পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে চলছে সাধারণ ছুটি। ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে মানুষ। বন্ধ রয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ স্বাভাবিক সব কার্যক্রম। এতে অসহায় হয়ে পড়েছে দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষগুলো। তাদের জন্য নানাভাবে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হলেও অব্যবস্থাপনার কারণে অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটছে অনেকের।
করোনায় বিপদগ্রস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত এসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নির্দেশনা মেনে শুরু থেকেই অনেক নেতাকর্মীই অসহায়, দরিদ্র, দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। ইতোমধ্যে ১৩ লাখ পরিবারের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলে বিএনপির দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে। দেশ, দেশের মানুষ ও দলের নেতাকর্মীদের এই দুঃসময়ে বিগত দিনের অনেক মন্ত্রী, এমপিসহ স্থানীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের অনেককেই খুঁজে পাওয়া না গেলেও দ্বারে দ্বারে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন বেশিরভাগ সাবেক ছাত্রনেতা ও বিএনপির তরুণ নেতারা।
দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। মামলা-হামলা, গ্রেফতারের কারণে বিপর্যস্ত দলটির নেতাকর্মীরা। এমন অবস্থায় দেশে করোনাভাইরাস হানা দিয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে স্বাভাবিক কার্যক্রম। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অনেকেই। খাবারের জন্য দেখা দিয়েছে হাহাকার। জাতির এই মহাদুর্যোগে দল ও সারাদেশের অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিশেষ করে যারা বিগত নির্বাচনে জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন এবং আগামীতে প্রার্থী হতে চান তাদেরকে নিজ নিজ এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। দলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্দেশ দেয়ার পরও সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৩০০ প্রার্থীর মধ্যে ২০০ বেশি প্রার্থীকে এলাকায় খুঁজে পায়নি নেতাকর্মীরা। ধানের শীষের অনেক প্রার্থীকে ফোন দিয়ে সহায়তা চাইলে অপমানিত হয়েছেন সাধারণ মানুষ।
তবে অনেক সাবেক এমপি-মন্ত্রী ও প্রার্থীদের খুঁজে পাওয়া না গেলেও সাবেক ছাত্রদলের নেতা ও বিএনপির এক ঝাঁক তরুন নেতা চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে পুরনোদের। এসব নেতারা প্রতিনিতই স্থানীয় অসহায়, দুঃস্থ, গরীব মানুষের সাহায্যে এগিয়ে যাচ্ছেন। পৌঁছে দিচ্ছেন সামর্থ্য অনুযায়ী খাদ্য সামগ্রী। অর্থনৈতিকভাবে বলিষ্ঠ না হলেও কেবল আন্তরিকতার কারণে অনেকের কাছে ফান্ড সংগ্রহ করেও সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছেন কেউ কেউ।
বিএনপির দপ্তর সূত্রে জানা যায়, দলটি গত ২৬ মার্চের পর থেকে গতকাল পর্যন্ত প্রায় ১৩ লাখ পরিবারের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে। এর বেশিরভাগই দিয়েছেন সাবেক ছাত্র ও তরুন বিএনপি নেতারা। এছাড়া স্থানীয় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও নিজেদের পকেট থেকে কিংবা ফান্ড গঠন করে সহযোগিতা করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছেন বিগত সিটি নির্বাচনে দক্ষিণ সিটির মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। নিজের থেকে ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর পর এখন তিনি ফান্ড গঠন করে রাতের অন্ধকারে, দিনের আলোতে খুঁজে অসহায় মানুষের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিচ্ছেন।
একইভাবে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, নরসিংদীতে যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ময়মনসিংহে সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, ফরিদপুরে শ্যামা ওবায়েদ, ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হক, মুন্সীগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আবদুস সালাম আজাদ, নেত্রকোণায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. আনোয়ারুল হক, খুলনা মহানগরীতে ৪১০০ পরিবারের কাছে খাদ্যসামগ্রী দিয়েছেন সাবেক ছাত্র নেতা ও বিগত নির্বাচনের প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুল, ঝিনাইদহে খাদ্যসামগ্রী, সুরক্ষা উপকরণ দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ময়মনসিংহের নান্দাইলে খাদ্য ও সুরক্ষা সামগ্রী দিয়েছেন সাবেক ছাত্র নেতা ও বিএনপি নেতা মামুন বিন আব্দুল মান্নান, গফরগাঁওয়ে দক্ষিণ বিএনপি নেতা আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, লক্ষীপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, নরসিংদীতে সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভ‚ইয়া জুয়েল, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই ত্রাণ বিতরণ করছেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন, জামালপুরে মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, ফেনীতে আব্দুল লতিফ জনি, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকনসহ অনেক তরুণ নেতাই জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। যাদের অনেকেই বিগত কোন নির্বাচনেই প্রার্থী ছিলেন না বা ক্ষমতার ভাগিদার হননি।
জানতে চাইলে মালয়েশিয়া বিএনপির প্রচার সম্পাদক মামুন বিন আব্দুল মান্নান বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই আমার এলাকায় লিফলেট বিরতণ, এরপর হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়। পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্দেশ দিলে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শুরু করি। কিন্তু বিগত দিনে যারা ওই এলাকায় দলীয় প্রার্থী ছিলেন তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি ইতোমধ্যে নান্দাইল উপজেলায় ৩ হাজার পরিবারের কাছে খাদ্য ও সুরক্ষা সামগ্রী তুলে দিয়েছি। নেতাকর্মীরা খোঁজ-খবর রাখছেন, যাদেরই প্রয়োজন হবে জানালেই তাদের কাছে নেতাকর্মীরা খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেবেন।
সাবেক ছাত্র নেতা রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, আমি মহানগরীর ১৩টি ওয়ার্ডে ৪১০০ অসহায়, দুঃস্থ পরিবারের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিয়েছি। প্রতিদিনই স্থানীয় ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকর্মীদের মাধ্যমে তাদের হাতে খাবার পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যতদিন করোনাভাইরাসের কারণে এই পরিস্থিতি থাকবে আমার পক্ষ থেকে আমার এলাকায় এই কার্যক্রাম অব্যাহত থাকবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, লাকডাউনে গরিব মানুষ, কৃষক-শ্রমিক, দিন আনে দিন খায় তাদের চলবে কি করে। পেটের আগুন দাউদাউ করে জ্বলে এটা কিছুই মানতে চায় না।আমাদের দল বিএনপিকে বলেছি সারাদেশের মানুষের সাথে থাকতে। বিএনপি›র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন সারাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সারাদেশের প্রতিনিয়ত খোঁজখবর রাখছেন। আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন সকল স্তরের নেতাকর্মীরা যেন মানুষের পাশে দাঁড়ায়। বিএনপির নেতা-কর্মীরা খাবেন অন্যরা খাবে না এমন যেন না হয়। আমরা সেটাই চেষ্টা করছি। নিজেদের টাকায় কেনা ১৩ লাখ পরিবারকে সহায়তা করেছি। বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলের নেতাকর্মীরা সারাদেশে ত্রাণ বিতরণ করছেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।