Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সচল শুধু কৃষি অর্থনীতির চাকা

করোনায় সবকিছু প্রায় অচল

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০২০, ১২:০১ এএম

ভয়াবহ ধাক্কা দিলো টানা দু’মাস করোনায়। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলেও সার্বিক অর্থনীতিতে বিরাট নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এ ধাক্কা আরো ক’দিন অব্যাহত থাকবে তা বলা মুশকিল। করোনায় শিল্প, কলকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য অর্থনীতির প্রায় সব সেক্টরেই অচলাবস্থা বিরাজ করছে। শুধু কৃষি সেক্টর দুর্বল করতে পারেনি। কৃষিনির্ভর অর্থনীতির চাকা পুরোমাত্রায় সচল রয়েছে। করোনার ভয়কে জয় করে ব্যক্তিক দুরত্ব বজায় রেখে কর্মবীর কৃষক কৃষি অর্থনীতির ভিত মজবুত করতে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। গ্রামীণ অর্থনীতি মূলতঃ কৃষিনির্ভর। এটি অচল হলে মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি হতো। গত ক’দিন দক্ষিণ-পশ্চিমের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ, কৃষক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক, শ্রমিক ও কর্মচারির সাথে কথা বলে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ ড. আখতারুজ্জামান জানালেন, যশোর, খুলনা, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমের দশ জেলায় ভোর থেকে রাতঅবধি মাঠে মাঠে কৃষক সমানতালে কাজ করার দৃশ্য চোখে পড়ে। এ অঞ্চলের মোট আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ১৩ লাখ ১৪ হাজার ৬৫ হেক্টর। ভূমিহীন, প্রান্তিক, ক্ষুদ্র, মধ্যম ও বড় চাষী সংখ্যা প্রায় ২৭ লাখ। অঞ্চলটি খাদ্যে উদ্বৃত্ত। সবজি সারাদেশের মোট চাহিদার ৭০ ভাগ যোগান দিয়ে থাকে। এক কথায়, কৃষি সেক্টর দক্ষিণ-পশ্চিমে বেশ সমৃদ্ধ। করোনাভাইরাসের থাবায় এটিতে কোন অসুবিধা হয়নি।
মেহেরপুরের গাংনীর কৃষক আব্দুস সালাম, খুলনার ডুমুরিয়ার আব্দুর রহিম, সাতক্ষীরার কলারোয়ার ইসলামপুরের আব্দুস সাত্তার, যশোরের শার্শা উপজেলার শালকোনা গ্রামের জসিম উদ্দীন ও মো. আলমসহ মাঠে কর্মরত বেশ ক’জন কৃষক জানালেন, আমরা দুর্দান্ত গতিতে কৃষি উৎপাদন করছি। এখন ধান কাটা শেষ। চলছে সবজি, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ, পাট বপন ও আউশের বীজতলা তৈরিসহ বিভিন্ন কৃষি কাজ। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাগ্রো প্রোডাক্ট প্রসেসিং টেকনোলজি ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস প্রসঙ্গক্রমে বললেন, কৃষিই হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি। করোনার কোন প্রভাব কৃষিতে পড়েনি। বরং মাঠে মাঠে কৃষকের কর্মব্যস্ততা বেড়েছে। করোনায় হাট-বাজার, দোকান-পাটে বেচাকেনা কমে গেছে এবং সাদা সোনা চিংড়ি, মাছের রেণু পোনা, রজনীগন্ধা ও শিল্প কলকারখানায় অচলাবস্থা।
যশোর ঘোপ এলাকার ব্যবসায়ী আশিকুর রহমান কবীর বললেন, করোনায় ব্যবসা-বাণিজ্য লাটে ওঠার উপক্রম। লোকসানে লোকসানে ব্যবসায়িরা জর্জরিত, জানালেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সর্ববৃহৎ পোল্ট্রি ফার্ম আফিল এগ্রো লিমিটেডের পরিচালক মাহাবুব আলম লাবলু। শিল্পশহর নওয়াপাড়ার এক সিমেন্ট কারখানার কর্মকর্তা বললেন, উৎপাদন করে লাভ কি, সরবরাহ করতে পারছি না। প্রায় সবার একই কথা, করোনা অপুরণীয় ক্ষতি করলো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ