Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোগী ফেরত পাঠালে লাইসেন্স বাতিল

বেসরকারি হাসপাতাল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০২০, ১২:০৩ এএম

জরুরি চিকিৎসা সুবিধা থাকলে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর এখন আর কোনো রোগীকে চিকিৎসা না দিয়ে ফেরত পাঠানোর সুযোগ নেই বলে নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পাশাপাশি কোনো রোগীকে অন্য হাসপাতালে রেফার করার প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কভিড হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে রোগীর চিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরই রেফার করতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল বা ক্লিনিকের লাইসেন্স বাতিলসহ প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব (সাময়িকভাবে সংযুক্ত) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন স্বাক্ষরিত এ নির্দেশনা গত সোমবার জারি করা হয়। এরই মধ্যে নির্দেশনাটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সংশ্লিষ্ট সব বিভাগীয় পরিচালকসহ (স্বাস্থ্য) বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকের মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনসহ (বিএমএ) সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে। দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীরাও চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ওঠে। অসংক্রামক বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত মারাত্মক অসুস্থ রোগীরাও বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন, এমন ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ নিয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকে বসেন। বৈঠকে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকদের মালিকদের প্রতি নন-কভিড রোগীদের চিকিৎসাসেবা চালুর বিষয়ে একাধিকবার অনুরোধ জানানো হয়। ওই সময় হাসপাতাল মালিকদের পক্ষ থেকে নন-কভিড রোগীদের চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত তা না মানার অভিযোগ ওঠে হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে লিখিতভাবে এসব নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এসব নির্দেশনা না মানলে ও এ-সংক্রান্ত অভিযোগ প্রমাণিত হলে লাইসেন্স বাতিলসহ হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও মিডিয়া সেলের ফোকাল পয়েন্ট অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান খান বলেন, নিয়মিত রোগী বা কোনো বিপদাপন্ন মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য গেলে তাদের চিকিৎসাসেবা না দেয়ার অধিকার হাসপাতালগুলোর নেই। তাদের তো শুধু ব্যবসা করার জন্য হাসপাতালের লাইসেন্স দেয়া হয়নি। জাতির প্রয়োজনে যদি তারা রোগীদের ভর্তি না করে এভাবে ফেরত দিতে থাকে, তাহলে কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। নির্দেশনায়ও অভিযোগের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, লক্ষ করা যাচ্ছে যে কভিড-১৯ সংক্রমণের পর থেকে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সাধারণ রোগীরা চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ডায়ালাইসিসসহ চিকিৎসা গ্রহণকারী রোগীরা সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন।

এতে আরো বলা হয়, বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোয় কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হিসেবে সন্দেহভাজন রোগীদের চিকিৎসার জন্য পৃথক ব্যবস্থা থাকতে হবে। চিকিৎসা সুবিধা থাকা সত্তে¡ও জরুরি চিকিৎসার জন্য আগত কোনো রোগীকে ফেরত পাঠানো যাবে না। রেফার করতে হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কভিড হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে রোগীর চিকিৎসার বিষয়টি সুনিশ্চিত করে তারপর রেফার করতে হবে। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে যেসব রোগী কিডনি ডায়ালাইসিসসহ বিভিন্ন চিকিৎসা গ্রহণ করছেন, তারা কভিড-১৯-এ আক্রান্ত না হয়ে থাকলে তাদের চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে হবে। এ নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটলে বা এ-সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রচলিত বিধান অনুসারে লাইসেন্স বাতিলসহ প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়।



 

Show all comments
  • Amin ১৩ মে, ২০২০, ২:৩৮ এএম says : 1
    বাংলাদেশ সরকারের নেতারা ও চাপা বাজি করে কথায আর কাজের অমিল দায়িত্ব কি তাহা পালন করে না আইনে চাইতে দলের নেতা কর্মীদের কথা বড় মনে করে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা
    Total Reply(0) Reply
  • Shomun Rahman ১৩ মে, ২০২০, ২:৩৯ এএম says : 0
    আরও আগেই দরকার ছিল প্রোনোদনা না দিয়ে হার্ডলাইন এ গেলে আর একটু উন্নতি হত। এখন দেখা যাক কথা কাজে মিল কতটুকু।
    Total Reply(0) Reply
  • Murad Parvez Sarkar ১৩ মে, ২০২০, ২:৩৯ এএম says : 0
    আজ যা আমাদের এক রিলেটিভ ব্রেন স্টক করছে সাথে হাই ডাইবেটিক্স, রোগীকে কে; দূর থেকে দেখে ওষুধ দিয়েও বাসায়ই ফেরত দিসে....হাসপাতাল এর নাম না বললাম.......আমরা কোই গেছি উন্নয়নের জোয়ারে
    Total Reply(0) Reply
  • Khan Milon ১৩ মে, ২০২০, ২:৪০ এএম says : 0
    thanks sir
    Total Reply(0) Reply
  • Mehedi Hasan Moajjem ১৩ মে, ২০২০, ২:৪০ এএম says : 0
    সঠিক সিদ্ধান্ত,
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul Matin ১৩ মে, ২০২০, ২:৪০ এএম says : 0
    দরকার আছে
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ১৩ মে, ২০২০, ৮:৫৪ এএম says : 0
    আমি যখন ক্লাশ ফাইভে উঠে গ্রামের স্কুল থেকে ঢাকায় এসে মতিঝিল সেন্ট্রাল গভার্মেন্ট বয়েজ হাইস্কুলে ভর্তি হই তখন আইয়ুব খান মার্শাল দিয়ে দেশের ক্ষমতা দখল করে। সামরিক যান্তারা রাস্তায় নেমে জনসাধারণদেরকে রাস্তায় দেখলেই কোন কথা নেই লাটি চার্জ করতো, সে সময়ে বলতো বাঙালীরা লাঠির বাড়িতে সিদা থাকে মানে আইন মেনে চলে। সেইসময়ের অবস্থা আজকের অবস্থার চেয়ে কয়েকগুণ ভাল অবস্থা ছিল তাতেই ভাল মানুষজনেরা বলতো বাঙালী লাঠিতে সোজা। এখন সেই সব ভাল মানুষরা জীবিত থাকলে হয়ত বলতো বাঙালীরা গুলিতে (পুলিশের ভাষায় বন্দুক যুদ্ধে নিহত) সোজা। আমার কথায় দয়া করে ভুল বুঝবেন না আমি সময়ের অবস্থার উপর এবং সমাজের অবস্থার উপর কথাটা বলেছি। আমি বলতে চাই সেসময়ে মানুষ খারাপ ছিল কিন্তু এখন তারচেয়েও কয়েকশত গুন খারাপ হয়েছে এটা আমারই বাস্তব অভিজ্ঞতা। কিছুদিন আগেই সরকার একইভাবে বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদেরকে রুগীদের চিকিৎসা না দেয়ার জন্যে কঠিন আইন প্রণয়ন করার পরই ওনারা হাসপাতালে আসতে শুরু করেন চাকুরীর চলে যাবার ভয়ে। তারপর ওনারা করোনার দোহাই দিয়ে রুগীদের করোনা হউক বা না হউক হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা না দিয়েই ফেরত পাঠাতে থাকে। নিন্দুকেরা বলেন এটা ছিল ডাক্তারদের রাগের একটা বহিঃপ্রকাশ সরকারকে কুবকাত করতে না পেরে রুগীদের দফারফা করছিল। ডাক্তারদের এহেন ব্যাবহারে জনগণ অতিষ্ট হয়ে উঠেছে এবং সাংবাদিকরাও এটাকে ফলাও করে খবর প্রকাশ করছে কিভাবে রুগীরা এই হাসপাতাল থেকে ঐ হাসপাতাল করে রাস্তায় মারা যাচ্ছে। এসব দেখেই সরকার আবার একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতালের লাইসেন্স বাতীল করা হবে। এখন আমার বিশ্বাস রুগীদেরকে ডাক্তারেরা যেভাবে পত্রপাঠ বিদায় করছিল সেই রেওয়াজ বন্ধ করতে বাধ্য হবে। এখন এটাও বলাযায় মৃত্যুর সংখ্যা বিনা চিকিৎসার কারনে আর বাড়বে না। আল্লাহ্‌ হাসিনার সরকারের উপর রহমত নাজিল করুন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ