Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ম্যানুয়াল কার্যক্রম ভার্চুয়াল কোর্টে

করোনা ঝুঁকিতে ২০ হাজার আদালত সহায়ক কর্মচারী

সাঈদ আহমেদ | প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০২০, ১২:০২ এএম

সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকল্পে ‘ভার্চুয়াল কোর্ট’ চালু হয়েছে। কিন্তু কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম চলছে ম্যানুয়ালি। প্রবল করোনা ঝুঁকিতে এসব কাজ সম্পাদন করছেন আদালত-সহায়ক প্রায় ২০ হাজার কর্মচারী। মামলার রেকর্ড সংরক্ষণ, বিচারকের ডিক্টেশন নেয়া, রায় টাইপ, কারেকশন, মামলার নথিপত্র আদান-প্রদান, ডেচপাসে চিঠিপত্র
ইস্যু ও গ্রহণসহ বিচারিক কার্যক্রমের প্রতিটি পর্যায়ে রয়েছে তাদের সম্পৃক্ততা। যা সশরীরে হাজির থেকে সম্পাদন করতে হচ্ছে ম্যানুয়ালি।

আদালত সহায়ক কর্মচারীরা জানান, মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে তাদের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা তামিল করছেন তারা। সাধারণ ছুটি চললেও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুসারে আদালত কর্মচারীদের কর্মস্থলের বাইরে থাকার সুযোগ নেই। সিজেএম কোর্টে জামিন নামঞ্জুর হলে মক্কেল আপিলে যান। প্রয়োজন হয় আদেশের নকল। তাই খোলা রাখতে হয় নকলখানা। এখানে ভিড় লেগেই থাকে। আরেক বাস্তবতা হচ্ছে, আদালত-কর্মচারীদের ৯৫ ভাগেরই কোনো কম্পিউটার জ্ঞান নেই। কোর্ট ভার্চুয়াল হলেও তাদের কাজ করতে হয় ম্যানুয়ালি।
মুন্সিগঞ্জ আদালতের একজন বেঞ্চ সহকারী নাম প্রকাশ না করে জানান, তিনি দায়িত্ব পালন করছেন ভার্চুয়াল কোর্টে। স্বল্প বেতনের কর্মচারী হওয়ায় সদরে বসবাস করার সামর্থ তার নেই। নারায়ণগঞ্জ থেকে নিত্য যাতায়াত করতে হয় অটো, পাঠাওয়ে মোটরসাইকেলসহ নিজস্ব ব্যবস্থায়। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি মারাত্মক। নিম্ন আদালতের

কর্মচারীদের কর্মক্ষেত্রের কাছাকাছি সরকারি কোনো বাস-ব্যবস্থাা নেই। তার মতো অনেকেই ৩০-৪০ কি.মি. দূরে নিজ বাড়ি কিংবা দূরের কম ভাড়ার বাসায় থাকেন। ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, সি.এম.এম কোর্ট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট ও অন্যান্য আদালতে কর্মরত কর্মচারীরা অনেকেই ঢাকার মিরপুর, উত্তরা, ডেমরা, কেরানীগঞ্জ, দোহার, নবাবগঞ্জ এমনকি নারায়ণগঞ্জ থেকেও আসা-যাওয়া করেন। আদালত কর্তৃপক্ষ তাদের কেনো সুরক্ষা সরঞ্জাম দেয়নি। ‘বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন’র সভাপতি শাহ মো. মামুন বলেন, ময়মনসিংহ জেলা আদালতে আমাদের একজন অফিস সহকারী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আদালত ভার্চুয়াল হওয়াতে হয়তো বিচারক, আইনজীবী এবং বিচারপ্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। কিন্তু আমাদের নিরাপত্তা কতটা নিশ্চিত হয়েছে-প্রশ্ন সাপেক্ষ। মামলার সমস্ত নথি থাকে আমাদের জিম্মায়। রেকর্ডরুম থেকে নথি খুঁজে বের করতে হয়। নথি জজের কাছে পৌঁছাতে হয়।

আইনজীবী, তাদের সহকারী কিংবা তদবিরকারকদের সঙ্গে কথা বলতে হয়। রায়ের ডিক্টেশন নিতে হয়। ম্যাসেজ কনভে করতে হয়। রায় টাইপ করতে হয়। এসব কাজে অধিকাংশ সময়ই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হয় না। অথচ আমাদের কোনো প্রটেকটিভ ইকুপইপমেন্ট নেই। নেই কোনো ঝুঁকি ভাতা কিংবা প্রণোদনা। আমাদের ভালো-মন্দ দেখার জন্য আইনমন্ত্রণালয় মার্চের দিকে একটি ‘মনিটরিং সেল’ খুলেছিল। প্রথম দিকে এই সেল আমাদের কিছুটা খোঁজ-খবর রাখতো। এখন কোনো কার্যক্রম দেখি না। এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আমরা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সাধ্যমতো সহযোগিতা করেছি। অথচ আমাদের অনেক কর্মচারীই আর্থিক টানাপড়নে আছেন। তাদের জন্য ইতোমধ্যেই আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রণোদনা চাওয়া হয়েছে। সরকার আমাদের বিষয়টি সুবিবেচনা করবেন-এ প্রত্যাশায় আছি।



 

Show all comments
  • Md.Golam Nobi ২১ মে, ২০২০, ১১:০৪ পিএম says : 0
    সহমত
    Total Reply(0) Reply
  • sahidul islam ২২ মে, ২০২০, ২:৫৫ পিএম says : 0
    সহমত
    Total Reply(0) Reply
  • shalim court ২২ মে, ২০২০, ৩:১৭ পিএম says : 0
    আমি আদালতে কর্মরত কর্মচারি। আমাদের দুঃখের /কষ্টের কথাগুলো কখন কর্তৃপক্ষের নিকট পৌছাতে পারি না। কারন কর্মচারিরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে না। তার পর আমরা আদালতে কর্মরত হলেও বিচার বিভাগের কর্মচারি হতে পারিনি। আমরা জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের কর্মচারি। এই জন্য কষ্টগুলো শুনার কেও নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • shalim court ২২ মে, ২০২০, ৩:১৮ পিএম says : 0
    আমি আদালতে কর্মরত কর্মচারি। আমাদের দুঃখের /কষ্টের কথাগুলো কখন কর্তৃপক্ষের নিকট পৌছাতে পারি না। কারন কর্মচারিরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে না। তার পর আমরা আদালতে কর্মরত হলেও বিচার বিভাগের কর্মচারি হতে পারিনি। আমরা জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের কর্মচারি। এই জন্য কষ্টগুলো শুনার কেও নেই।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ