পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রুই কাতলা মৃগেলের নেই আনাগোনা। ওরা এখন ভেসে উঠবে না। ডিম ছাড়ার জন্যও প্রস্তুত নয় মা-মাছেরা। অপার মহিমাময় প্রকৃতির খেয়াল-বিধি। এশিয়ায় মিঠাপানির রুই কাতলা মৃগেল কালিবাউশ (কার্প) প্রভৃতি বড় জাতের মাছের জোয়ার-ভাটা নির্ভর বৃহৎ প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র ‘মাছের ব্যাংক’ ও ‘অর্থনৈতিক নদী’ খ্যাত হালদায় মা-মাছের ডিম ছাড়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞগণ জানান, এর পেছনে প্রধান দুই কারণই প্রাকৃতিক। প্রথমত. পাহাড়ি খরস্রোতা হালদা নদীর ছোট অববাহিকায় অর্থাৎ উত্তর চট্টগ্রামে এবং ক্রমশ উজানের দিকে পার্বত্য খাগড়াছড়ি মানিকছড়ির দিকে তুমুল বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টিপাত এবার তেমন হয়নি। বিক্ষিপ্ত হালকা, মাঝারি বৃষ্টি হয়। তবে রুই কাতলার প্রজনন পরিবেশের উপযোগী পর্যাপ্ত বজ্রবৃষ্টি হয়নি। সার্বিক খরাদশায় পড়েছে হালদা।
এতে করে নদীটির প্রায় একশ’ কিলোমিটার মূল প্রজননক্ষেত্রের গতিপথে, ঘূর্ণাবর্তগুলোতে ঘোলা স্রোত আসেনি। দলে দলে ডিম ছাড়তে মা-মাছের মধ্যে স্বভাবসুলভ এক ধরনের ছোটাছুটি অস্থিরতা তৈরি হয় হয় বজ্রবৃষ্টি, ঘোলাস্রোতে নতুন পানির জাদুকরি ছোঁয়ায়। তাও এখন পর্যন্ত পায়নি।
এরফলে পরপর তিনটি ‘জো’ ডিমশূন্য অবস্থায় অতিবাহিত হয়েছে। সর্বশেষ ডিম ছাড়ার পূর্ণিমা ‘জো’ ৩ থেকে ৯ মে পর্যন্ত অতিবাহিত হয়ে গেছে। আর নদীবক্ষে নৌকা ও জাল দিয়ে ডিম সংগ্রহ, রেণু ও পোনা ফোটানো, নার্সারি কুয়ায় সংরক্ষণ, ক্রয়-বিক্রয় ধাপে ধাপে ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় বিশেষ পারদর্শী হাজারো জেলে দীর্ঘদিন হালদাকুলে শুধুই অপেক্ষায় আছেন কখন ডিম ছাড়বে মা-রুই কাতলারা।
দ্বিতীয়ত. বঙ্গোপসাগরে গতকাল ঘনীভূত হয়েছে একটি গভীর নিম্নচাপ। এটি শিগগিরই শক্তি বৃদ্ধি করে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। সমুদ্রে ঘূর্ণিঝড়-নিম্নচাপের মতো দুর্যোগের অবস্থা তৈরি হলে হালদায় মা-মাছেরা ডিম ছাড়ে না। অতীতেও তাই দেখা গেছে। এ অবস্থায় পেটভর্তি ডিম নিয়েই রুই-কাতলারা ঠায় অপেক্ষায় বসে আছে নদীর তলদেশে।
এদিকে ইতোমধ্যে সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্ত চোরা শিকারি চক্র ঢাউশ সাইজের রুই-কাতলা মা-মাছগুলো শিকারের জন্য বিভিন্ন স্থানে ওঁৎ পেতে আছে। ওরা সুযোগের অপেক্ষা করছে। তবে প্রশাসনও এ ব্যাপারে সার্বক্ষণিক সতর্ক নজরদারি বজায় রেখেছে যাতে কোন চোরাই শিকারি মা-মাছের ক্ষতি করতে না পারে। স¤প্রতি হালদায় ৫২ কেজি ওজনের বিরল প্রজাতির নিরীহ ডলফিন কেটে চর্বি তুলে নিয়ে বীভৎস কায়দায় হত্যা করে ওই চক্রটি। একটি মা-মাছও মারা যায় ড্রেজারের আঘাতে। উভয় ঘটনায় হালদায় মাছসহ জীববৈচিত্র্যের নিরাপদ পরিবেশ প্রশ্নে বিশেষত করোনাকালেও মানুষের নৃশংসতা, প্রকৃতি-বিনাশী আচরণ নিয়ে নাগরিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের হালদা নদী গবেষণাগারের সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কীবরিয়া গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, পরপর তিনটি ‘জো’ থাকলেও প্রবল বজ্রবৃষ্টি ও উজানের ঘোলাস্রোত এখনো আসেনি। তাই হালদায় মা-মাছের ডিম ছাড়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়নি। নদীর বুকে ভেসে উঠে দলে দলে ডিম ছাড়ার প্রক্রিয়াটা আবহাওয়া-প্রকৃতি নির্ভর। আগামী ‘জো’ শুরু হচ্ছে আগামীকাল সোমবার থেকে। তবে বঙ্গোপসাগরে এ মুহূর্তে একটি গভীর নিম্নচাপ থাকায় এবং সেটি যদি ঘনীভূত হয়ে আসছে ‘জো’র কাছাকাছি সময়েও গড়ায় তাহলেও কিন্তু হালদায় রুই-কাতলা মা-মাছ ডিম ছাড়বে না। তবে জুন মাস পর্যন্ত মোট ৬টি ‘জো’র মধ্যে আরও ২ বা একটি ‘জো’ বাকি থাকবে। চট্টগ্রাম অঞ্চলসহ সারাদেশের মৎস্যচাষীরা হালদার উন্নত, দ্রুত বর্ধনশীল রুই-কাতলা-মৃেেগল মা-মাছের মৌলিক জাতের ও অর্থকরী মৎস্যবীজ সংগ্রহের জন্য উদগ্রীব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।