পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
মানুষকে শুধুমাত্র ব্যাংকিং সেবায়ই নয়; দুর্যোগের সময় মানুষের সেবায় কিভাবে দাঁড়াতে হয় তাও দেশবাসীকে দেখিয়ে দিয়েছে একটি ব্যাংক। কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস মোকাবিলায় শুধু সচেতনতাই নয় প্রথম থেকেই দুরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে বেসরকারি এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেড। করোনা মহামারী হিসেবে ছড়িয়ে পড়ার আগেই পরিস্থিতি অনুধাবন করে মার্চের শুরুতেই কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্পূর্ণ সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগসহ সকল শাখা ও উপশাখায় পর্যাপ্ত পরিমাণে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হ্যান্ড গ্লাভস সরবরাহ করা হয় এবং পরবর্তীতে পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই)-ও সরবরাহ করা হয়। এর পাশাপাশি জরুরী প্রয়োজনে ব্যাংকে আসা গ্রাহকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যও সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
মার্চের শেষের দিকে জনসাধারণের সাধারণ চিকিৎসা না পাওয়া সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের জন্য ২৯ মার্চ ব্যাংকের দেশ ও বিদেশের স্বনামধন্য ও অভিজ্ঞ ডাক্তারদের সমন্বয়ে একটি ভার্চুয়াল হেলথ ডেস্ক চালু করে এনআরবিসি ব্যাংক। এছাড়া ব্যাংকের পরিচালক, উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার, গ্রাহক এবং সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাধারন চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যাংকটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ১১টি ক্লিনিকের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। হেলথ ডেস্কটি হতে বিশেষজ্ঞ টিম এর তত্ত্বাবধানে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে সর্বাত্মক পরামর্শ প্রদান ও আক্রান্তদের বিশেষ করণীয় সংক্রান্ত তথ্য সহায়তা ছাড়াও স্বাস্থ্য সেবা ও চিকিৎসা বিষয়ক যেকোন পরামর্শ দেয়া হয়। দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষ ১৬৪১৩ ও ০৯৬১২৩১৬৪১৩ নম্বরে ফোন করে বিনা খরচে এই সেবা গ্রহণ করতে পারে। দেশের এই ক্রান্তিকালে মানুষকে সেবা প্রদানই এনআরবিসি ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য।
এনআরবিসি ব্যাংক বিশ্বাস করে বিদ্যমান এই জরুরী অবস্থায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল চিকিৎসা ব্যবস্থা সক্রিয় রাখা অর্থাৎ যারা সম্মুখযোদ্ধা তাদের সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করা। আর তাই করোনাযুদ্ধের অকুতোভয় সম্মুখযোদ্ধা চিকিৎসক ও সেবাকর্মীদের পর্যাপ্ত সুরক্ষার অভাব দেখা দিলে, সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেড করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে দেশব্যাপী কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় নিবেদিত হাসপাতাল গুলোতে নিয়োজিত চিকিৎসক ও সেবাকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) সহ অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহের মহতী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। মূলতঃ যে সকল হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা করা হয় এবং সরকারী হাসপাতালগুলোকে সহায়তা প্রদানের দিকেই বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক সহ ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, পিরোজপুর, কিশোরগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, রাজশাহী ও রংপুর-এর করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় নিবেদিত হাসপাতালসমূহে নিয়োজিত সর্বোমোট ৭ হাজার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল-
১. প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর ডা. এবিএম আবদুল্লাহ
২. কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা
৩. ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা
৪. ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা
৫. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
৬. শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, ঢাকা
৭. স্যার সলিমুল্লাহ্ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল, ঢাকা
৮. হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা
৯. মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা
১০. বনানী ক্লিনিক লিমিটেড, ঢাকা
১১. বাজিতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কিশোরগঞ্জ
১২. নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কিশোরগঞ্জ
১৩. ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কিশোরগঞ্জ
১৪. ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতাল, খানপুর, নারায়নগঞ্জ
১৫. রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর অঞ্চলের করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নিবেদিত হাসপাতাল
১৬. রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল, রাজবাড়ী
১৭. ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ফরিদপুর
১৮. চট্টগ্রামের করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নিবেদিত হাসপাতাল সমূহ
১৯. সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন বিভাগ
২০. কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিলেট
২১. জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিলেট
২২. সিলেটের গোয়াইনঘাট অঞ্চলের করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নিবেদিত হাসপাতাল
২৩. সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ অঞ্চলের করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নিবেদিত হাসপাতাল
২৪. সিলেটের ছাতক অঞ্চলের করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নিবেদিত হাসপাতাল
২৫. বরগুনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, বরগুনা
২৬. শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বরিশাল
২৭. আগৈলঝরা উপজেলা হাসপাতাল, বরিশাল
২৮. গৌরনদী উপজেলা হাসপাতাল, বরিশাল
২৯. বরিশালের ঝালকাঠি অঞ্চলের করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবায় নিবেদিত হাসপাতাল,
৩০. নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পিরোজপুর
৩১. রাজশাহী অঞ্চলের করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় নিবেদিত হাসপাতাল
৩২. রংপুর অঞ্চলের করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় নিবেদিত হাসপাতাল
এছাড়াও বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২০০ ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিরাপত্তার জন্যও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা করেছে এনআরবিসি ব্যাংক।
উপরে উল্লেখিত হাসপাতাল সমূহ ছাড়াও সাংবাদিক, পুলিশ এবং এই দুর্যোগ মুহুর্তে জরুরী কাজে নিয়োজিত সর্বমোট ১০০০ নির্ভীক সম্মুখযোদ্ধার জন্য নিম্নোক্ত প্রতিষ্ঠান সমূহেও ব্যাংকের পক্ষ থেকে পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) প্রদান করা হয়েছে।
১. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)
২. একাত্তর টিভি (সংবাদ সংস্থা )
৩. এটিএন নিউজ (সংবাদ সংস্থা)
৪. ডিবিসি (সংবাদ সংস্থা)
৫. এনটিভি (টেলিভিশন চ্যানেল)
৬. এসএ টিভি (টেলিভিশন চ্যানেল)
৭. বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন
৮. ডিপিডিসি
৯. দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন (বাংলাদেশ) লি. (টাকশাল)
১০. ভৈরব থানা, কিশোরগঞ্জ
১১. ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার পুলিশ সদস্যদের জন্য
১২. অন্যান্য সেবাদানকারী সরকারী প্রতিষ্ঠান
বিতরণের অব্যাহত ধারায় সুরক্ষা সামগ্রী হিসেবে এ পর্যন্ত প্রায় ১৮ হাজার ৬০০ এর অধিক পিপিই, ৮ হাজার ৪০০ এর অধিক সার্জিক্যাল মাস্ক, ৫ হাজার ২০০ এর অধিক কেএন-৯৫ মাস্ক, ৬ হাজার ২৫০ এর অধিক বিশেষ চশমা ও ১০ হাজার ২০০ এর অধিক হেডশিল্ড সরবরাহ করা হয়েছে এবং আসন্ন ভবিষ্যতেও এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেড এই সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি এই দুর্যোগ মুহুর্তে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিতে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-এ ২ টি অত্যাধুনিক ভেন্টিলেটর হস্তান্তর করা হয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে কোভিড-১৯ সম্ভাব্য রোগী শনাক্তকরনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল পরীক্ষণের জন্য রোগীদের স্যাম্পল সংগ্রহ। এই গুরুত্ব অনুধাবন করে রোগীদের স্যাম্পল সংগ্রহ তরান্বিত করতে ঢাকা ও উত্তরবঙ্গে সর্বমোট ৫০ টি স্যাম্পল সংগ্রহ বুথ স্থাপনে সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক। ইতোমধ্যে উত্তরবঙ্গের বেশকিছু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এ স্যাম্পল সংগ্রহ বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও ঢাকার ৫টি উপজেলায় এই ধরনের বুথ স্থাপনের জন্য ঢাকার সিভিল সার্জনের সাথে ব্যাংকের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে এবং খুব শিগগিরই এই বুথ স্থাপনের কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।
এই সকল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি ফান্ড গঠন করেছে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড। সকল কর্মচারীদের এক দিনের বেতন, পরিচালনা পরিষদের নিজস্ব অর্থায়ন, ব্যাংকের সিএসআর ফান্ড থেকে ১ কোটি টাকা এবং কিছু বিত্তবান গ্রাহকের অনুদান দিয়ে এই ফান্ড তৈরি করা হয়েছে। এই ফান্ডের সমুদ্বয় অর্থ জনস্বার্থে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে খরচ করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস ক্রান্তিকালে বিদ্যমান জরুরী অবস্থায় সরকারের পাশাপাশি জনস্বার্থে সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে এ সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জনমানুষের সেবায় চিরপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেড বলে উল্লেখ করেছেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান এস এম তমাল পারভেজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।