Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

চার দিনে করোনায় ৫ পুলিশের মৃত্যু

কোয়ারেন্টিনে ১২৫০ আক্রান্ত ৭৪১

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ মে, ২০২০, ১২:০৪ এএম

সারাদেশে উদ্বেগজনক হারে বেড়েই চলেছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। শুরু থেকেই করোনা প্রতিরোধে মাঠের সম্মুখ যোদ্ধা পুলিশেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশজুড়ে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৬৪ সদস্য। এ নিয়ে মোট ৭৪১ জন পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হলেন।

গতকাল শনিবার ভোরে করোনায় প্রাণ দিলেন আরও এক পুলিশ সদস্য। তিনি এসআই সুলতানুল আরেফিন (৪৪)। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) পশ্চিম বিভাগে কর্মরত ছিলেন। এ নিয়ে গত চার দিনে পুলিশের ৫ সদস্য করোনায় মৃত্যুবরণ করেন। প্রতিদিনই পুলিশে বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন এক হাজার ২৫০ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৬০ জন। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা সঙ্কটের প্রথম থেকেই বিদেশফেরতদের অবস্থান শনাক্ত করে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত, আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাসপাতালে পাঠানো, লকডাউন নিশ্চিত করা, ত্রাণ বিতরণ, শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত থেকে শুরু করে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের দাফনসহ প্রায় সবক্ষেত্রেই পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে নানা কার্যক্রমের জন্য পুলিশ সদস্যদের সরাসরি জনসাধারণ এবং আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে আসার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। ফলে নিজেদের মধ্যেও করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে এর আগে যে চার সদস্য মারা গেছেন তারা হলেন- ডিএমপির কনস্টেবল জসিম উদ্দিন, এএসআই মো. আব্দুল খালেক, ট্রাফিক বিভাগের কনস্টেবল মো. আশেক মাহমুদ এবং পুলিশের বিশেষ শাখার এসআই নাজির উদ্দীন। গত শুক্রবার সকালে রাজধানীর রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাজির উদ্দীনের মৃত্যু হয়।

পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, করোনাভাইরাসে সঙ্কটের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁঁকিপূর্ণ কাজগুলো করছেন এসআই, এএসআই ও কনস্টেবলরা। করোনায় মৃতদের সৎকার কিংবা আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে নেয়ার কাজে সরাসরি মাঠ পর্যায়ের সদস্যরাই যুক্ত হচ্ছেন। প্রতিনিয়ত করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার কারণে তাদের নিজেদেরও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁঁকি বেড়ে যায়। এ অবস্থায় সদস্যদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা দরকার।

তিনি আরো বলেন, মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা সাধারণত পেট্রোল টিম, চেকপোস্ট এবং ট্রাফিক সিগনালগুলোতে দায়িত্ব পালন করেন। বেশিরভাগ সদস্যরাই পুলিশ ব্যারাকে থাকেন, যেখানে একটি রুমে অন্তত ১২ জন কনস্টেবল বসবাস করেন। এটা তাদের আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম বড় কারণ। আক্রান্তদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা সামগ্রীর অভাব এবং শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত না করার কারণে আক্রান্ত হয়েছেন।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, করোনা সংক্রমণ থেকে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে পুলিশ যে দায়িত্ব পালন করে তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। জীবনের ঝুঁকি রয়েছে জানার পরও সাধারণ মানুষের প্রতি মমত্ববোধ, দেশ ও জনগণের প্রতি কমিটমেন্টের জায়গা থেকে পুলিশ সদস্যরা নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন। পুলিশ সদস্যদের সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ সুরক্ষা সামগ্রী তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং প্রতিনিয়তই পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া ভুক্তভোগী এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ