Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উৎপাদনে এগিয়ে বেক্সিমকো

রেমডেসিভির

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ মে, ২০২০, ১২:০২ এএম

করোনাভাইরাসের পরীক্ষামূলক ওষুধ রেমডেসিভির উৎপাদন শুরু করছে বাংলাদেশের অন্যতম বড় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো। ইতোমধ্যে কাঁচামাল আনা হয়েছে। চলতি মাসেই উৎপাদনে যাচ্ছে কোম্পানিটি। প্রতিষ্ঠানটির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ২৯ এপ্রিল হোয়াইট হাউসে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে রেমডেসিভির কার্যকারিতার ‘সুস্পষ্ট প্রমাণ’ পাওয়ার কথা জানান যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ’র পরিচালক এবং রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফাউচি। পরে ১ মে সে দেশের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন এফডিএ রেমডেসিভিকে ‘জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন’ দেয়।

এরপর বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর জানায়, দেশের ৮টি ওষুধ কোম্পানিকে নভেল করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর জন্য রেমডেসিভি উৎপাদনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। ওই ৮ কোম্পানির একটি হলো বেক্সিমকো। এখন পর্যন্ত এই ওষুধ উৎপাদনে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে এগিয়ে প্রতিষ্ঠানটি। বেক্সিমকো’র চিফ অপারেটিং অফিসার রাব্বুর রেজা জানিয়েছেন, শুধু দেশে ব্যবহারের জন্য এই মাসেই ওষুধটির উৎপাদন শুরু হবে।

মানুষের শিরায় প্রবেশ করিয়ে এই ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়। প্রতি ডোজ ওষুধের দাম পড়বে ৫-৬ হাজার টাকা। আর গুরুতর অসুস্থ রোগীদের মোট ৫ থেকে ১১ ডোজ প্রয়োজন হতে পারে। তবে রাব্বুর রেজা বলেছেন, রোগীর ঠিক কতটুকু প্রয়োজন হতে পারে, তা গবেষণা সম্পন্ন হলেই বলা যাবে। আমরা আশা করছি, এই ওষুধের দামে কিছু ভর্তুকি দেবে বাংলাদেশ সরকার।

রোগের তীব্রতার ওপর নির্ভর করবে রোগীর কতটুকু ওষুধ প্রয়োজন হবে। বেক্সিমকো যেই মূল্য নির্ধারণ করার পরিকল্পনা করছে, সেই অনুযায়ী একটি পূর্ণ কোর্সের জন্য একজন রোগীর খরচ হতে পারে ২৫ থেকে ৬৬ হাজার টাকা। রেমডেসিভির দাম কেমন হতে পারে, তার প্রথম আভাস পাওয়া যায় বেক্সিমকোর এই মূল্য থেকে। মূল উৎপাদনকারী গিলিয়াড তাদের ১৫ লাখ ডোজের প্রথম ব্যাচ যুক্তরাষ্ট্রের রোগীদের জন্য দান করবে। তবে এরপর এই ওষুধের দাম কেমন পড়বে, তা এখনও জানায়নি তারা।
ইন্সটিটিউট ফর ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক রিভিউ (আইসিইআর) কোনো ওষুধের কার্যকারিতার ভিত্তিতে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে। সংস্থাটি বলছে, ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় রেমদেসিভির ভালো কার্যকারিতা দেখালে, ১০ দিনের কোর্সের দাম পড়বে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৫০০ ডলার বা ৩ লাখ ৮২ হাজার ডলার।
তবে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে দাম এতটা হবে না। এই ওষুধ উৎপাদনের প্যাটেন্ট রয়েছে গিলিয়াডের। ফলে নিয়মানুযায়ী, তাদেরই এই ওষুধ প্রস্তুতের একচেটিয়া স্বত্ব রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশসহ জাতিসংঘ স্বীকৃত স্বল্পোন্নত দেশগুলো এসব প্যাটেন্ট বা স্বত্ব অগ্রাহ্য করতে পারবে। ফলে এসব দেশ সহনীয় মূল্যে ওষুধ উৎপাদন করতে পারে।

রাব্বুর রেজা জানান, বাংলাদেশ এই ওষুধ অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোতেও এই ওষুধ রফতানি করতে পারবে। এছাড়া ইউরোপের কিছু দেশ ইতোমধ্যেই এই ওষুধ আমদানি করার আগ্রহ প্রকাশ করে বেক্সিমকোকে চিঠি লিখেছে। তবে তিনি ওই ইউরোপিয় দেশগুলোর নাম জানাতে রাজি হননি। তার ভাষ্য, আমরা জরুরি পরিস্থিতিতে এই ওষুধ রফতানির জন্য সরকারের অনুমোদন চাইতে পারি। তবে আমাদের অবশ্যই আগে আমাদের নিজ জনগণের জন্য সরবরাহ করতে হবে। এটি আমাদের জন্য এক নম্বর অগ্রাধিকার।
রেমডেসিভি প্রথমে ইবোলা ভাইরাসের চিকিৎসায় প্রস্তুত করা হয়েছিল। তবে তখন খুব একটা কাজ করেনি এই ওষুধ। তবে এই ওষুধ নতুন এই করোনাভাইরাসসহ কিছু ভাইরাসের পুনঃউৎপাদনের প্রক্রিয়াকে অকার্যকর করে দেয়। ফলে রোগীর ইমিউন সিস্টেমকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখতে ব্যর্থ হয় ভাইরাস।

রাব্বুর রেজা জানান, বেক্সিমকো মে মাসের মাঝামাঝি এই ওষুধ বাজারজাতকরণের অনুমতি পাবে বলে আশা করছে। এরপর থেকে সরকারের মাধ্যমে বিতরণের জন্য এই ওষুধ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করবে প্রতিষ্ঠানটি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার যতটুকু চায় তার ওপর নির্ভর করে আমরা ওষুধ উৎপাদন করব। একই সঙ্গে স্থানীয় হাসপাতালগুলোর চাহিদা নিরূপনে কাজ চলছে। একটি চীনা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করছে। চুক্তি অনুযায়ী যেই উপকরণ আসবে, তা দিয়ে ১ লাখ ইউনিট উৎপাদন করা সম্ভব।

এদিকে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, অ্যান্টিভাইরাস ওষুধ রেমসিডিসিভি উৎপাদনের অনুমতি পেয়ে ইতোমধ্যে কাঁচামালও এনেছে বেক্সিমকো। আপাতত, এই ওষুধ রফতানি করার অনুমতি দেয়া হবে না। দেশের চাহিদা পূরণ করার পর রফতানির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।



 

Show all comments
  • Aamid Nurnobe ৭ মে, ২০২০, ১:২০ এএম says : 0
    bah vlo to Joto akranto hobe, toto bebsa hobe , khub planning korei sob khule dewa hocche tahole
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Aminul Islam ৭ মে, ২০২০, ১:২০ এএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া না থাকলে শুকরিয়া। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। আমিন
    Total Reply(0) Reply
  • Dear Haven ৭ মে, ২০২০, ১:২১ এএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ খুবই ভালো সংবাদ। তবে এই ঔষধটি কি আমাদের মতো কথা না শোনা জাতির উপর সঠিকভাবে কাজ করবে তো?
    Total Reply(0) Reply
  • নূরে আলম সিদ্দিকী নূর ৭ মে, ২০২০, ১:২১ এএম says : 0
    ভালো সংবাদ। তবে এই ঔষধটি ঔষধ প্রশাসন বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরীক্ষা করেছে?
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul Aziz Mondol ৭ মে, ২০২০, ১:২১ এএম says : 0
    যাক অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তাও একটু আশার আলো জাগিয়ে 6 কোম্পানি আসছে করোনাভাইরাস কে মোকাবেলা করার জন্য
    Total Reply(0) Reply
  • Mahbub Ratan ৭ মে, ২০২০, ১:২২ এএম says : 0
    Good news for Bangladesh. May Allah bless for us.
    Total Reply(0) Reply
  • Affia Tasnim ৭ মে, ২০২০, ৪:৪২ এএম says : 0
    জীবন রক্ষাকরি এই ওষুধ অত্যন্ত ব্যয়বহুল ।তার পর আবার সকলের জন্যই যে কার্যকর তাও নিশ্চিত নয়।দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সেবাই এর ব্যয়ভার রাষ্ট্রের বহন করতে হবে ।
    Total Reply(0) Reply
  • ahammad ৮ মে, ২০২০, ১০:৩৮ পিএম says : 0
    বেকসিমকো সালমান এফ রহমানেরতো তাই না ?? গনস্বাস্হের হলে হয়ত অনুমোদন পেত না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ