Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিভিন্ন চার্জে ছাড় দেয়ার সিদ্ধান্ত

করোনায় বিপর্যস্ত এয়ারলাইনস খাত

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ মে, ২০২০, ১২:০১ এএম

করোনা পরিস্থিতিতে দেউলিয়ার হাত থেকে বাঁচাতে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদনও করেছে বিভিন্ন এয়ারলাইনস। এজন্য দেশী-বিদেশী এয়ারলাইনসগুলোকে বিভিন্ন চার্জে ছাড় দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের ক্ষেত্রে ২০২১ সাল পর্যন্ত অ্যারোনটিক্যাল চার্জ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে অ্যারোনটিক্যাল চার্জ ৫০ শতাংশ ছাড় দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া এয়ারলাইনসগুলোর কাছে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জ না নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশী এয়ারলাইনসগুলোর পাশাপাশি বিদেশী এয়ারলাইনসগুলোকেও কিছু ছাড় দেয়ার সুপারিশ করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ( বেবিচক)।

জানা গেছে, দেশের বিমানবন্দরগুলো ব্যবহার, রাডারের তথ্য ব্যবহার, ওভারফ্লাইংসহ বিভিন্ন ইস্যুতে এয়ারলাইনসগুলো থেকে বিভিন্ন চার্জ আদায় করে বেবিচক। এসব চার্জ বাবদ প্রতি মাসে ৯০ থেকে ১০০ কোটি টাকা আয় হয় বেবিচকের। কিন্তু মার্চ থেকে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকায় বেবিচকের আয় প্রায় শূন্যে পৌঁছে গেছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, এয়ারলাইনসগুলোর চার্জে ছাড় দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়কে ভ্যাটসংক্রান্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। কারণ চার্জের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আদায় করে এনবিআর। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর থেকে এটি কার্যকর হবে।

সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের প্রভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে এয়ারলাইনসগুলোকে দেউলিয়ার হাত থেকে বাঁচাতে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান চেয়ে গত মাসে চিঠি দেয় বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলোর পক্ষে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। চিঠিতে বলা হয়, সব উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টারের যাবতীয় নেভিগেশন, ল্যান্ডিং ও পার্কিং চার্জ পাঁচ বছরের জন্য মওকুফ করা; প্রণোদনাস্বরূপ এভিয়েশন শিল্পকে আগামী ১০ বছরের জন্য বিবিধ আয়কর ও ভ্যাট অব্যাহতি প্রদান; অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক হারে জ্বালানি মূল্য ধার্যকরণ; যন্ত্রাংশ আমদানি পর্যায়ে ‘আগাম কর’ অব্যাহতি, বকেয়া পরিশোধের ক্ষেত্রে লেট ফি অন্যান্য দেশের মতো বার্ষিক ৬-৮ শতাংশ হারে ধার্য করা; বাংলাদেশী এয়ারলাইনস আন্তর্জাতিক রুটে চলাচল করলেও তাদের উড়োজাহাজগুলোর ল্যান্ডিং, পার্কিং ও নেভিগেশন চার্জ অভ্যন্তরীণ রুটের হারে ধার্য করা।

এর আগে গত মার্চে করোনাভাইরাসের প্রভাবে বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতের ঝুঁকি নিরসনের কর্মপন্থা নিরূপণের জন্য জরুরি সাধারণ সভা করে এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এওএবি)। সভায় এওএবি সদস্যরা বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করায় এয়ারলাইনস তথা এভিয়েশন খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক স্বনামধন্য এয়ারলাইনস দেউলিয়া ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে। এ খাত সুরক্ষা দেয়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশ সরাসরি আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেছে।

পরবর্তী সময়ে সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেয় এওএবি। প্রস্তাবে এওএবি জানায়, সংকটকালে সিভিল এভিয়েশন চার্জ, যন্ত্রাংশ আমদানিতে অগ্রিম কর ও জ্বালানির ওপর আরোপিত কর বাতিল করা প্রয়োজন। পাশাপাশি অন্তত দুই প্রান্তিকে ব্যাংক পাওনা সুদবিহীনভাবে ডেফার্ড পেমেন্টের ব্যবস্থা করা এবং দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে আসন্ন বাজেট প্রস্তাবনায় বিশদ দাবি তুলে ধরার কথা বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ