পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহামারী করোনায় টালমাটাল বিশ্ব অর্থনীতি। বিশ্বের মতো করোনায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোয়। অর্থনীতিকে রক্ষায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বশেষ এপ্রিল ও মে- এ দুই মাসের ঋণের সুদ আদায়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ব্যাংকগুলো দাবি করছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে বড় অঙ্কের আয় কমে যাবে। এখন ব্যাংকগুলোকে টিকিয়ে রাখতে করপোরেট ট্যাক্স ও প্রভিশন কমানোসহ বিভিন্ন নীতিসহায়তা প্রয়োজন বলে দাবি করছেন ব্যাংকাররা। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোর কাছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানতে চেয়েছে, ঠিক কী পরিমান সুদ কমে যাবে তার তথ্য। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত চিঠি ব্যাংকগুলোতে পাঠানো হয়েছে। তথ্য জানার পর স্থগিতকৃত সুদের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশে শিল্প ও বণিক সমিতির ফেডারেশন এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেছেন, মহামারীর এই সময় ব্যাংকগুলো লাভের চিন্তা না করে; উদ্যোক্তাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসতে হবে।
সূত্র মতে, করোনার কারণে কৃষি, ব্যবসা ও সেবা খাতের সব প্রতিষ্ঠান ক্ষতির মুখে। লকডাউনে বন্ধ থাকায় আয় বন্ধ হয়ে গেছে। এ সময় নিত্যদিনের খরচ মেটানোই চ্যালেঞ্জ। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাংকের ঋণের কিস্তি পরিশোধ। এসব বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঋণের সুদ স্থগিতের আশ্বাস দেন। এর পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এপ্রিল ও মে এই দুই মাসের সুদ আদায় না করতে নির্দেশ দেয়। এই সময়ের সুদ ব্যাংকের সুদবিহীন ব্লক অ্যাকাউন্টে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, দেশের ব্যাংকগুলোয় ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমানতের পরিমাণ ১১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। এই আমানতের মধ্যে ঋণ দেওয়া হয়েছে ১০ লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকা। এই দুই মাসের ঋণের সুদ স্থগিত করা হলেও আমানতের সুদ ও আসল পরিশোধ করতে হবে। আর প্রতি মাসে গড়ে ব্যাংকের সুদ থেকে প্রায় ৮ হাজার টাকা আয় রয়েছে ব্যাংকগুলোর। এটা না পাওয়ায় এতে কিছুট চাপে পড়বে ব্যাংকগুলো। করোনার সময় নতুন করে আমানত বৃদ্ধির সম্ভাবনাও কম।
ব্যাংকাররা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সিদ্ধান্তে ব্যাংকগুলোর আয় অন্তত ১৫ হাজার কোটি টাকা কমে যাবে। এতে ছোট ছোট ব্যাংকের টিকে থাকায় চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়বে। মুনাফা অনেক কমে যাবে বড় বড় ব্যাংকের।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক সভাপতি ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদ স্থগিতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের ফলে ব্যাংকগুলোর প্রতিমাসে অন্তত ৮ হাজার কোটি টাকা আয় কমবে। এর আগে ১ এপ্রিল থেকে সুদহার ৯ শতাংশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখন ব্যাংকের মুনাফা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেটি দেখতে হবে।
ব্যাংকাররা জানান, ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ। তারা ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না। জুনে এসে খেলাপি ঋণের চাপ বাড়বে। এখন সুদ স্থগিতের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে ব্যাংকগুলোকে টিকিয়ে রাখতে কিছু নীতিগত ছাড় প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাংকগুলোর করপোরেট ট্যাক্স অনেক বেশি। সেটি কমপক্ষে ১০-১২ শতাংশ কমাতে হবে। ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলো প্রভিশন রেখেছে। নিয়মিত ঋণের বিপরীতে রাখার প্রভিশন সংকটকালীন স্থগিত রাখা যেতে পারে। এতে ব্যাংকগুলোর অর্থ সংকট অনেকটা কমবে।
এদিকে প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব ব্যাংকগুলোকে দেওয়ার আগে কিছু নীতিগত সহায়তা দেওয়া হয়েছে। নগদ জমা সংরক্ষণ (সিআরআর) ও বিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর) কমানো হয়েছে। ব্যাংকগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে অর্থ ধার নেওয়ার পদ্ধতি রেপোর সুদহার কমানো হয়েছে। ব্যাংকগুলোর কেনা সরকারি বিলবন্ড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে বিক্রির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যাাংকগুলোর ঋণ দান সক্ষমতা বাড়াতে ঋণআমানত সীমা (এডিআর) বাড়ানো হয়েছে।
এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি ও তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজেএমইএ’র সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ব্যাংক অনেক ব্যবসা করেছে। মানুষ বেঁচে থাকলে আবারও লাভ হবে। তাই সময়ের কথা বিবেচনায় নিয়ে সরকারের মতো ব্যাংকগুলোকেও মানবিক দৃষ্টিতে এগিয়ে আসার কথা বলেছেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।