Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কর্মহীন মানুষের আর্তনাদ

রুজি-রোজগারের খোঁজে গরিব দিনমজুররা হন্যে হয়ে ঘুরছেই চট্টগ্রাম শহরময়

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০২০, ১২:০২ এএম

গাইবান্ধার মো. আফজাল, সিরাজগঞ্জের রিদোয়ান, কুমিল্লার মকতুল, চট্টগ্রামের বাঁশখালীর নুরুল হক। আরও অনেকে। জানলাম, ওরা কেউ পেশায় রাজমিস্ত্রি। কেউবা ‘হঠাৎ’ দায়ে পড়ে, আগে ছিলেন অন্য কাজেকর্মে।
আরও আছে সেখানে জোগালি (সহযোগী), রঙমিস্ত্রি, কাঠের সুতার মিস্ত্রি, নির্মাণ শ্রমিক। কাজের মাল-সামানা হাতে হাতে। ঠায় বসে আছে সাত সকাল হতেই চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার মোড়ে। ভাগ্য বরাতে কারও ডাক পড়লে দ্রুত মিস্ত্রির কাজে ছুটে যান।
তবে করোনার বিপদকালে মানুষের বাড়িঘর, দোকানপাট, মার্কেটে তেমন বড়সড় কাজকর্ম থাকে না। তবে মেরামত সংস্কারের মতো টুকটাক কিছু অর্ডার থাকলে এরজন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা। আগত মালিককে ঘিরে ধরে বায়না- আমাকে নিবেন? কেউ ডেকে নিলে তেমন দরদাম না করেই আগে হাত দেন কাজে। মালিক খুশী হয়ে যাই দেন।

আফজাল, রিদোয়ানরা জানায়, ওদের দেশগ্রামের বাড়িঘরে রেখে আসা পরিবার-পরিজনের মুখে কোনমতে খাবার জোগানোর মতো আয়-রোজগারের জন্যই চট্টগ্রামে ছুটে আসা। রোজার মাস। করোনা কারণে অভাব-অনটনে পড়েছে সংসার। গ্রামে কোন কাজই নেই।

দীর্ঘ পথ ভেঙে ভেঙে আসতে হয়েছে বহু কষ্টে। ঈদের আগেভাগে চট্টগ্রামে যৎসামান্য হলেও রুজির সন্ধানে দূর-দূরাজ থেকে আসছে হতদরিদ্র অসংখ্য মানুষ প্রতিনিয়তই। অঘোষিত লকডাউন শিথিল হতে না হতেই এ অবস্থা। সবার কথা, কোথাও কোনও একটা কাজ চাই। কিন্তু কাজ কই? বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা রুজি-রোজগারের খোঁজে গরীব দিনমজুররা হন্যে হয়ে ঘুরছেই চট্টগ্রাম শহরময়।

ওরা জানায়, চকবাজার ছাড়াও কাজের ফরমায়েশ পাওয়ার আশায় আরও বসে থাকেন বন্দরনগরীর দেওয়ানহাট মোড়, কদমতলী, কাজীর দেউড়ী, রেয়াজুদ্দিন বাজার মুখ, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, ষোলশহর ২ নম্বর গেইট, আতুরার ডিপো, অক্সিজেন, হালিশহর, একে খান, অলংকার, বড়পোল, ইপিজেড, আগ্রাবাদ এক্সেস রোডসহ বিভিন্ন স্থানে। আগেও বসতো। চট করে কাজের ডাক পড়ে যেতো। এখন দুঃসময়।

রাজমিস্ত্রি, সুতার মিস্ত্রি, রঙমিস্ত্রি বা এ ধরনের দিনমজুর যার যার কাজের দক্ষতা ভেদে আগে দৈনিক ৫শ’ থেকে ৮শ’, এক হাজার টাকা পর্যন্ত রোজগার হয়ে যেতো। এখন তার অর্ধেক বা আরও কম মজুরি গছিয়ে বিদায় দেন মালিক। তবে অনেকে মজুরি ছাড়াও রোজার মাসে খুশিমনে বকশিশ দেন। মালিকের হাতে নেই টাকা। দায়ে না পড়লে মিস্ত্রির খোঁজাখুঁজি নেই। তাই সহজে কাজও এখন মিলে না।

এ অবস্থায় কোন দিন ডাকও পড়েনা। বসে থাকাই বিফল। তখন নিরূপায়। পেটের তাগিদে রিকশা কিংবা ভ্যান গ্যারাজে গিয়ে ৫০, ৬০, ৭০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা দৈনিক ভাড়ায় নগরের সড়কে নেমে পড়তে হয়। বিকল্প উপায় হিসেবে রিকশায় যাত্রী টানে। নগরী রিকশা যাত্রী মোটামুটি মিলছে বলেই ওরা জানায়। যদিও অনেকেই পেটের তাগিদেই এখন নতুন রিকশা চালক। রাস্তায় মাঝেমধ্যে ঘটছে দুর্ঘটনা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ