Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রশ্ন ঃ রোজার নিয়ত সংক্রান্ত নির্দেশনা কী?

মুফতি ইবরাহীম আনোয়ারী | প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০২০, ১২:০৯ এএম

অন্তরের সংকল্পকে নিযত বলে। ইবাদতে নিয়ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই বুখারি শরিফের লেখক আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল আল বুখারি নিয়ত সংক্রান্ত হাদিস দিয়ে বুখারি শরিফ শুরু করেছেন। হযরত উমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. ইরশাদ করেন, “কাজের ফলাফল নিয়তের উপর নির্ভরশীল”। (বুখারি শরিফ, হাদিস নং- ১) রোজার তিনটি ফরজ, ১. দিনের বেলায় যে কোন খাবার ও পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকা। ২. গোসল ফরজ হয় এমন কাজ থেকে স্বামী স্ত্রী বিরত থাকা। ৩. রোযার নিয়ত করা। বুঝা গেল, রমযানের রোযা বা যে কোন রোযার সাথে নিয়ত জড়িত। আর নিয়ত হচ্ছে অন্তরের ইচ্ছার নাম। সুতরাং অন্তরে রোজা রাখার দৃঢ় সংকল্প করার নামই হচ্ছে নিয়ত। নামাযের ন্যায় রোজার বেলায়ও মুখে নিয়ত উচ্চারণ করা জরুরি নয়, তবে সহিহ শদ্ধ হলে মুখে নিয়ত করা যায়। আবার মুখে উচ্চারণ করলেও আরবিতে করা জরুরি নয়। মাতৃভাষায় এভাবে অন্তরে নিয়ত করা বা মুখে বলা যায় যে, আমি আজ রমযান মাসের রোজা রাখার নিয়ত করলাম। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া)। নিয়ত কখন করবে: রমযানের রোজার নিয়ত করার সময় হল রাতের শুরু থেকে দ্বি-প্রহরের পূর্ব পর্যন্ত। তবে রাতেই নিয়ত করে নেয়া উত্তম। (বাদায়ে সানায়ে)। নিয়ত করার পর আহার করা: রাতের শুরুতে নিয়ত করার পরেও সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত আহার-পানাহার ইত্যাদি করা জায়েয। এগুলোর কারণে উক্ত সময় রোজার নিয়তের মধ্যে কোন সমস্যা সৃষ্টি হয় না। সাহরী খাওয়া নিয়তের স্থলাভিষিক্ত: রোজা রাখার জন্য রাতের শেষ ভাগে সাহরী খাওয়া সুন্নত। রোজা ছাড়া রাতের এ সময়ে খানা খাওয়ার নিয়ম নেই, তাই রমযানে এ সময়ের মধ্যে সাহরী খাওয়াই নিয়তের স্থলাভিষিক্ত। যদিও মুখে নিয়তের কথা উল্লেখ করা না হয়। (ফতোয়ায়ে শামি)। প্রত্যেক রোজার জন্য আলাদা নিয়ত করা জরুরী: রমযান মাসের প্রতিদিন রোজার জন্য আলাদাভাবে নিয়ত করা জরুরী। পুরা রমযান মাসের জন্য শুধু একদিন নিয়ত করা যথেষ্ট নয়। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া)। রমযান মাসে অন্য রোজার নিয়ত করা: রমযান মাসে নফল বা কাযা রোজার নিয়ত করলেও রমযানের ফরজ রোজা আদায় হয়ে যায়। রমযান মাসে নফল বা কাযা রোজা আদায় হবে না। (শরহুন্নেকায়া)। কাযা-কাফ্ফারা রোজার নিয়ত: রমযানের ক্বাযা রোজার জন্য আগের দিন সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর থেকে পরের দিন সূর্য উদয় হওয়া পর্যন্ত এ সময়ের মধ্যে কাযা-কাফ্ফারা রোজার নিয়ত করা জরুরি। যদি সূর্য উদয় হওয়ার পর নিয়ত করা হয়, তাহলে উক্ত রোজা শুদ্ধ হবে না। এমনিভাবে অনির্দিষ্ট মান্নত রোজা বা কাফফারা রোজার হুকুমও একই। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া)। রোজা রাখার নিষিদ্ধ দিনসমূহ: বছরে মোট পাঁচ দিন রোজা রাখা নিষেধ। এ পাঁচ দিন আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য মেহমানদারীর দিন। তাই এই পাঁচ দিন রোজা রাখা হারাম। ১, ঈদুল ফিতরের দিন। ২, কুরবানির দিন। ৩, ঈদুল আযহার পরবর্তী তিন দিন, তথা- ১১, ১২ ও ১৩ই জিলহজ্ব। (বুখারী ও মুসলিম)
উত্তর দিচ্ছেন : মুফতি ইবরাহীম আনোয়ারী



 

Show all comments
  • Md Mohib ১ মে, ২০২০, ৭:২৪ পিএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ্‌ হুজুর কে অনেক ধন্যবাদ। নতুন কিছু মাসয়ালা শিখতে পারলাম।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Mohib ১ মে, ২০২০, ৭:২৫ পিএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ্‌ হুজুর কে অনেক ধন্যবাদ। নতুন কিছু মাসয়ালা শিখতে পারলাম।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোজা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ