Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য বিধি মানছেন না কেউ

রফিক মুহাম্মদ | প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০২০, ১২:৪২ পিএম

জীবন ও জীবিকার তাগিদে সরকার লকডাউন কিছুটা শিথিল করেছে। খুলে দেয়া হয়েছে গার্মেন্টসহ শিল্প প্রতিষ্ঠান। গত ১০ মে থেকে খুলেছে কিছু মার্কেট-দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তবে লকডাউন শিথিল করার ক্ষেত্রে সরকারের দেয়া বিধি-নিষেধ ও শর্ত কোথাও মানা হচ্ছে না। তাই প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যু। বাড়ছে করোনা ঝুঁকি।
মার্কেট খুলে দেয়ার পর গত দুই দিনে রাজধানীতে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। সড়কে বিপুল সংখ্যাক ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করছে। দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রিকশা। যানবাহনের ভিড় বাড়ায় কোন কোন সড়কে যানজট সামলাতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশকে। শুধু কী ঢাকা? সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায়ও এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে। কোথাও মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব।
রাজধানীর অলিগলিতেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোন বালাই নেই। দোকানে দোকানে ভিড় করছেন মানুষ। সকাল ১১টায় ফকিরাপুল টিএন্ডটি কলোনির কাঁচাবাজারে দেখা যায় মানুষের ভিড়। মার্কেটের পাশের রাস্তায় টিসিবির ট্রাকের সামনে দীর্ঘ লাইন। সেখানে সামাজিক দূরত্ব কেউই মানছে না। বাজারের ভিতরে একটি মোদি দোকানে দেখা যায় ক্রেতাদের ভিড়। ওই দোকানের বাইরে একটি সাদা কাগজে লেখা স্বাস্থ্যবিধি মেনে গোল চিহ্ন দেওয়া স্থানে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনুন। কিন্তু ক্রেতাদের কেউই তা মানছেন না। তারা পাশাপাশি অনেকে প্রায় গা ঘেষে দাঁড়িয়ে আছেন। দোকানে থাকা কর্মচারি মুখে কোন মাস্ক নেই। বাজারের প্রায় সব দোকানেই একই চিত্র। বাজারের চিত্র দেখে বুঝা মুশকিল যে দেশে করোনাভাইরাস নামে ভয়াবহ কোন সংক্রমণ ব্যাধি আছে। এখানে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার কোন দৃশ্যই দেখা যায়নি।
ঈদ উপলক্ষে খোলা মার্কেটেও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্য বিধি। মার্কেটের প্রবেশপথে হাত ধোয়াসহ হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ থাকলেও তা পর্যাপ্ত নেই। প্রতিটি দোকানের সামনেও হাত ধোয়াসহ হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ থাকলেও মানছেন না দোকানিরা। খিলগাও তালতলা মার্কেটে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। সরকারি বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করেই অনেকে এভাবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করায় অযথাই জনসমাগম হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে তিন ফিট দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হলেও কোনও দোকানি কিংবা রাস্তায় চলাচল করা সাধারণ মানুষ তা মানছে না।
তবে অনেকেই দাবি করছেন, তারা পেটের দায়েই দোকান খুলে বসছেন। দীর্ঘদিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করায় সেই ক্ষতির পরিমান কিছুটা হলেও কমিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। ভাইভাই ফ্যাশনের বিক্রয় কর্মী মারুফ জানায়, সামজিক দূরত্ব বজায় রেখে তারা বেচাকেনার চেষ্টা করছেন। তবে অনেক কাস্টমার এসব নিয়ম মানতে চায় না। এক্ষেত্রে সব সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেচকেনা কষ্টকর হয়ে ওঠে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গত ২৬শে মার্চ থেকে চলমান ছুটিতে রাজধানীর প্রায় সব দোনাকপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। তবে সম্প্রতি আরোপিত বিধি-নিষেধ শিথিল করছে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর রমজান ও ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ১০ মে থেকে দোকান মালিকরা দোকানপাট খোলা শুরু করেছে। যদিও রাজধানীর অনেক বড় বিপনী বিতান ও মার্কেট না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন জেলায়ও ব্যবসায়ীরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এদিকে রাজধানীতে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও ভাড়ায় চালিত সিএনজি অটোরিকশা, মোটরবাইক ও রিকশা চলাচল করছে। বিভিন্ন এলাকায় সিএনজি অটোরিকশায় এক সঙ্গে অনেক যাত্রী গাদাগাদি করে যাতায়াত করছেন। এতে করোনা ঝুঁকি অনেক বাড়ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ