Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতের আম মুখে দিলেই কপালে ওঠে ভ্রু

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০২০, ৩:৩৭ পিএম

কুমিল্লার পথে-ঘাটে, দোকানে থরে থরে সাজানো পাকা আম। দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। তারপর নেড়েচড়ে এক/দুই কেজি কেনা। হাতে ঝুলিয়ে ঘরে ফেরা। পরিবারের সবাই মিলে ইফতারে অন্যান্য আইটেমের সাথে বাজার থেকে কিনে আনা আম মুখে দিয়েই ভ্রু কপালে তুলে বিরক্তি প্রকাশ। কারণ এটি আমদানি করা ভারতের আম। বাংলাদেশের আম হলে তো বিরক্তি নয়, দম ফেলার ফুসরত নেই অবস্থায়ই খাওয়া চলতো। কিন্তু প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারতের আম এখানকার জনগোষ্ঠীর স্বাদ মেটাতে পারছেনা। এরপরও লোকজন কিনছে জ্যৈষ্ঠের আম ভেবে।
মঙ্গলবার নগরীর ফলের দোকান থেকে শুরু করে পথে-ঘাটে ঘুরে দেখা গেছে সিঁদুরকোটা, রূপালীভোগ, লালমনি, গোলাপভোগ পিএম নামের ভারতে উৎপাদিত আম ফুটপাতে ভ্যানের ভ্রাম্যমান বিক্রেতা থেকে শুরু করে ফল দোকানেও মিলছে। হলুদের আভা, বোঁটার দিকে টকটকে লাল এ আম সহজেই ক্রেতা আকৃষ্ট করছে। বৈশাখের শুরুতে আমদানি করা এ আম দিনের পর দিন দোকানে, গোডাউনে পড়ে থাকলেও নষ্ট হচ্ছেনা। কারণ এসব আম রাসায়নিক ক্যামিকেলে পাকানো। কিন্তু কুমিল্লা নগরীর ফল দোকানিরা বলছেন, বৈশাখের শুরুতে বা চৈত্রের শেষের দিকে ভারত থেকে আম আমদানি করা হয়ে থাকে। সম্পূর্ণ কাঁচা এ আম বাংলাদেশে আনা হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ফেনির বিভিন্ন আড়ত থেকে তারা কাঁচা আম কিনে এনে থাকেন। তারপর পত্রিকার কাগজ, কাঁথা দিয়ে ঢেকে কাঁচা আম জাঁকে পাকানো হয়। বিক্রেতারা এধরণের কথা সাধারণত ক্রেতা সন্তুষ্টির জন্যই বলে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে আমদানিকৃত ভারতীয় যে আম বাজারে মিলছে তা দেখতে যতোটাই দৃষ্টিনন্দন হোক না কেন, স্বাদ কিন্তু দেশি আমের মতো নয়।
আমাদের দেশে আমের মাস মানেই জ্যৈষ্ঠ। কিন্তু মধুমাস জ্যৈষ্ঠ আসতে আরও তিনদিন বাকি। কিন্তু রাজশাহী, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, রংপুর ও কুষ্টিয়ার আম জ্যৈষ্ঠের দ্বিতীয় সপ্তাহ ছাড়া বাজারে মিলবে না। অথচ জ্যৈষ্ঠের দেশিয় আম বাজারে আসার আগ পর্যন্ত স্বাদহীন ভারতীয় আমে সয়লাব থাকবে নগরীর দোকান পথ ঘাট। নগরীর কয়েকজন ফল বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চট্টগ্রামের কদমতলী, ফেনির মহিপাল ও ঢাকার বাদামতলীর আড়ত থেকে কুমিল্লায় ভারতীয় আম এসে থাকে। বাজারে ভারতীয় এসব আম গোলাপভোগ নামে প্রতিকেজি ১৫০ থেকে ১৩০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নগরীর শুভপুরের পলাশ নামের এক ক্রেতা জানান, শখের বশেই ভারতের আম কিনে নেয়া। দেশি আমের স্বাদ তো আর ভারতের আমে মিলবে না। ইফতারে খাওয়া হবে এই আর কী। দোকানদার বললো ফরমালিন নেই। এদিকে নগরীর রাজগঞ্জ এলাকার গৃহিনী ফেরদৌসি আক্তার জানান, সোমবার ১৪০ টাকা দিয়ে এক কেজি আম কিনে ইফতারের সময় মুখে দিয়ে ভ্রু কপালে উঠেছে। নগরীর বিশিষ্টজনরা বলেন, আর মাত্র দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করলেই হাতের নাগালেই মিলবে দেশিয় পাকা আম। তাই এ মুহূর্তে অযথা ভারতীয় স্বাদহীন আমের পেছনে অর্থ নষ্ট করাটা উচিত নয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ