Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ডিজিটাল লেনদেন ৭০০ কোটি টাকা

করোনা সঙ্কটকাল

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০২০, ১২:০১ এএম

করোনাভাইরাস শুধু শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা-বাণিজ্য, কেনাকাটা, যোগাযোগেই তথ্য-প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটায়নি। সবকিছুইতেই এনেছে পরিবর্তন, লাগিয়েছে তথ্য-প্রযুক্তির ছোঁয়া। অফিস-আদালত থেকে শুরু করে কেনাকাটা, খাবার-দাবার সবই চলছে অনলাইন মার্কেটকে ব্যবহার করে। এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই আর্থিক লেনদেনও। স্বল্প খরচে দূরে কারো কাছে টাকা পাঠানো বা জরুরী প্রয়োজনে দ্রুততম সময়ে টাকা পাঠানোর জন্যই মোবাইল ব্যাংকিং দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। সরকারি ও বেসরকারিভাবেই এই খাতটিকে বেশ কয়েকবছর ধরে উৎসাহিতও করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, গার্মেন্টসকর্মীসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই লেনদেন। তবে করোনাভাইরাসের এই সঙ্কটকালে ঘর থেকে বের না হয়ে কিংবা কারো সংস্পর্শে না গিয়ে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করা এবং তার বিল পরিশোধ করার জন্যই ডিজিটাল লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান ও অনলাইন ব্যাংকিংকে বেশ কাজে লাগিয়েছে মানুষ।

মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সূত্রে জানা যায়, করোনাকালে ডিজিটাল লেনদেন বেড়ে গেলেও তা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক কম। আগে যেখানে গড়ে দৈনিক এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ কোটি টাকার মার্কেট ছিল। এখন সেটি ৭০০ কোটিতে নেমে এসেছে। তবে বিশেষ দুটি উদ্যোগ এই খাতকে অনেকটা অগ্রসর করে দিয়েছে। এর একটি হচ্ছে ঘরবন্দী মানুষের অনলাইন কেনাকাটা এবং এর বিল মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ব্যবহার করে পরিশোধ করা। আর অন্যটি হচ্ছে- শ্রমিকদের বেতন ও প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে প্রদানের সিদ্ধান্ত।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, করোনার সময়ে অনেক রেটেইলারের দোকান বন্ধ, ব্যবসা-বাণিজ্য চলছে সীমিত পরিসরে, কল-কারখানাও সেভাবে পুরোপুরি সচল হয়নি। এই অবস্থায় লেনদেন অনেক কম হওয়ার কথা। কিন্তু লকডাউনে মানুষের জীবনযাত্রার ভিন্নতার কারণে যতটা কমার কথা ছিল তার চেয়ে কম হয়েছে। কারণ ঘরবন্দী থাকার সময় মানুষ ব্যাংকে না গিয়ে কিংবা ক্যাশ টাকা ব্যবহার না করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনেছে, নানা রকম বিল পরিশোধ করেছে, কেনাকাটা করেছে। ফলে অনেকটা সচল ছিল এই খাত। এছাড়া রমজান মাসে বিগত সময়গুলোতে জাকাতের বড় একটি ফান্ড কেনাকাটা করে পাঠানো হতো। কিন্তু এবার এর পুরোটাই ব্যবহার হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। যাকাত দানকারীরা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে যাদের যাকাত দেয়া প্রয়োজন যাকাত দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী করোনা সঙ্কটকালে ৫০ লাখ অসহায় মানুষকে ঈদ উপহার দিচ্ছেন সেটাও এই মাধ্যমকে ব্যবহার করে। এছাড়া শ্রমিকরা যারা কর্মস্থলে আছেন বা গ্রামে আছেন তাদের সবার বেতনও হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে। ফলে বিরাট একটি অংশ এই মাধ্যমে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছেন।
অন্যান্য সেক্টরের মতো লেনদেনও ডিজিটালি শিফট হওয়াতে বেশ খুশী রাষ্ট্রীয় মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ মিশুক। তিনি বলেন, এখন সবকিছুই তো অনলাইন কেন্দ্রীক হয়ে যাচ্ছে। মানুষের হাতে সময় কম কাজ অনেক তাই। তারা অনলাইন মাধ্যমকে যতটা সম্ভব ব্যবহার করতে চায়। এজন্য কেনাকাটা থেকে শুরু করে পেমেন্ট সবকিছুতেই এখন মানুষ এই মাধ্যমকে পছন্দ করছে। নগদে লেনদেনের বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে তাদের ৩০ শতাংশ মার্কেট শেয়ার রয়েছে। এর বাইরে বিকাশের ৬০ ভাগ এবং রেকেটসহ অন্যদের ১০ ভাগ। তানভীর আহমেদ জানান, সম্প্রতি নতুন একাউন্ট অনেক বেশি হচ্ছে। বিশেষ করে গার্মেন্টেস বেতন দেয়ার জন্য যেসব একাউন্ট খোলা হয়েছে, এবং প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার গ্রহণ করার জন্য যেসব একাউন্ট খোলা হয়েছে তার সিংহ ভাগই নগদের। রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটির বর্তমানে দেড় কোটির মতো কাস্টমার রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিকাশের কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে লেনদেন কিছুটা কমেছে। কারণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস, কল-কারখানা স্বল্প পরিসরে চলছে। তবে নতুন নতুন অনেক মানুষ এই মাধ্যমটিতে অভ্যস্ত হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত ভালো খবর। বর্তমানে তাদের ৪ কোটি ৩০ লাখ একাউন্ট গ্রাহকরা ব্যবহার করছে বলে জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ