Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ঢাকার দুই সিটির কর্মীরা

সায়ীদ আবদুল মালিক : | প্রকাশের সময় : ৩ মে, ২০২০, ১২:০৩ এএম

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের থাবায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে কাজ করছে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মাঠের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। আর এই ঝুঁকির মধ্যেই নগরবাসীর নিয়মিত সেবার পাশাপাশি বিশেষ সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন তারা। তবে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী বিশেষ ঝুঁকিভাতা ও প্রণোদনা পাওয়ার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি তারা। আর এ নিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এদিকে গত ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩১ দফা নির্দেশনার মধ্যে একটি ছিলো, কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় নিয়োজিত সব চিকিৎসক, নার্স, ল্যাব টেকনিশিয়ান, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, অ্যাম্বুলেন্সচালকসহ সংশ্লিষ্ট সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষ অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে। অপরটি হলো, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম নিশ্চিত করা। সারা দেশের সব সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে। বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে করোনা ঝুঁকিতে রয়েছে ঢাকা শহর। প্রাণঘাতী ভাইরাসের সংক্রমণের শঙ্কার মধ্যেই মাস্ক, গ্লাভসসহ কোন ধরনের সুরক্ষা উপকরণ ছাড়াই আবর্জনা সংগ্রহ ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা আক্রান্ত হলে নগরবাসীও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বেন বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
ঢাকা উত্তর সিটির ভারপ্রাপ্ত মেয়র জামাল মোস্তফা বলেন, ঝুঁকিভাতা ও বিশেষ আর্থিক সুবিধার জন্য শ্রমিক কর্মচারী লীগ, পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সংগঠন এবং পরিবহন চালক ও কর্মচারীদের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বিশেষ অর্থ বরাদ্দ ও সিদ্ধান্তের জন্য নথি পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড় ও সিদ্ধান্ত পাওয়ার সাথে সাথে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে তাদের ন্যায্য পাওনা প্রদান করা হবে। ভারপ্রাপ্ত মেয়র আরো বলেন, করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে সাধ্য মত প্রয়োজনীয় জুতা, মাস্ক, গ্লাভস ও স্যানিটাইজার দেয়া হয়েছে। ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সচিব, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা, প্রধান প্রকৌশলী, বিভাগীয় প্রধান, অতিরিক্ত প্রধান, উপ প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকেই করোনার ঝুঁকি নিয়েই মাঠে ময়দানে বেশ সক্রিয় রয়েছে। আবার অনেকে অফিসে কিংবা বাসায় বসেও মাঠের চলমান কার্যক্রম তদারকি করছেন। বলতে গেলে কেউ বসে নেই। সবাই কাজে ব্যস্ত রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে যানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর এই দির্দেশনার আগ থেকেই ঢাকার দুই সিটিতে পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অন্যান্য বিভাগের লোকজনও ঢাকা শহরের রাস্তা, ফুটপাত, অলিগলি, কাঁচাবাজার, মাঠ ঘাট ঝাড়– দেয়া এবং বাসাবাড়ি ও হাসপাতালের জমানো আর্বজনা নিয়মিত অপসারণ কার্যক্রম আরো বাড়িয়েছেন। কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের লোকজনের নিরাপত্তার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।
বর্তমানে ঢাকার দুই সিটিতেই সরকারি সাধারণ ছুটি চলছে। আবার নগরীতে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার, রাস্তা-অলি গলিতে রুটিন অনুযায়ী জীবাণুনাশক পানি ছিটিয়ে, ধুয়ে পরিষ্কার করা, মশক নিধন কার্যক্রম এবং কর্মহীন অসহায় লোকজনের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম তদারকির জন্য ছুটি বাতিল করা হয়েছে। প্রতিটি আঞ্চলিক পর্যায়ে আবার তদারকির কমিটিও গঠন করা হয়েছে। ফলে ছুটির মধ্যেও বেশিরভাগ কর্মকর্তা ও কর্মচারী জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন নগরীর বিভিন্ন এলাকায় মাঠে ময়দানে ছুটে বেড়াচ্ছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সংগঠন স্ক্যাভেঞ্জার এন্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল লতিফ বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জীবনের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে ভোর রাত থেকে নগরীতে ময়লা আর্বজনা পরিষ্কার শুরু করে পরিচ্ছন্নকর্মীরা। নগরীকে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার রাখা হচ্ছে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত বিশেষ প্রণোদনা ও ঝুঁকিভাতার বিষয়ে এখনো কর্তৃপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। ইতোমধ্যে মেয়রের বরাবর আবেদন জানানো হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ