পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতি থমকে গেছে। উৎপাদন, ভোগ, চাহিদা, জোগান ব্যবস্থাসহ অর্থনীতির সব উপাদান অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে রয়েছে। ফলে দেশের কর্মক্ষম মানুষ যেমন কষ্টের শিকার হচ্ছেন, একইভাবে সারাদেশে আলেম-হাফেজ মুয়াজ্জিনসহ কওমী অঙ্গনের নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত প্রায় চল্লিশ হাজার মাদরাসা-মক্তবের লাখ লাখ শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মচারী দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন।
খোদ রাজধানীতেই হাজার হাজার মাদরাসার ছাত্র-হাফেজ এবং মসজিদের মুয়াজ্জিনরা বাসায় বাসায় টিউশনি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। অনেকেই টিউশনির স্বল্প আয় দিয়েই সংসারের ব্যয়ভার মেটাতেন। মহামারী করোনার কারণে তাদের সব কিছুই এখন বন্ধ। প্রাণঘাতী করোনা ঝড়ে আকষ্মিকভাবে বেফাকভুক্ত এবং অন্যান্য সকল মাদরাসা-মক্তব বন্ধ হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বেকায়দায় পড়েছেন।
রাজধানী ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের শত শত মসজিদভিত্তিক নূরানী মক্তব, হিফজখানা ও মহিলা মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারী, মসজিদের মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের অবস্থাও অত্যন্ত শোচনীয়। আয়-উপার্জনের আর কোনো মাধ্যমও তাদের নেই। সমাজের এ আলেম-হাফেজ-শিক্ষকরা কারো কাছে হাত পাততেও পারেন না। শিক্ষক-কর্মচারীরা বাসা ভাড়া পরিশোধ করতে পারছে না এবং তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মারাত্মক খাদ্য সঙ্কটের মুখে পড়েছেন।
করোনা মহামারী লকডাউনে গত দু’মাস যাবত এসব দ্বীনি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষক-কর্মচারীদের খাদ্য সহায়তা দেয়ার জন্য কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাক জরুরি বৈঠক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট ত্রাণ কমিটি গঠন করেছে। বেফাকের মহাপরিচালক মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরী গতকাল রোববার এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অতিসম্প্রতি কয়েকটি কওমী বোর্ডের অধীনে ৬ হাজার ৬৬৯টি মাদরাসায় ৮ কোটি ৩০ লক্ষাধিক নগদ অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। যদিও এ অনুদান খুবই অপ্রতুল। ভাড়ায় চালিত বেসরকারি মাদরাসাগুলোর পরিচালকরা কয়েক মাসের মাদরাসার ভাড়া দিতে পারছেন না। চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন হাজার হাজার ফোরকানিয়া, বেসরকারি মাদরাসা শিক্ষক ও পরিচালকরা। রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর মারকাজুল আজিজ মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি ফখরুল ইসলাম গতকাল রোববার ইনকিলাবকে বলেন, করোনা মহামারীতে মাহে রমজানে কওমী নেছাবের মাদরাসাগুলোর ঘরবন্দি শিক্ষক-কর্মচারীরা ধার-দেনা করে দু’বেলার খাবার যোগাতে হিমসিম খাচ্ছেন। লোক-লজ্জায় কারো কাছে হাত পাততেও পারছেন না। তিনি বলেন, আমার মাদরাসায় ২২ জন শিক্ষক গত জানুয়ারি থেকে তাদের বেতন দিতে পারছি না। রমজানে ডোনারদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, যাকাতের টাকায় ত্রাণ দিয়ে দিয়েছেন।
কামরাঙ্গীরচরস্থ হুসনুল কুরআন মাদরাসার পরিচালক মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন বলেন, বিগত কয়েক বছর যাবৎ চামড়া খাতে ধসের কারণে কওমী মাদরাসাগুলো কল্পনাতীত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তদুপরি নতুন করে করোনাভাইরাসের এ সংক্রমণ যেন মড়ার উপর খাড়ার ঘা।
এদিকে, কুষ্টিয়া থেকে আমাদের স্টাফ রিপোর্টার জানান, জেলার ৬টি উপজেলায় শতাধিক আলেম পরিবার কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। মসজিদ-মাদরাসায় দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে সেবার পাশাপাশি তারা বাড়তি কাজ করেও আয় করতো। যে আয় দ্বারা তাদের সংসার চলতো। সামাজিক উন্নয়ন সংগঠন হক্কানী দরবারের পরিচালক এম খালিদ হোসাইন সিপাহী বলেন, অনেকে অসহায় আলেম পরিবার আল্লাহর উপর ভরসা করে ঘরে বসে আছেন। দুনিয়াবিমুখ ওইসব আলেমরা কারো কাছে কোন করুণা ভিক্ষা করতে রাজি নয়। তাদের দিকে সকলেরই খেয়াল করা উচিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।