পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শরীয়তপুরের এক ধনাঢ্য পরিবারে জন্মেছিলেন মো. আব্দুল মতিন শেখ (৬৩)। পড়াশোনাটাও শেষ করেছিলেন সেখানেই। ধনাঢ্য পরিবারের জন্ম হলেও নিজের ভাগ্য নিজেই গড়ে তুলে ছিলেন। আশির দশকে ঢাকার উত্তরায় পাড়ি জমান, একে একে গড়ে তোলেন অনেকগুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আশির দশকে ঢাকার উত্তরায় পাড়ি জমান, একে একে গড়ে তোলেন অনেকগুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
বিত্ত বৈভব কম দেখেননি জীবনে। অনেকটা প্রচার বিমুখ খুবই সজ্জন ব্যক্তি, অমায়িক দানশীল এবং নিতান্তই ভালো মানুষ। তবে সব পিছু ফেলে করোনা তার জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দিয়েছিল ৩০ সেকেন্ডেই। এমন ঘটনা ঘটেছে গত শুক্রবার।
গত এক সপ্তাহ যাবৎ তিনি ভুগছিলেন হালকা জ্বরে, লিভারেও কিছুটা গড়মিল হচ্ছিল সাথে ছিল মৃদু গলা ব্যথা। ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন ওষুধ সেবন করছিলেন নিয়মিত। জ্বর ভালো না হওয়ায় ডাক্তার করোনা সন্দেহে টেস্ট করতে পাঠান রাজধানীর একটি হাসপাতালে। নিজেই গাড়ি চালিয়ে হাসপাতালে পৌঁছান লিফটে ওঠেন। কিন্তু এর মধ্যেই প্রচন্ড এক ঝাঁকুনি দেয় বুকের বাম দিকে। প্রচন্ড ঘামাতে শুরু করেন এর পরেই ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে নিস্তেজ হয়ে যায় শরীর। লিফট ফ্লোরে নামার পর মেঝেতে লুটিয়ে পড়া ব্যক্তি কে দেখে ছুটে আসেন ডাক্তার নার্সরা। কিন্তু ততক্ষণে তিনি নেই।
ঢাকার ওই হাসপাতালে দেশের শীর্ষ নামকরা প্রফেসরগণ উপস্থিত ছিলেন, ছিলেন টেকনিশিয়ান, অভিজ্ঞ নার্সরা, কেউ কিছুই করতে পারলেন না। মতিন শেখের টাকা পয়সা বিত্ত বৈভব কিছুই যেন কাজে আসলো না আজ। সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন রেখে গেলেন কিছু ভালো কাজের নমুনা।
রানাভোলা ফুলবাড়িয়া উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেল মতিন শেখের অনেক দানের কথা। নিরবে মানুষের সেবা করে যেতেন অনেক সময় পরিবারের ঘনিষ্ঠজনরাও তা জানতেন না। বাড়িওয়ালা হওয়ার স‚ত্রে করোনার সময় অনেক ভাড়াটিয়ার ভাড়া মাফ করে দিয়েছিলেন মতিন শেখ। হাসিমুখে ব্যবহার করতেন দেনাদারদের সাথে। আল্লাহর দরবারে এগুলোই সাথে করে নিয়ে গেলেন। সুউচ্চ দালানগুলো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে খালি নেই এর মালিক।
বাবার করুণ মৃত্যুর বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত ছেলে মো. রাসেল শেখ বলেন, আমরা দুই ভাই ও দুই বোন আজ পিতৃহারা হয়ে এতিম। শেষ সময়ে বাবার জন্য কিছুই করতে পারলাম না সেই আফসোস নিয়ে সারা জীবন বেঁচে থাকতে হবে। রাসেল জানান জানাজা দাফনের ব্যবস্থা করেছে মারকাজুল ইসলাম আজিমপুর গোরস্থানে। মৃত্যুর পর মতিন শেখের লাশ থেকে স্যাম্পল কালেকশন করা হয় আর রিপোর্ট আসে করোনা পজেটিভ। পরিবারের লোকজন এখন সেলফ আইসোলেশনে আছেন।
ধনাঢ্য এই ব্যবসায়ীর খোদ ঢাকা শহরে রয়েছে বেশ কয়েকটি সুউচ্চ অট্টালিকা, গার্মেন্টসসহ এমব্রয়ডারি ফ্যাক্টরি। অনেকটা প্রচার বিমুখ সজ্জন অমায়িক দানশীল মানুষটির জানাজায় অংশগ্রহণ তো দূরের কথা শেষবারের মতো মুখ দেখতে পারেননি কেউই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।