পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে রাজধানীতে বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এসব কর্মহীন নাগরিকদের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ করা হয়েছে খাদ্যসামগ্রী। সরকারি বরাদ্দের এ খাদ্যসামগ্রীর অধিকাংশই বিতরণ করা হচ্ছে দুই সিটির ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মাধ্যমে। এসব খাদ্যসামগ্রী বিতরণে ইতোমধ্যে কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধ উঠেছে স্বজনপ্রীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ। প্রকৃত খাদ্যসহায়তা পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের ত্রাণ দেয়া হচ্ছে না এমন অভিযোগের স্তুপ জমেছে দুই সিটির সংশ্লিষ্ট দফতরে।
জানা গেছে, সিটি কর্পোরেশন থেকে যেসব খাদ্যসামগ্রী বিরতণ হচ্ছে সেগুলো স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলরদের সমন্বয়ে তালিকা তৈরি করে বিতরণ করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে দুই সিটির কাউন্সিলরদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া এলাকাভিত্তিক কমিটির মাধ্যমে তালিকা করে খাদ্যসামগ্রী বিতরণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকেও নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু তার কোনও বাস্তবায়ন নেই। এর সুযোগ নিয়ে কাউন্সিলররা নিজেদের ইচ্ছেমতো তালিকা করে এসব খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন। যে কারণে তাদের পছন্দের বাইরের কেউ খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া খাদ্যসামগ্রী পেতে হলে ঢাকার ভোটার হওয়াসহ নানা পরিচয় নিশ্চিত করতে হয়।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সংরক্ষিত মহিলা আসন-১২ (৩১, ৩৩ ও ৪৩) এর কাউন্সিলর ও বর্তমান প্যানেল মেয়র আলেয়া সারোয়ার ডেইজী অভিযোগ করে বলেন, এই নারী কাউন্সিলরের আরও অভিযোগ, খাদ্যসামগ্রী পাওয়ার উপযোগী অনেকেই পাচ্ছে না। কেউ পাচ্ছে ১০ বার, আবার কেউ একবারও পাচ্ছেন না। ৬ তলা বাড়ির মালিকের নামেও রেশন কার্ড করা হয়েছে। স্বজনপ্রীতি, দলীয় ও আত্মীয়করণের কারণে এমনটা হচ্ছে। ত্রাণগ্রহীতা সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরকে ভোট দিয়েছে কিনা সেটাও বিবেচনা করা হচ্ছে। সমন্বয় কমিটি না হওয়ার কারণে দুর্নীতিগুলো হচ্ছে।
তবে তার ওয়ার্ডের সাধারণ আসনের কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম সেন্টু মহিলা কাউন্সিলর আলেয়া সারোয়ার ডেইজী’র এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, আমরা সমন্বয় করেই ত্রাণ বিতরণ করছি। যারা পাওয়ার যোগ্য তারাই পাচ্ছেন।
নগরীর বিভিন্ন স্থানে বসবাসরত নিম্ন আয়ের মানুষের অভিযোগ বারবার ধরনা দিয়েও কোনও সহযোগিতা পাচ্ছেন না তারা। প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাদের নিজস্ব লোক দিয়ে তালিকা করছেন। ঢাকার ভোটার না হলে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকার ভোটারদের সিংহভাগই বিত্তশালী। তাদের অধিকাংশই বাড়ির মালিক, ব্যবসায়ী কিংবা চাকরিজীবী। এরপরেও ভোটের রাজনীতির কারণে তাদেরকেই ত্রাণ দেয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের নামে রেশন কার্ড দেখিয়ে সেই ত্রাণ লুটপাট করা হচ্ছে।
খিলগাঁও তিলপাপাড়া প্রভাতীবাগ এলাকার বাসিন্দা রাবেয়া খাতুন বলেন, এক প্যাকের ত্রাণের জন্য কাউন্সিলর ও সিটি কর্পোরেশনের কার্যালয়ে বহুদিন ধরণা দিয়েছি। পাইনি। পরে কাউন্সিলরের একজন লোক আইডি কার্ড চেয়েছেন। দিয়েছি। তাও পাইনি। আমাদের মতো গরিব মানুষ যদি না পায় তাহলে সরকারের এসব সহায়তা কাদের জন্য।
মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা রহামন মিয়াজী বলেন, যাদের ৫ তলা বাড়ি আছে দেখি তাদের নামে ত্রাণ যাচ্ছে। আমাদের কোনও বাড়িও নেই। বস্তিতে বসবাস করি। এরপরেও একটা প্যাকেটও পাইনি। দালাল না ধরলে ত্রাণ পাওয়া যায় না। সে কারণে এখন আর ত্রাণ পাওয়ার জন্যও চেষ্টা করি না। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সংরক্ষিত আসন ১০ (সাধারণ ওয়ার্ড ২৭, ২৮ ও ৩০) এর কাউন্সিলর শামসুন নাহার ভ‚ঁইয়া বলেন, সিটি কর্পোরেশন থেকে যে বরাদ্দ হয়, তার এক তৃতীয়াংশ আমরা সংরক্ষিত কাউন্সিলরদের বিতরণ করার কথা রয়েছে। কিন্তু বিতরণ করতে গিয়ে দেখি ৮ ভাগের একভাগও নেই। তারা নিজেদের ইচ্ছেমতো বিতরণ করছে। তাদের ওপর আমাদের নির্ভর করে চলতে হচ্ছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দক্ষিণ সিটির সচিব মোস্তফা কামাল মজুমদার বলেন, খাদ্যসামগ্রী বিতরণে সব কাউন্সিলরকে সমন্বয় করে বিতরণ করতে বলা হয়েছে। বলে দেওয়া হয়েছে, তালিকা প্রণয়নে কোনও আইডি কার্ডের প্রয়োজন নেই।
অপরদিকে উত্তর সিটির ভারপ্রাপ্ত মেয়র জামাল মোস্তফা বলেন, খাদ্যসাগ্রী বিতরণ বড় একটি বিষয়। আমরা চেষ্টা করছি যাতে কোথাও কোনও অনিয়ম না হয়। যারা প্রকৃত পাওয়ার যোগ্য তারা যেন পান। কেউ যদি ত্রাণ না পেয়ে থাকেন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা দেবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।