Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢামেকে প্লাজমা সংগ্রহ শুরু

করোনা ইউনিটে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ১০

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০২০, ১২:০২ এএম

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্লাজমা সংগ্রহ শুরু করা হয়েছে। তিনজন করোনাজয়ী চিকিৎসকের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে এই প্লাজমা। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় পরীক্ষামূলকভাবে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগের জন্য সেরে ওঠা রোগীদের কাছ থেকে সিরাম সংগ্রহ করা হচ্ছে।

গতকাল শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় প্লাজমা সংগ্রহের উদ্বোধন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন। অন্যদিকে ঢামেকের করোনা ইউনিটে গতকাল শনিবার ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজন মহিলা ও একজন পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। বাকী ৮ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। করোনা জয়ী চিকিৎসরা হলেন-সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের ডা. দিলদার হোসেন বাদল ও মিটফোর্ড হাসপাতালের ডা. রওনক জামিল পিয়াস ও কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আতিয়ার রহমান। এই তিন চিকিৎসকের দেহ থেকে বিশেষ মেশিনের মাধ্যমে নেয়া হয় এই প্লাজমা।

ঢামেকের হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক এবং প্লাজমা থেরাপির জন্য গঠিত কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ খান বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে সংগ্রহ করা এই প্লাজমা আগামী সপ্তাহে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রয়োগ করা যাবে। এ সপ্তাহে আরও প্লাজমা সংগ্রহ করা হবে। সংগ্রহ করা প্লাজমায় অ্যান্টিবডি পরিমাপ করা হবে। এ চিকিৎসা প্রয়োগের অনুমোদনের প্রক্রিয়াও এই সময়ের মধ্যে শেষ করা হবে।

তিনি বলেন, যারা প্লাজমা থেরাপি দেবেন তাদের প্রশিক্ষণ, তথ্যসংগ্রহ, প্লাজমা দেয়ার আগে কিছু পরীক্ষাও করতে হয়। পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ইতোমধ্যে স্পেন থেকে চলে এসেছে। টেস্ট করতে যে পরীক্ষাগুলো করা হয় সেটা অনেক ব্যয়বহুল। অনেকগুলো স্যাম্পল কালেক্ট করার পর একসঙ্গে এই পরীক্ষা করা হবে। নইলে কিটগুলো নষ্ট হবে। আর পরীক্ষাটা যেহেতু আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী করতে হবে, সেজন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে শুরু করছি।

অধ্যাপক খান বলেন, এই কাজ এগিয়ে নিতে এখন তাদের সামনে দুটো চ্যালেঞ্জ- একটি দাতা সংগ্রহ করা, অন্যটি অর্থের ব্যবস্থা করা। একজনের কাছ থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করতে খরচ হয় ১২ হাজার টাকা। এছাড়া পরীক্ষায়ও আরও কিছু টাকা খরচ হয়। ভবিষ্যতে আমরা যখন এটার পরিসর বাড়াব, তখন পরীক্ষার জন্য আরও কিট লাগবে। সেজন্য ফান্ড দরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে সরকারি ব্যাপার কিছুটা সময় দরকার।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম প্লাজমা দিয়েছেন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিডনি রোগ বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. দিলদার হোসেন বাদল। তিনি বলেন, এই চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে উন্নত বিশ্বে ট্রায়াল হয়েছে। বাংলাদেশে আমিও প্লাজমা থেরাপির অংশ হতে চাই। এ কারণেই প্লাজমা দিলাম।

চিকিৎসকরা বলছেন, কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এ ভাইরাস মোকাবেলা করে টিকে থাকতে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এই অ্যান্টিবডি করোনাভাইরাসকে আক্রমণ করে। সময়ের সাথে সাথে আক্রান্ত ব্যক্তির প্লাজমায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। ওই অ্যান্টিবডিই অসুস্থদের সারিয়ে তোলার জন্য ব্যবহার হবে। বাংলাদেশেও বিষয়টির সম্ভাব্যতা দেখতে এপ্রিলের শুরুতে আগ্রহের কথা জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজের হেমাটোলজির অধ্যাপক ডা. এম এ খান। ১৯ এপ্রিল অধ্যাপক ডা. এম এ খানকে সভাপতি করে ৪ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মাজহারুল হক তপন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সাইফ উল­াহ মুন্সী সদস্য হিসেবে আছেন ওই কমিটিতে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ