমবার দুপুরে সরেজমিনে জানা যায়, ২০১৪ সালে উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে চরগিরিশ ইউনিয়নে ১৩৪ জন প্রকৃত জেলেকে নিবন্ধিত করা হয়। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের কারনে কর্মহীন জেলেদের জনপ্রতি ৮০ কেজি করে ৬৫ জন জেলের জন্য মার্চ-এপ্রিল মাসের ৫২০০ কেজি বরাদ্ধকৃত চাল খাদ্য গুদাম থেকে উত্তোলন করে চরগিরিশ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব খোরশেদ আলম। তবে জেলেরা চাল উত্তোলনের কথা জানলেও বিতরণের কোন তথ্য জানতেন না। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সরকার করোনা ভাইরাসের কারনে কর্মহীন জেলেদের দুমাসের জন্য জনপ্রতি ৮০ কেজি করে চাল বরাদ্ধ দেয়। নাম মাত্র লোক দেখানো কয়েকজন জেলেকে চাল দেয়া হলেও তা ছিল পরিমানে কম। ২০-২৫জন নিবন্ধিত জেলেদের ত্রান দেয়া হয়নি। বাদ পড়া জেলেরা ইউনিয়ন সচিব ও নেতাদের সাথে ত্রানের জন্য বারবার যোগাযোগ করে কোন সমাধাণ পায়নি। নিবন্ধিত ভুক্তভোগী জেলে হাফিজুর, শাহীন রেজা, জয়নাল আবেদীন,সাদ্দাম হোসেন, রাসেল মিয়াসহ আরো অনেকেই অভিযোগ করে বলেন,আমাদের জেলেদের নামে ত্রাণ সামগ্রী ইউনিয়নের সচিব, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মিল্টন তালুকদার, আব্দুল মালেক বিএসসি, সুবাত মন্ডল ও যুবলীগ নেতা রাসেল মিয়ার যোগসাজশ করে ২০-২৫ জন জেলেদের নামে ত্রাণ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে। আমরা ত্রাণ চাইতে গেলে ভয় ভীতি দেখিয়ে সরিয়ে দেয়। তারা আরো বলেন, নদী থেকে মাছ ধরে বিক্রি করে আমাদের জীবন বাঁচাতে হয়। করোনার মধ্যে ঘরের বাহিরে যেতে পারিনা। সরকার আমাদের নামে ত্রাণ দিয়েছে, সেটাও যদি নেতাদের পেটে যায় তাহলে আমরা খাবো কি?

ইউপি সচিব খোরশেদুল আলম বলেন, সরকারি ভাবে ৬৫ জন জেলেদের সহায়তার জন্য ৫২০০ কেজি চাল বরাদ্ধ আসে।সেগুলো স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মিল্টন তালুকদার ও সাধারন সম্পাদক আব্দুল মালেক বিএসসি, কৃষক লীগ নেতা সুবাত মন্ডল ও রাসেল মিয়াকে বিতরণের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। সেখানে ১৪ জন নিবন্ধিত জেলেকে বাদ দিয়ে ত্রাণ বিতরণ করেন। পরে যাদের তালিকায় নাম নেই তাদের কাছ থেকে ত্রাণগুলো ফেরত নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গুদামে রাখা হয়েছে। পরে ভুক্তভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হবে।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল মালেক বিএসসি অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, কোন অনিয়ম করি নাই। অনেক ধনী ব্যক্তি আছে যারা নিবন্ধিত জেলের নাম দিয়েছে। তাদেরকে বাদ দিয়ে প্রকৃতপক্ষে যারা নদী থেকে মাছ ধরে জীবন চালায় তাদের ত্রাণ দিয়েছি। এই রকম বিতরণ করা যেহেতু ঠিক হয়নি তাই তালিকায় নাম ছাড়াদের কাছ থেকে ত্রাণ ফেরত নিয়ে পরিষদে রাখা হবে। ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল হক মিন্টু মিয়া জানান, চাল বিতরণে আমাকে রাখা হয়নি। ২০-২৫ জন জেলেকে ত্রাণ দেওয়া হয়নি এমন অভিযোগ শুনেছি। বিগত দিনগুলোতে এমন অনিয়ম হয়নি। যারা কার্ডধারী জেলেদের চাল না দিয়ে নিজেরা ভোগ করেছে সেটা ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আতাউর রহমান জানান, কার্ডধারী জেলেদের মাঝে বিতরণের জন্য ৫২০০ কেজি চাল বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। ঐ এলাকা থেকে অভিযোগ এসেছে কার্ডধারীদের মাঝে ত্রাণ না দিয়ে বাহিরের লোকদের দেওয়া হয়েছে। এটি কোন ভাবেই করার নিয়ম নেই। যারা এসব করেছে তারা অন্যায় করেছে। ত্রাণগুলো ফেরত নিয়ে কার্ডধারীদের মাঝে বিতরণ করতে ইউনিয়নের সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।



 

Show all comments
  • মোঃ নুরুল ইসলাম ১৯ মে, ২০২০, ১১:০৪ পিএম says : 0
    দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে চাল চোরের বিচার হওয়া অতিব জরুরী।
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Faruk Hossain ১৯ মে, ২০২০, ১১:৫৮ পিএম says : 0
    Very bad news.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ