Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ক্রেতার জন্য দিনভর অপেক্ষা

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ঢাকার অনেক মার্কেট রমজানে পাঞ্জাবী-টুপির কদর নেই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০২০, ১২:০৩ এএম

করোনার মধ্যেই রাজধানীর বিপণিবিতান গুলোর কয়েকটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে ১০ মে থেকে খুলেছে। খোলার চতুর্থদিন গতকাল অতিবাহিত হলেও বেচাকেনা একেবারেই কম। মহল্লা ও অলিগলির পাশে ছোট ছোট মার্কেট বিপনিবিতানগুলোতে কিছু বেচাকেনা হলেও বড় মার্কেটগুলোয় ক্রেতা না থাকায় প্রতিদিনের দোকান খরচও তুলতে পারছেন না অনেক ব্যবসায়ী। এমনকি ঈদুল ফিতরের আগে রমজান মাসে টুপি-পাঞ্জাবীর চাহিদা সর্বোচ্চ। এবার রমজানে পাঞ্জাবী-টুপির বাজারও মন্দা।

কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে অল্প পরিসরে ১০ মে থেকে মার্কেট খুলেছি। মার্কেট খোলার চতুর্থদিন চললেও বেচাকেনা জমে ওঠেনি। মার্কেটে দর্শনার্থী এলেও ক্রেতা নেই বললেই চলে। সারাদিন ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছি; দিন শেষে বেচাকেনা হতাশ করছে আমাদের। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা মার্কেটমুখী হচ্ছেন না। এভাবে চললে মার্কেট বন্ধ করে দিতে হবে।

শনিরআখড়ার আরএসের এক ব্যবসায়ী জানান, প্রতিবছর ১৫ রোজার পর দোকানে ক্রেতা চাহিদা মেটাতে অতিরিক্ত কর্মচারী নিয়োগ দিতে হয়। এই সময়ে দোকানের ৮০ শতাংশ কাপড় বিক্রি হয়ে যেত। এ বছর দিনে দু-তিন পিস করে কাপড় বিক্রি হচ্ছে। এতে দোকানের খরচটাও উঠছে না। আমাদের ব্যবসা ঈদনির্ভর। ঈদে ব্যবসা করে সারাবছরের ডাল সিজনগুলো ভর্তুকি দেই। তবে এ বছর কী করবো জানি না
একাধিক ব্যবসায়ী জানান, করোনার কারণে এবার প্রথাগত মার্কেটের বাইরে বিকল্প অনলাইন প্লাটফর্মে ঈদের পণ্য পাঞ্জাবী, টুপি আতর ও শাড়ি-থ্রি-পিচ বিক্রির তোড়জোড় চলছে। ফেসবুকে পণ্যে সম্পর্কে প্রচার করে ক্রেতার কাছে পণ্য পৌঁছে দিচ্ছেন। অনলাইন প্লাটফর্ম এখন বড় বাজার হিসাবে দেখা যাচ্ছে। ঘরে বসে ক্রেতা পণ্যের চাহিদা পাঠাচ্ছেন আর ঘরে বসে সেই পণ্য পাচ্ছেন ক্রেতা। যদিও ক্রেতার এতে দেখেশুনে ১০টা দেখে একটা পছন্দ করার সুযোগ পাচ্ছেন না। তবুও এটাকে সাময়িক ভাবে মেনে নিচ্ছেন।

রাজধানীর একাধিক মার্কেট ঘুরে দেখা গেল আর সপ্তাহ দুয়েক পরই ঈদ কিন্তু রাজধানীর বাজারে ঈদেও তোড়জোড় নেই। করোনা শঙ্কার মধ্যে গত রবিবার সীমিত পরিসরে মার্কেট খোলে রাজধানীর সবচেয়ে বড় বিপণিবিতান বসুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্স, যমুনা ফিউচার পার্ক, নিউমার্কেট, বায়তুল মোকাররম ও চন্দ্রিমা মার্কেটসহ কয়েকশ মার্কেট বন্ধ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিবছর রাজধানীর সব মার্কেটেই ঈদের পাঞ্জাবী বিক্রি হয়। তরুণ প্রজন্মের কাছে ঈদে বেশি জনপ্রিয় নানা ধরনের পাঞ্জাবী। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেট, চকবাজার, কাঁটাবন মসজিদ ও কাকরাইল মসজিদ এলাকা টুপির বড় বাজার। এসব জায়গায় পাইকারি ও খুচরা বাজারে টুপি বিক্রি হয়। জালি, গোল, আড়ি, এসি, সাতে এবং চায়নাসহ বিভিন্ন ধরনের টুপি বাজারে বিক্রি হয়। রমজান মাস আসলেই টুপি কেনার হিড়িক পড়ে। কিন্তু এবার সেটাও নেই।

এলিফ্যান্ট রোডের সানরাইজ প্লাজা বন্ধ
করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করায় রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের সানরাইজ প্লাজা বন্ধ করে দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। গতকাল বুধবার এলিফ্যান্ট রোডের মার্কেটটি বন্ধ করে দেয়া হয়।
রমনা বিভাগের এডিসি এম আজিমুল হক জানান, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা না থাকায় সানরাইজ মার্কেট বন্ধ করা হয়েছে। গত দু’দিন মার্কেট পরিদর্শনে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ এবং স্প্রে টানেল বসানোর জন্য অনুরোধ করা হয়। মার্কেট কর্তৃপক্ষ কথা দিয়েছিলেন যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করবেন এবং স্প্রে টানেল বসাবেন। কিন্তু বুধবার ওই মার্কেট পরিদর্শনে গেলে সেখানে পূর্বের অবস্থা দেখা যায়। তাই করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে জননিরাপত্তায় সানরাইজ প্লাজা বন্ধ করা হয়।

তিনি আরো বলেন, মার্কেট কর্তৃপক্ষ বা ব্যবসায়ীরা স্প্রে টানেল স্থাপন এবং সরকারের নির্দেশনা অনুসারে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করলে পুনরায় দোকান খুলতে পারবেন। উল্লেখ্য, করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সাধারণ ছুটিতেও ঈদকে সামনে রেখে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণসহ বেশ কিছু শর্তে সরকার গত ১০ মে থেকে বিপণীবিতান খোলার অনুমতি দিয়েছে।



 

Show all comments
  • Syed Wasif Ali ১৪ মে, ২০২০, ১:৩৯ এএম says : 0
    সরকার উচ্চ পর্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ও বেসরকারী পর্যায়ে প্রতিটি জেলায় ইতিপূর্বে প্রতিদিন জীবাণু নাশক ছিটাছিলেন , কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে গত কিছুদিন ধরে আমরা মিডিয়াতে এই ভাইরাস জীবাণুমুক্ত কার্যক্রম ঠিক মত পালন করা হচ্ছে , সেটা চোখে পড়ছে না । এই জীবাণুমুক্ত করন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকলে , করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সম্ভব হবে না, এবং অর্থনৈতির চাকা ও দ্রত সচল করা যাবে না। বিশ্বের সকল দেশ প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে এই ভাইরাস জীবাণুমুক্ত করতে খুব ই জোরালো ভূমিকা পালন করছে। আমাদের সাধারণ মানুষের চলাচল রাস্তার পাশে , অতএব রাস্তায় গ্ৰীল , খাম্বা , ওয়াল, দোকানের সাটার, চা স্টল, বেঞ্চ, চেয়ার, খাবারের হোটেল, রিক্সা, ভ্যান বাস ট্রাক সিএনজি অটোরিকশা বাসাবাড়ির গেটে, এক কথায় মানুষের হাতের স্পর্শ যেখানে ই পড়ে, সেখানে ই ঘন ঘন স্প্রে মেশিন দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এই পদ্ধতিতে আমরা আমাদের এপাটমেন্ট , ফ্লাট বাসা বাড়িতে টিনসেডের চালায় কমিটি ও ব্যক্তি পর্যায়ে জীবাণুমুক্ত করতে পারি । উদ্দেশ্য করোনা যুদ্ধে জয়ী হওয়া। অতএব সরকারের ও বেসরকারী পর্যায়ে ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় উচিত এই অতি দ্রুত জোরদার করা। এবং স্প্রে মেশিন ও যাবতীয় সরঞ্জাম জোগান দেওয়া। জয় বাংলা।
    Total Reply(0) Reply
  • Iqbal Hasan ১৪ মে, ২০২০, ১:৩৯ এএম says : 0
    কিছু মানুষ আছে যাদের ২০/২৫ বার মার্কেট করা না হলে যেন ঈদ ই হবে না! এদের ধরে ধরে বছর প্রতি ১ টা ড্রেস আইন করা উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • Bain Dibakar ১৪ মে, ২০২০, ১:৩৯ এএম says : 0
    অনেক হয়েছে , এখন সব কিছু উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক ! পাবলিক কিছুই মানেনা , অতেব এর মধ্যে সজাগ থেকে যে বেচে থাকতে পারে এই নিতিতেই সব কিছু ছেড়ে দেওয়া হোক !
    Total Reply(0) Reply
  • MD Jahed ১৪ মে, ২০২০, ১:৪০ এএম says : 0
    যারা ঈদ ফ্যাশন নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন। যারা ভাবছেন যে এই ঈদ এ কি কি ড্রেস বানাবো কি পড়বো? যাই একটু মার্কেট থেকে ঘুরে আসি। দয়া করে একটু খেয়াল রাখবেন। যে ঈদের জন্য রং বেরঙের ড্রেস এর বদলে সাদা রঙের কাফনের কাপড় না কিনে আনতে হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Abdur Rajjak ১৪ মে, ২০২০, ১:৪০ এএম says : 0
    জামা কাপড়ের দোকাম দেখে মনে হচ্ছে লকডাউন বাংলাদের কোন ক্ষতি হয়নি।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ